বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি

বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি

সুগার হলে কি কি ফল খাওয়া যাবে বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি? আমাদের বাচ্চার জ্বর অনেক সময় ১০০ এর উপরে চলে যায়। বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি? এই সম্পর্কে না জেনে থাকার কারণে বাচ্চাদের জ্বর আরো বাড়তে থাকে। তখন আমাদের বাচ্চার শারীরিক ক্ষতি হয়ে থাকে। আজকের এই আর্টিকেলে বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি? এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

    ১০৪ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়

    আমাদের বাচ্চাদের হঠাৎ করে অনেক সময় জর দেখা যায়। অনেক সময় আমাদের ১০৪ ডিগ্রী জ্বর হয়ে থাকে। ১০৪ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয় সম্পর্কে অবশ্যই আমাদের জেনে থাকা উচিত। ১০৪ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয় গুলোর মধ্যে প্রথম করণীয় হল তাড়াতাড়ি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া।

    ১। জ্বর দেখা দিলে অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে একটি কক্ষে নিজেকে একা রাখতে হবে। যেন আপনার স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে হয় সে বিষয়ে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। হাঁচি কাশি থাকলে রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। রোগীর কক্ষে প্রবেশ করলে মার্কস ও গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে।

    ২। চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। আপনি যেন খুব সহজেই জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন সেই জন্য চিকিৎসকের নাম্বার আপনার কাছে রাখতে হবে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ সেবন করতে হবে।

    ৩। জ্বরের রোগীকে সবসময় সুষম খাবার খাওয়াতে হবে। তার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন ফলমূল শাকসবজি, মাছ মাংস ডিম দুধ ইত্যাদি এই খাবারগুলো রাখতে হবে। বিশেষ করে জ্বরের রোগীকে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খাওয়াতে হবে।

    ৪। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। ডেঙ্গু করোনা অথবা যেকোনো জ্বর হোক না কেন পানি পান করা খুবই জরুরী। তাই প্রতিদিন জ্বরের রোগীকে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হবে। যেন শরীরে পানি শূন্যতা না দেখা যায়।

    ৫। রোগীর যদি প্রচন্ড পরিমাণে বুকে ব্যথা হয়, শরীর অস্বাভাবিকভাবে দুর্বল লাগে, শ্বাসকষ্ট দেখা যায়, বমি হতে থাকে, দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত বের হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে দেখা করতে হবে। না হলে রোগীকে নিয়ে মেডিকেলে যেতে হবে।

    বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি - বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হলে করণীয়

    আমাদের যাদের বাচ্চা রয়েছে সাধারণত তারা বাচ্চাদের হঠাৎ করেই জ্বর হয়ে থাকে। বাচ্চাদের হঠাৎ করে জ্বর হলে করণীয় গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বাচ্চাকে ভালোভাবে যত্ন নেওয়া। বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হলে করণীয় হলো বাচ্চাকে অতিরিক্ত পানি খাওয়ানো, শরীর মুছে দেওয়া ইত্যাদি। বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি এবং বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হলে করণীয় বিস্তারিত বলা হলো।

    ১। আপনার বাচ্চা যে ঘরে থাকে চেষ্টা করুন সেটি যেন ঠান্ডা থাকে। অনেকে দরজা জানালা আটকে বাচ্চাকে কাঁথা কম্বল মুড়ি দিয়ে রাখেন। এটি একেবারেই উচিত নয়। যার ফলে শিশুর জ্বর এবং অস্থিরতা আরো বেড়ে যায়। তাই শিশুর জ্বর হলে অবশ্যই তাকে খোলামেলার জায়গায় অর্থাৎ পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো বাতাস পায় এরকম জায়গায় রাখতে হবে।

    ২। বাচ্চা জ্বর হলে আমরা আমাদের বাচ্চাকে অনেক মোটা মোটা কাপড় পরিয়ে রাখি। এটা করা উচিত নয়। বাচ্চার জ্বর হলে আমরা যতটা পারবো হালকা কাপড় পরিয়ে রাখতে চেষ্টা করব। সম্ভব হলে জামা খুলে খোলা বাতাসে রাখতে হবে। যার ফলে জ্বর খুব তাড়াতাড়ি কমে যাবে।

    ৩। বাচ্চার হঠাৎ করে জ্বর হলে তার শরীরে যেন পানির শূন্যতা না থাকে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। শরীরকে ভেতর থেকে আদ্র রাখতে চেষ্টা করতে হবে। তাই বাচ্চাকে বারবার পানি খাওয়াতে হবে। যদি পারেন তাহলে ফলের রস অথবা ডাবের পানি খাওয়াতে পারেন। বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি? প্রশ্নের উত্তর এর মধ্যে অন্যতম একটি।

    ৪। আপনার শিশু যদি অতিরিক্ত পরিমাণে চঞ্চল হয় তাহলে জ্বর হলে তারা সাধারণত শুয়ে বসে থাকতে চাই না। অনেক সময় দেখা যায় জ্বর এর সাথে সাথে বাইরে ঘুরে বেড়ায়। যার ফলে শিশুর ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই শিশুর জ্বর হলে তাকে বিশ্রামে রাখুন এবং ঘরে নিজে শুয়ে থাকুন।

    বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত

    বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত এ বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেই জানতে চায়। যারা প্রথম সন্তানের মা হয়েছে সাধারণত তাদের বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত? ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। যদিও বাজারে বাচ্চাদের জ্বর হলে বিভিন্ন রকম ওষুধ পাওয়া যায় তার মধ্যে বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াতে হবে।

    বাচ্চার মাথা ব্যথা বা শরীর ব্যথা এর সাথে জ্বর থাকলে শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। যদি শিশুর হঠাৎ করে জ্বর হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়াতে হবে। তবে বাচ্চার জ্বর হলে বাচ্চাকে অ্যাসিটামিনোফেন দিতে পারেন। কারণ এটি বাচ্চাদের জন্য জলীয় এবং বড়ি হিসেবে খুব সহজে চিওয়ানো যায়।

    অথবা আপনার বাচ্চার যদি অতিরিক্ত পরিমাণে জ্বর থাকে তাহলে আপনি সাপোজিটার দিতে পারেন। এটি সাধারণত বাচ্চাদের মলদ্বারের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। যার ফলে বাচ্চাদের ওষুধ খাওয়ানোর ঝামেলা থাকে না। কারণ অনেক বাচ্চা আছে যারা ওষুধ খেতে চায় না সাধারণত তাদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

    ৮ মাসের শিশুর জ্বর হলে করণীয় - নবজাতকের জ্বর হলে করণীয়

    ৮ মাসের শিশুর জ্বর হলে করণীয় সম্পর্কে আমাদের জেনে থাকা উচিত। নতুন মা হওয়ার কারণে ৮ মাসের শিশুর জ্বর হলে করণীয় সম্পর্কে না জানাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি? অথবা নবজাতকের জ্বর হলে করণীয় কি? এ সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নেওয়া একজন মায়ের কর্তব্য। আপনাদের জন্য নিচে ৮ মাসের শিশুর জ্বর হলে করণীয় এবং নবজাতকের জ্বর হলে করণীয় আলোচনা করা হলো।

    ১। সাধারণত শিশুরা একটু ঠান্ডাতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই আমাদের নবজাতকদের প্রতি একটু বেশি সতর্ক থাকতে হয়। শিশুদের জ্বর হলে আমরা বিভিন্ন রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে তাদের জ্বর কমাতে পারি। শিশুকে হালকা গরম পানিতে গোসল করিয়ে জ্বর কমানো যায়। ঠান্ডা পানি, বরফ পানিতে গোসল বা অ্যালকোহল ব্যবহার করা যাবে না।

    ২। শিশুদের জ্বর হলে অবশ্যই তাদের তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। যদি বাচ্চা অনেক ছোট হয় এবং খেতে না পারে তাহলে তাদের চামচ দিয়ে খাওয়াতে হবে। যেন তাদের শরীরে তাপমাত্রাগুলো নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

    ৩। পানি শূন্যতা না দেখা দেয় এই বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি ডায়রিয়া হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই তাকে স্যালাইন অথবা দুধের শিশু হলে ঘন ঘন দুধ খাওয়াতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফলের জুস খাওয়ানো যায়।

    ৪। শিশুদের খাবার খেতে দিন। অনেক শিশু আছে যারা জ্বর হলে ঘন ঘন খাবার খেয়ে থাকে। আপনার শিশু যদি এরকম হয় তাহলে তাকে ঘন ঘন খেতে দিন এবং অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খেতে দিবেন।

    ৫। শিশুর নিয়মিত যাওয়ার পরীক্ষা করুন। জ্বর পরীক্ষা করে দেখুন জ্বর বেড়েছে না কমেছে যদি জ্বর বেড়ে যায় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষ করে রাতে ঘন ঘন মাপতে হবে।

    ৬। শিশুকে হালকা পোশাক পরিয়ে রাখুন। আমরা অনেকে আছি যারা শিশুর জ্বর হলে মোটা কাপড় পরিয়ে দিই। এতে করে তাদের বিভিন্ন রকম সমস্যা হয় তাই জ্বর হলে পাতলা কাপড় পরিয়ে রাখতে হবে।

    বাচ্চাদের জ্বর হলে কি খাওয়া উচিত

    বাচ্চাদের জ্বর হলে কি খাওয়া উচিত? এ বিষয়ে না জেনে থাকার কারণে আমরা অনেক ভুল করে থাকি। কিন্তু বাচ্চাদের জ্বর হলে কি খাওয়া উচিত? বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানা দরকার। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা যেহেতু বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি? তা জেনেছি এখন নিচে আপনাদের জন্য বাচ্চাদের জ্বর হলে কি খাওয়া উচিত? 

    আমাদের শিশুর জ্বর হলে খাবারের বিষয়ে আমাদের বিশেষ নজর রাখতে হবে। জ্বরের মুখে আপনার বাচ্চার প্রতিরক্ষা বাড়ানোর জন্য খাদ্য ভালোভাবে খাওয়াতে হবে। যাতে করে আপনার বাচ্চা শরীর দুর্বল হয়ে না পড়ে। আপনার বাচ্চার বয়স যদি ৬ মাস থেকে ১২ মাস হয়ে থাকে তাহলে কি খাওয়াতে হবে তা নিচে আলোচনা করা হলো।

    ডালের খিচুড়ি - আপনার বাচ্চা যদি খুবই ছোট হয়ে থাকে তাহলে ডালের খিচুড়ি খাওয়াতে পারেন কারণ এটি খুব সহজে হজম হয়ে যায় এবং শক্তি সমৃদ্ধ খাবার। কোন মসলা ও নুন ছাড়া এই খাবার প্রস্তুত করতে হবে এবং সেটিকে বাচ্চাকে ধীরে ধীরে খাওয়াতে হবে।

    স্যুপ খাওয়াতে পারেন - আপনার বাচ্চা যদি কোন জীবাণু জিনিস খেতে না পারে তাহলে তাকে অবশ্যই স্যুপ খাওয়াতে পারেন। এটি খুব হালকা এবং অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার এবং এটি খুব সহজেই হজম করা যায়। তৈরি করতে হবে সে ঝামেলা পোহাতে হয় না তাই বাচ্চা জ্বর হলে স্যুপ খাওয়াতে পারেন।

    সবজি খাওয়াতে পারেন - আপনার শিশু যখন জ্বর হয়ে থাকে তখন এদেরকে খুবই পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। সন্ধান পছন্দ করে এরকম খাবার বেশি করে খাওয়াতে হবে। যদি কোন শাকসবজি পছন্দ করে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই শাকসবজি খাওয়াতে হবে।

    দুধ খাওয়াতে হবে - অনেক সময় আপনার শিশুর সম্পূর্ণরূপে স্তনের দুধ খেতে চাই না। বুকের দুধ খেলে সেটি আপনার শিশুর জ্বর কমাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই অবশ্যই বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।

    আমাদের শেষ কথাঃ বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি

    প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি? ১০৪ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়, বাচ্চাদের জ্বর হলে কি খাওয়া উচিত? ৮ মাসের শিশুর জ্বর হলে করণীয়, নবজাতকের জড় হলে করণীয়, বাচ্চাদের জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত এ বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। বাচ্চাদের জ্বর ১০০ হলে করণীয় কি? জানা থাকলে বাড়িতেই বাচ্চা চিকিৎসা করা যায়।

    আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যদি না পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে আপনার শিশুর জন্য জরুরী উক্ত বিষয়গুলো জেনে নিন ধন্যবাদ। 

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ