পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি

পাতলা পায়খানা বলতে আমরা বুঝি ডায়রিয়া। ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হয় সাধারণত পানি দূষণের কারণে। এছাড়াও দূষিত খাবার বা পচা খাবার খেলে পাতলা পায়খানা হয়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করলেও পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হয়।

পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি

পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি? সেই সম্পর্কে সকলের জানা প্রয়োজন। কারণ প্রতিটা মানুষ পাতলা পায়খানার সম্মুখীন হয়েছে। নিম্নে, পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি? বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পাতলা পায়খানা কেন হয়?

পাতলা পায়খানা কেন হয়? কমবেশি সকলেই জানি। সাধারণত দূষিত খাবার খাওয়ার ফলে পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। 

বিশেষ করে দূষিত পানি পান করার ফলে পাতলা পায়খানা হয়। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকলে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে।

ডায়রিয়ার কারণ কি?

ডায়রিয়া বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। ডায়রিয়া হওয়ার কারণগুলো নিম্ন তুলে ধরা হলো:

  • ভাইরাস আক্রমণ।
  • ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ।
  • ওষুধ সেবনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া।
  • ল্যাকটোজ অতিরিক্ত সেবন করা।
  • দূষিত পানি পান করা।
  • পচা বা বাসি খাবার খেলে।
  • অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করলে।
  • অতিরিক্ত খাবার খেলে।

ডায়রিয়ার চার প্রকার কি কি?

ডায়রিয়া চার প্রকার। নিম্নে, ডায়রিয়ার চার প্রকার কি কি? তুলে ধরা হলো;

  •  অসমোটিক
  • এক্সিউডেটিভ
  • দ্রুত অন্ত্রের ট্রানজিট 
  • সিক্রেটরি

পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি?

পাতলা পায়খানা কেন হয় সেই সম্পর্কে আমরা ইতিপূর্বে জেনেছি। তবে পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি আমরা অনেকেই জানিনা। পাতলা পায়খানা হলে সর্বপ্রথম পায়খানা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি নিম্ন তুলে ধরা হলো:

  1. পাতলা পায়খানা হলে প্রচুর পরিমাণ তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে।
  2. পাতলা পায়খানা বন্ধের ওষুধ সেবন করতে হবে।
  3. প্রচুর পরিমাণ স্যালাইন খেতে হবে।
  4. পরিষ্কার করে ধুয়ে চিড়া খেতে হবে।
  5. অতিরিক্ত পাতলা পায়খানা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

পাতলা পায়খানা হলে কি ঔষধ সেবন করা উচিত?

পাতলা পায়খানা হলে অবশ্যই ঔষধ সেবন করতে হবে। কারণ পাতলা পায়খানা হয় ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণে। ওষুধ সেবন না করলে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয় না। যার জন্য ঔষধ সেবন করা উচিত। নিম্নে, পাতলা পায়খানা হলে কি ঔষধ সেবন করা উচিত? তুলে ধরা হলো:

  1. Amodis
  2. Flimet
  3. Metro
  4. Metryl

ডায়রিয়া বন্ধ করার খাবার:

ডায়রিয়া হলে খুব সহজে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়তে হয়। এজন্য খাবার খেতে হয়। তবে ডায়রিয়া হলে সকল ধরনের খাবার খাওয়া যায় না। কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে খুব সহজে ডায়রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। নিম্নে ডায়রিয়া বন্ধ করার খাবার এর নাম ধরে ধরা হল।্

  • স্যালাইন খেতে হবে।
  • চিড়া ধূয়া পানি খেতে হবে।
  • মাড়ি ভাত খেতে হবে।
  • কাচা করার ভতা খেতে হবে।
  • ডাবের পানি খেতে হবে।
  • আনারস খেতে হবে।
  • পেপে খেতে হবে।

বিষেশ করে তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে।

বাচ্চাদের ডায়রিয়া বন্ধ করার উপায়:

বাচ্চাদের ডায়রিয়া বেশি হয়ে থাকে। কারণ বাচ্চারা অপরিষ্কার থাকে যার জন্য বাচ্চারা ভাইরাস এ  আক্রান্ত হয়। তবে এখন বাচ্চাদের তেমন ডায়রিয়া হয় না। কারণ এখন বাবা মা সচেতন হয়েছে। যার কারণে বাচ্চাদের পরিস্কার রাখে। বাচ্চাদের ডায়রিয়া বন্ধ করার উপায় হচ্ছে, বাচ্চাদের পরিস্কার হবে।

আরও পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

কোন দূষিত পদার্থ যেনো না খায় সেই দিকে লক্ষ রাখেতে হবে। বাশি খাবার খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলেই বাচ্চাদের ডায়রিয়া হয়া থেকে বিরোত রাখা যাবে।

ডায়রিয়া হয় কিন্তু অসুস্থ হয় না কেন?

অনেক সময় মানুষের ডায়রিয়া হয় কিন্তু অসুস্থ হয় না। কারণ সাধারণ ডায়রিয়া হলে মানুষ কিছুখন পর পর পায়খানা করে। এতে করে শরীর থেকে সব পুষ্টির উপাদান বের হয় না। 

যাদি কোন ব্যাক্তি দিনে ১০ থেকে ১২ বার পায়খানা করে তাহলে সেই ব্যাক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক সময় ডায়রিয়া হলে একা একা ভালো হয়ে য়ায়। যার জন্য মানুষ অসুস্থ হয় না। 

পেট ব্যথা ও পাতলা পায়খানার ঔষধ:

পেটে ব্যথা ও পাতলা পায়খানার কারণ হচ্ছে ভাইরাসের ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ হলে ডায়রিয়া হয়। এই ডায়রিয়া সহজে ভালো হয় না। এর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করতে হয়। নিম্নে, পেট ব্যথা ও পাতলা পায়খানার ঔষধ এর নাম তুলে ধরা হলো:

  1. সিপ্রোসিন ২৫০
  2. সিপ্রোসিন ৫০০
  3. ফিলমেট ৪০০
  4. জিম্যাক্স ২৫০
  5. জিম্যাক্স ৫০০

পাতলা পায়খানার ঔষধ এন্টিবায়োটিক:

পাতলা পায়খানা হলে অবশ্যই এন্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। কারণ জীবাণুর আক্রমণের কারণে পাতলা পায়খানা হয়। এন্টিবায়োটিক না খেলে পেট থেকে জীবাণু ধ্বংস হয় না। যার কারণে পাতলা পায়খানা ভালো হয় না। নিম্নে, পাতলা পায়খানার ঔষধ এন্টিবায়োটিক এর নাম তুলে ধরা হলো:

  • সিপ্রোসিন ২৫০
  • সিপ্রোসিন ৫০০
  • ফিলমেট ৪০০
  • জিম্যাক্স ২৫০
  • জিম্যাক্স ৫০০

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম:

পাতলা পায়খানা হলে অবশ্যই ওষুধ সেবন করতে হবে। উপরে পাতলা পায়খানার সাধারণ ওষুধের এবং অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের নাম তুলে ধরা হয়েছে। এগুলো ওষুধ খেলেই পাতলা পায়খানা খুব সহজে ভালো হয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় সালোয়ার পড়ার নিয়ম

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম অনকে যানতে চায়। তবে বাচ্চাদের জন্য এই সব ঔষুধ খাওয়ালে ভালো হয়ে যাবে। তবে বাচ্চাদের কম পাওয়ারে ঔষুধ খাওয়াতে হবে। তবে এই সম্পর্কে ধারণা না থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

পাতলা পায়খানা হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না?

পাতলা পায়খানা কেন হয় সেই সম্পর্কে আমরা ইতিপূর্বে জেনেছি। এছাড়াও পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তবে পাতলা পায়খানা হলে সকল ধরনের খাবার খাওয়া যায় না। এতে করে পায়খানা বেড়ে যেতে পারে।

পাতলা পায়খানা হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না? সেগুলো খাবারের নাম নিম্ন তুলে ধরা হলো:

  1. বাজার জাত ফলের জুস
  2. কফি
  3. চিনি দেওয়া চা
  4. কমল পানীয়
  5. তৈলাক্ত খাবার
  6. অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার
  7. দুধ দিয়ে তৈরি খাবার

পাতলা পায়খানা হলে কি চিড়া খাওয়া যাবে?

পাতলা পায়খানা হলে  কি চিড়া খাওয়া যাবে? অনেকে জানতে চাই। পাতলা পায়খানা হলে চিড়া অত্যান্ত ভালো খাবার। চিড়া ধোয়া পানি খেলে ডায়রিয়া ভালো হয়ে যায়। এছাড়াও চিড়া ভালো করে পরিষ্কার করে ধুয়ে খেলে পাতলা পায়খানার জন্য অনেক উপকারী খাবার।

পাতলা পায়খানা কত দিন থাকে?

পাতলা পায়খানা একদিনে অথবা দুই দিনে ভালো হয়ে যায়। যদি কমপক্ষে তিনবার করে পাতলা পায়খানা তিন দিন হয়। তাহলে সেটা ডায়রিয়া বলে গণ্য করা হয়। আর ডায়রিয়া ভালো হতে তিন থেকে চার দিন সময় লাগে। তবে পাতলা পায়খানা শুরু হলে খুব দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।

পাতলা পায়খানা হওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসা করলে খুব দ্রুত ১ থেকে ২ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে পাতলা পায়খানা থেকে দূরে থাকতে হলে নিয়মিত হাত পরিষ্কার করতে হবে। এবং ভালো খাবার খেতে হবে।

শেষ কথা: পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি

প্রতিটি মানুষ ডায়রিয়া রোগের সাথে পরিচিত। কারণ প্রতিটা মানুষের জীবনে কোন না কোন দিন ডায়রিয়া হয়েছে। ডায়রিয়া সাধারণত হয় অপরিষ্কারভাবে চলাফেরা করলে। ছাড়াও পচা বাশি খাবার খেলে।

ডায়রিয়া থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে চলাফেরা করতে হবে। তাহলে ডায়রিয়া থেকে দূরে থাকা সম্ভব। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দেবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ