আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ Ayatul Kursi Surah

ayatul-kursi-surah

    আয়াতুল কুরসি (ayatul kursi) বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ পড়া কেন জরুরি?

    আয়াতুল কুরসি এই নামটি সম্পর্কে জানে না বা নামটি শুনেনি এমন মুসলিম সারা বিশ্বে খুজে পাওয়া যাবে বলে আমার মনে হয় না। কেননা যে ব্যক্তি মুসলিম হিসাবে জন্ম গ্রহন করেছে সে অবশ্যই জানে এই আয়াতুল কুরসি ayatul kursi সম্পর্কে।

    আমরা অনেকেই জানি আবার কেউ কেউ নাও জানতে পারি যে আয়াতুল কুরসি হচ্ছে পবিত্র কোরআনের দ্বিতীয় এবং সব থেকে বড় সূরা আল-বাক্বারার ২৫৫ তম আয়াত। এটি কোরআনের সব থেকে প্রসিদ্ধ আয়াত এবং বিভিন্ন আলেমগন একে সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত হিসাবে মান্য করেন।

    আয়াতুল কুরসির ফজিলত সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না।  আয়াতুল কুরসি Ayatul Kursi Surah এই আয়াতটিতে সমগ্র মহাবিশ্বের উপর আল্লাহর একক এবং জোরাল ক্ষমতার ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও আয়াতুল কুরসি এর মাধ্যেমে দুষ্টু আত্মা (জিন) দূর করা করা যায় খুব সহজেই। এই জন্য সব থেকে শক্তিশালী একটি আয়াত হচ্ছে আয়াতুল কুরসি Ayatul Kursi Surah।

    আমরা অনেকেই মুসলিম হলেও আরবি না জানার সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। তাই যারা আরবি জানেন না, আপনাদের সুবিধার্থে এই আর্টিকেলে আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ আয়াতুল কুরসির ফজিলত সঠিক ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

    আয়াতুল কুরসি আরবি । Ayatul Kursi Benefit। ayatul kursi in bengali

    আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

    আয়াতুল কুরসি আরবি ও বাংলা উচ্চারণ (Ayatul Kursi Surah)

    اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْحَـىُّ الْقَيُّوْمُ  لَا تَاْخُذُهٗ سِنَةٌ وَّلَا نَوْمٌ‌ؕ لَهٗ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ‌ؕ مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهٗۤ اِلَّا بِاِذْنِهٖ‌ؕ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ‌ۚ وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَىْءٍ مِّنْ عِلْمِهٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ‌‌ۚ وَلَا يَـــُٔوْدُهٗ حِفْظُهُمَا ‌ۚ وَ هُوَ الْعَلِىُّ الْعَظِيْمُ

    (ayatul kursi in bengali) আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণঃ আল্লা-হু লাইলা-হা ইল্লা-হুওয়া আল হাইয়ুল কাইয়ূমু লা-তা’খুযুহূ ছিনাতুওঁ ওয়ালা-নাওমুন লাহূ মা-ফিছ ছামা-ওয়া-তি ওয়ামা-ফিল আরদি মান যাল্লাযী ইয়াশফা‘উ ‘ইনদাহূইল্লা-বিইযনিহী ইয়া‘লামুমা-বাইনা আইদীহিম ওয়ামা-খালফাহুম ওয়ালা-ইউহীতূনা বিশাইইম মিন ‘ইলমিহীইল্লা-বিমা-শাআ ওয়াছি‘আ কুরছিইয়ুহুছ ছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদা ওয়ালা-ইয়াঊদুহু হিফজু হুমা-ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়ূল ‘আজীম।

    (ayatul kursi surah in bengali) আয়াতুল কুরসি বাংলা অর্থঃ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।

    আরেকটি কথা আপনাদের না বললেই নয়, সেটি হচ্ছে যে বাংলা ভাষা দিয়ে ১০০% শুদ্ধ আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করা সম্ভব নয়। আর তাই যদি সম্ভব হয় আপনি অত্যন্ত সহজ ভাষা ayatul kursi in arabic আরবি অতি সিগ্রই শিখে ফেলুন।

    কারন আমরা সকলেই জানি কোরআন সর্বশ্রেষ্ট আসমানি কিতাব।  আর এই কোরআনের মদ্ধেই আল্লাহ সকল নেয়ামত রেখেছে, আমাদের এই নেয়ামত ভোগ করতে হলে অবশ্যই নিয়মিত কোরআন পাঠ করতে হবে।

    আয়াতুল কুরসির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা ও আয়াতুল কুরসি আয়াতে আল্লাহের গুন। ayatul kursi in bengali । আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

    আমরা জানি যে একমাত্র ইবাদাতের যোগ্য হচ্ছেন মহান আল্লাহ তায়ালা। প্রথমেই বলা হয়েছে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ বা উপাস্য অথবা ইবাদাতের যোগ্য কেউ নেই। এরপর আল্লাহর গুণাবলি বর্ণনা হয়েছে। اَلْـحَيُّ  এই শব্দের মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, তিনি সর্বদা জীবিত, তিনি অমর। قَيُّوْمُ এই শব্দের অর্থ হচ্ছে, তিনি নিজে বিদ্যমান থেকে অন্যকেও বিদ্যমান রাখেন এবং এই মহাবিশ্বের সব কিছু তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন।

    এছাড়াও বলা হয়েছে যে, তাঁকে বা মহান আল্লাহকে তন্দ্রা (ঘুমের প্রাথমিক প্রভাব বা ক্লান্তি) ও নিদ্রা স্পর্শ করতে পারে না। অর্থাৎ মহান আল্লাহ এই মহাবিশ্বের সকল বিষয়ের নিয়ন্ত্রণ করেন এবং তাঁকে কোন কিছুই ক্লান্ত করে না। অতএব তিনি সর্বক্ষণ আসমান জমিনের সব কিছু তদারকি করেন, তাকে ফাঁকি দেওয়ার মত কোন সুযোগ নেই।

    আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ পড়ে পরের অংশ থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ আকাশ এবং জমিনের সবকিছুর মালিক এবং তিনি যা কিছু করেন, তাতে কারো আপত্তি করার অধিকার বা কোন সুযোগ নেই। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া তার কাছে সুপারিশ করার মতো কোন ক্ষমতাও আসমান এবং জমিনের মাঝে কারোরই নেই। আসমান জমিনের সব কিছুই একমাত্র মহান আল্লাহের প্রশংসা করে।

    এইটা অবশ্যই মনে রাখবেন যে আল্লাহ অগ্র-পশ্চাৎ যাবতীয় অবস্থা ও ঘটনা সম্পর্কে অবগত আছেন। অগ্র-পশ্চাৎ বলতে এ অর্থ হতে পারে যে, তাদের জন্মের পূর্বের ও জন্মের পরের যাবতীয় অবস্থা ও ঘটনাবলি সম্পর্কে মহান আল্লাহ বা আমাদের সৃষ্টিকর্তা জানেন। আবার এ অর্থও হতে পারে যে, অগ্র বলতে মানুষের কাছে প্রকাশ্য, আর পশ্চাত বলতে বোঝানো হয়েছে যা মানুষের কাছে অপ্রকাশ্য বা গোপন। আল্লাহ সব কিছুই জানেন এবং তিনি হচ্ছেন অন্তরজামি। 

    আল্লাহ যাকে যে পরিমাণ জ্ঞান দান করেন সে শুধু ততটুকুই পায় এর থেকে কম বা বেশি হবার কোন প্রশ্নই উঠে না। আমরা অনেক সময় বলে থাকি যে আল্লাহ সবাইকেই সমান জ্ঞান দিয়েছে কেউ চর্চা করে না তাই তার জ্ঞান কম। এই আয়াতুল কুরসি Ayatul Kursi Surah বা আয়াত থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ যে আল্লাহ সবাইকে সমান ভাবে জ্ঞান দান করেন নি।

    যাকে যে পরিমাণ করেছে সে ততটুকুই পায়। এটা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করার কোন সুযোগ নেই, কারন সবার জ্ঞানের পরিধি যদি এক রকম হত তাহলে বিশ্বের সকল মানুষ এক চিন্তার অধিকারী হত এবং বিশ্বে এক জিনিস ছাড়া অন্য কোন কিছু আবিস্কার হতো না।

    আয়াতুল কুরসী ফজিলত ayatul kursi in bengali পরের অংশে বলা হয়েছে তার আরশ ও কুরসি এত বড় যে, তা সমগ্র আকাশ ও জমিনকে পরিবেষ্টিত করে রেখেছে। এ দুটি বৃহৎ সৃষ্টি এবং আসমান ও জমিনের রক্ষণাবেক্ষণ করা তার জন্য অত্যন্ত সহজ।

    সুতরাং এখান থেকে বুঝা যায় যে আসমান জমিনের সকল কিছুই আল্লাহ তায়ালা রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকেন। আল্লাহ কোন কিছু রক্ষা না করলে আমরা হাজার চেষ্টা করেও কেউ সেটাকে রক্ষা করতে পারবো না।  আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ Ayatul Kursi Surah তে শেষ অংশে আল্লাহকে সুউচ্চ সুমহান বলা হয়েছে। তার সমতুল্য বা সমকক্ষ কেও নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়, তার কোন শরীক নেই।

    আয়াতুল কুরসির ফজিলত ayatul kursi in bengali

    1. আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)  বলেছেন যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার মৃত্যুর সময় সহজভাবে জান কবজ করা হবে।
    2. অপরদিকে আরেকটি হাদিসে আছে যে, যারা পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তাদের জন্যে জান্নাতে যেতে মৃত্যু ব্যতীত আর কোনো বাধা থাকবে না। অর্থাৎ মৃত্যুর সাথে সাথেই সেই ব্যক্তি আল্লাহর জান্নাতের শান্তি উপভোগ করতে থাকবে সুবানআল্লাহ।
    3. হাদিসে বলা রয়েছে যে ব্যক্তি ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, আল্লাহ তায়ালা তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করে দিবেন এবং সে ফেরেশতা সারা রাত তাকে পাহারা দিবে এবং দুষ্ট জীন ও শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবে।
    4. মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আয়াতুল কুরসি পাঠ করে তার ধন-সম্পত্তি ফুঁকে দেয়। তাহলে তার ওই সম্পদ  আয়াতুল কুরসির ফজিলত এর মাধ্যেমে কোনো চোরে নিতে পারবে না।
    5. যারা আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ বুঝে পাঠ করবে আল্লাহ তাদের জান্নাতের আটটি দরজার সবগুলো দিয়ে প্রবেশ করার সুযোগ দিবেন।

    আয়াতুল কুরসির ফজিলত । Ayatul Kursi Surah Fojilot

    আয়াতুল কুরসির উপকারিতা বলে শেষ করার মত না, আর আমাদের দ্বারা আয়াতুল কুরসির বর্ণনা করে শেষ করা সম্ভবও না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশ কিছু আয়াতুল কুরসির ফজিলত বর্ণনা করেছেন। আমরা এখানে সহীহ হাদিসের দলিল সহ আয়াতুল কুরসির গুনাগুন গুলো বর্ণনা করবো।

    1. আবু উমামা থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজ শেষে আয়াতুল কুরসি পড়ে, তাঁর জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছু বাধা হবে না। (নাসাঈ কুবরা ৯৯২৮, ত্বাবারানী ৭৫৩২, সহীহুল জামে ৬৪৬৪)
    2. আবু উমামা থেকে বর্ণিতহজরত আলী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি- যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পাঠ করে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যক্তি এ আয়াতটি বিছানায় শোবার সময় পড়বে আল্লাহ তার ঘরে, প্রতিবেশীর ঘরে এবং আশপাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন। (সুনানে বাইহাকী)
    3. উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ হে আবুল মুনযির! তোমার কাছে আল্লাহর কিতাবের কোন আয়াতটি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি আবার বলেন, হে আবুল মুনযির! তোমার কাছে আল্লাহর কিতাবের কোন আয়াতটি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ? আমি বললাম, “আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম” (আয়াতুল কুরসী)। তখন তিনি আমার বুকে (হালকা) আঘাত করে বলেনঃ হে আবুল মুনযির! তোমার জ্ঞান আনন্দদায়ক হোক। (সুনানে আবু দাউদ ১৪৬০)
    4. শয়নকালে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার হেফাজতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযুক্ত থাকে। যাতে শয়তান তার নিকটবর্তী হতে না পারে। (বুখারি) হযরত আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত: রাসুল (সা.) বলেছেন: সুরা বাকারায় একটি শ্রেষ্ঠ আয়াত রয়েছে, যে ঘরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করা হবে সেখান থেকে শয়তান পালাতে থাকে। (মুস্তাদরাকে হাকিম:২১০৩)
    5. আবূ হুরাইরাহ (রাযিয়াল্লা-হু ‘আনহু) বলেছেন, রাসূলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেছেন, সূরা আল বাক্বারায় এমন একটি আয়াত রয়েছে যা কুরআনের অন্য সব আয়াতের সর্দার বা নেতা। সে আয়াতটি যে ঘরে পড়া হয়, তা থেকে শয়তান বেরিয়ে যায়। (তাফসীর মা আরেফুল কুরআন-১ম খণ্ড, পৃ: ৬৭৬)
    6. উবাই বিন কাব থেকে বর্ণিত:নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আল্লাহর কসম! যার হাতে আঁমার প্রাণ আয়াতুল কুরসীর একটি জিহবা ও দুটি ঠোট রয়েছে এটি আরশের পায়ার কাছে আল্লাহর প্রশংসা করতে থাকে। (মুসনাদে আহমদ: ২১৬০২)
    7. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রমাযানের যাকাত হিফাযত করার দায়িত্বে নিযুক্ত করলেন। এক ব্যক্তি এসে আঞ্জলা ভর্তি করে খাদ্য সামগ্রী নিতে লাগল। আমি তাকে পাকড়াও করলাম এবং বললাম, আল্লাহর কসম! আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে উপস্থিত করব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি খুব অভাবগ্রস্ত, আমার যিম্মায় পরিবারের দায়িত্ব রয়েছে এবং আমার প্রয়োজন তীব্র। তিনি বললেন, আমি ছেড়ে দিলাম। যখন সকাল হলো, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবূ হুরাইরা, তোমার রাতের বন্দী কি করলে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে তার তীব্র অভাব ও পরিবার, পরিজনের কথা বলায় তার প্রতি আমার দয়া হয়, তাই তাকে আমি ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বললেন, সাবধান! সে তোমার কাছে মিথ্যা বলেছে এবং সে আবার আসবে। ‘সে আবার আসবে’ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ উক্তির কারণে আমি বুঝতে পারলাম যে, সে পুনরায় আসবে। কাজেই আমি তার অপেক্ষায় থাকলাম। সে এল এবং অঞ্জলি ভরে খাদ্র সামগ্রী নিতে লাগল। আমি ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে নিয়ে যাব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। কেননা, আমি খুবই দরিদ্র এবং আমার উপর পরিবার-পরিজনের দায়িত্ব ন্যস্ত, আমি আর আসব না। তার প্রতি আমার দয়া হল এবং আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকাল হলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবূ হুরাইরাহ! তোমার বন্দী কী করল? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে তার তীব্র প্রয়োজন এবং পরিবার-পরিজনের কথা বলায় তার প্রতি আমার দয়া হয়। তাই আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বললেন, খবরদার সে তোমার কাছে মিথ্যা বলেছে এবং সে আবার আসবে। তাই আমি তৃতীয়বার তার অপেক্ষায় রইলাম। সে আবার আসল এবং অঞ্জলি ভর্তি করে খাদ্য সামগ্রী নিতে লাগল। আমি তাকে পাকড়াও করলাম এবং বললাম, আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে অবশ্যই নিয়ে যাব। এ হলো তিনবারের শেষবার। তুমি প্রত্যেকবার বল যে, আর আসবে না, কিন্তু আবার আস। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও। আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিখিয়ে দেব। যা দিয়ে আল্লাহ তোমাকে উপকৃত করবেন। আমি বললাম, সেটা কী? সে বলল, যখন তুমি রাতে শয্যায় যাবে তখন আয়াতুল কুরসী (আল্লাহু লা— ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্কাইয়্যুম)  আয়াতের শেষ পর্যন্ত পড়বে। তখন আল্লাহর তরফ হতে তোমার জন্যে একজন রক্ষক নিযুক্ত হবে এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না। কাজেই তাকে আমি ছেড়ে দিলাম। ভোর হলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, গত রাতের তোমার বন্দী কী করল? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে আমাকে বলল যে, সে আমাকে কয়েকটি বাক্য শিক্ষা দেবে যা দিয়ে আল্লাহ আমাকে লাভবান করবেন। তাই আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি আমাকে বললেন, এই বাক্যগুলো কী? আমি বললাম, সে আমাকে বলল, যখন তুমি তোমার বিছানায় শুতে যাবে তখন আয়াতুল কুরসী(আল্লাহু লা— ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্কাইয়্যুম )  প্রথম হতে আয়াতের শেষ পর্যন্ত পড়বে এবং সে আমাকে বলল, এতে আল্লাহর তরফ হতে তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত থাকবেন এবং ভোর পর্যন্ত তোমার নিকট কোন শয়তান আসতে পারবে না। সাহাবায়ে কিরাম কল্যাণের জন্য বিশেষ লালায়িত ছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, এ কথাটি তো সে তোমাকে সত্য বলেছে। কিন্তু হুশিয়ার, সে মিথ্যুক। হে আবূ হুরাইরাহ! তুমি কি জান, তিন রাত ধরে তুমি কার সাথে কথাবার্তা বলেছিলে। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বললেন, না। তিনি বললেন, সে ছিল শয়তান। (সহীহ বুখারী নং ২৩১১)

    আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ Ayatul Kursi Surah । আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত বাংলা অনুবাদ সহ ভিডিও

    কুরসি শব্দের অর্থ হলো - যেখানে পা রাখা হয়। আয়াত (Ayat) নামের অর্থ হলো চিহ্ন। কুরআন শব্দের উৎপত্তি ক্বারউন নামক শব্দ থেকে যার অর্থ পঠিত, যা অধিক পাঠ করা হয়, অন্য অর্থ মিলিত। সারা বিশ্বের মুসলমানগণ কুরআন অধিক পরিমাণে তিলাওয়াত করেন তাই এর নামের অর্থ পঠিত। কুরআনে আল্লাহ্ জ্ঞান-বিজ্ঞানের যাবতীয় বিষয় একত্রিত করেছেন, তাই এর নামের অর্থ মিলিত।

    শেষকথা আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ayatul kursi surah ।  ayatul kursi in english

    আপনারা যদি মনযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আয়াতুল কুরসির ফজিলত সম্পর্কে জেনে গেছেন। আমরা জানি আয়াতুল কুরসি হচ্ছে পবিত্র কোরআনের সব থেকে ফিজিলত পূর্ণ একটি আয়াত। আয়াতুল কুরসি এর মাধ্যেমে আমরা জিন জাতি সহ দুনিয়ার বালা মসিবত থেকে বেছে থাকতে পারি।

    এছাড়াও আপনি যদি প্রতি ফরজ নামাজের শেষে আয়াতুল কুরসি পাঠ করেন তাহলে আমাদের জান্নাতে যাওয়ার মদ্ধে মৃত্যু ছাড়া আর কোন বাধা থাকবে না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বেশি বেশি করে আমল করার তাউফিক দান করুন আমিন।

    আপনি চাইলে এই পোস্টটি আপনার পরিবার ও বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে পারেন। এই ইসলামের দাওয়াত আমাদের কেয়ামতের ময়দানে সন্মানিত করবে ইনশাআল্লাহ।

    আপনারা যারা যারা অনলাইনে বা গুগলে সার্চ করছেন আয়াতুল কুরসি, ayatul kursi, আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ, ayatul kursi in english, ayatul kursi surah, ayatul kursi in bengali, ayatul kursi dua, ayatul kursi full, ayatul kursi english translation, ayat kursi surah, ayatul kursi in arabic text, surah ayatul kursi, আয়াতুল কুরসি আরবি ও বাংলা উচ্চারণ ইত্যাদি লিখে। আমি বলবো এই পোস্টটি আপনার জন্যে অনেক হেল্পফুল হবে সঠিক আমল করার ক্ষেত্রে।

    আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকলে আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ Ayatul Kursi Surah এর ফজিলত সম্পর্কে জেনে গেছেন। এছাড়াও আপনি চাইলে আমাদের ফেসবুক পেজ এবং টুইটার এর অফিশিয়াল প্রোফাইলে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকতে পারেন তাহলে এধরনের পোষ্ট পাবলিশ হওয়ার সাথে সাথে আপনি নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন।

    আরও পড়ুনঃ

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ