রোজা ভঙ্গের কারণ ও রোজার মাকরুহ সমূহ

roja-vonger-karon-sommuh

সাওম বা রোজা মুসলিম জাতির জন্য অনেক তাৎপর্য পূর্ন একটি ইবাদাত। সারাবিশ্বের মুসলিম জাতি এই রমজান মাসের মাধ্যেমে আল্লাহর একত্ব স্বীকার করে, মহান আল্লাহকে খুশি করার মাধ্যমে নিজেদের ঈমানের পরীক্ষা দিয়ে থাকে। তবে আবার আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছেন যারা কিনা রোজা ভঙ্গের কারণ – রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি — পবিত্র রমজান মাসে আমরা সঠিকভাবে রোজা পালন করতে চাই কিন্তু রোজা পালনের সঠিক নিয়ম বা কি কি কারণে রোজা ভেঙে যায় সেই সম্পর্কে জানিনা।

সাধারণত আমরা অনেকেই মাঝে মাঝে রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ নিয়ে বিভিন্ন সময় অনেক প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকি। যেমন ধরুনঃ স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাঙ্গে? রোজা ভঙ্গের কাফফারা, নফল রোজা ভঙ্গের কারণ, হস্তমৈথুন, মহিলাদের হায়েয এবং নিফাসের রক্ত বের হওয়া, বমি করা ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় সমূহ গুলো নিয়ে। তাই আমরা আজকে রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশাল্লাহ এই পোস্টের মাধ্যমে। চলুন তাহলে দেরি না করে আমরা এখন জেনে নেই কি করলে বা কোন কোন কাজের জন্য রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।

রোজা কি?

সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,কামাচার, পাপাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস ও অপ্রয়োজনীয় কাজ থেকে বিরত থাকার নাম সাওম বা রোজা।

রোজা কত প্রকার?

রোজা পাঁচ প্রকার। রমজান মাসের রোজা। কোন কারণ বশত রমজানের রোজা ভঙ্গ হয়ে গেলে তার কাযা আদায়ে রোজা। শরীয়তে স্বীকৃত কারণ ব্যতীত রমজানের রোজা ছেড়ে দিলে কাফ্ফারা হিসেবে ৬০টি রোজা রাখা।

রোজা ভঙ্গের কারণ ও রোজার মাকরুহ সমূহের সূচীপত্রঃ

  • রোজা ভঙ্গের কারণ
  • রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি
  • স্ত্রী সহবাস করা
  • পানাহার করা
  • শিঙ্গা লাগানো
  • হস্তমৈথুন করা
  • ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা
  • পানাহারের স্থলাভিষিক্ত
  • মহিলাদের হায়েয ও নিফাস
  • নস্য গ্রহণ করা, নাকে বা কানে ওষধ বা তৈল প্রবেশ করালে।
  • কুলি করার সময় হলকের নিচে পানি চলে গেলে (অবশ্য রোজার কথা স্মরণ না থাকলে রোজা ভাঙ্গবে না)।
  • জবরদস্তি করে কেহ রোজা ভাঙ্গালে।
  • ইনজেকশান বা স্যালাইরনর মাধ্যমে দেমাগে ওষধ পৌছালে।
  • কংকর পাথর বা ফলের বিচি গিলে ফেললে।
  • সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল সুর্যাস্ত হয়নি।
  • পুরা রমজান মাস রোজার নিয়ত না করলে।
  • দাঁত হতে ছোলা পরিমান খাদ্য-দ্রব্য গিলে ফেললে।
  • ধূমপান করা, ইচ্ছাকৃত লোবান বা আগরবাতি জ্বালায়ে ধোয়া গ্রহন করলে।
  • রাত্রি আছে মনে করে সোবহে সাদিকের পর পানাহার করলে।
  • মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর নিদ্রা হতে জাগরিত হওয়া এ অবস্থায় শুধু কাজা ওয়াজিব হবে।

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ ২টি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে 

১। রোজা ভঙ্গের বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যা শরীর থেকে কোনো কিছু নির্গত হওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। যেমনঃ ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা, সহবাস করা, মহিলাদের হায়েয এবং নিফাসের রক্ত বের হওয়া, শিঙ্গা লাগানো কিংবা এই জাতীয় অন্য কোনো কারণে রক্ত বের করা শরীর থেকে। 

রোজাদারের শরীর থেকে এসকল নির্গত হওয়ার ফলে রোজাদারের শরীর দুর্বল হয়ে যায়। এতে করে রোজাদার ব্যক্তির বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে শারীরিক ভাবে। তাই এগুলোকে রোজা ভঙ্গের কারণ হিসেবে মহান আল্লাহ তায়ালা নির্ধারণ করেছেন।

২। এছাড়াও বেশ কিছু কারন রয়েছে রোজা ভঙ্গের জন্যে, সেগুলো শরীরে প্রবেশ করানোর সাথে সম্পর্ক রয়েছে। যেমন ধরুনঃ যদি কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে খাওয়া দাওয়া করে অর্থাৎ কোনো কিছু পানাহার করা। কেননা রোজাদার ব্যক্তি যদি জেনে বুঝে খাওয়া দাওয়া করে কিংবা কোনো কিছু পানাহার করে, তাহলে যে উদ্দেশ্যে রোজার বিধান জারী করা হয়েছে সেটা বাস্তবায়িত হবেনা। [মাজমুউল ফাতাওয়া ২৫/২৪৮]

রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি?

এখন আমরা রোজা ভঙ্গের কারণ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। নিম্নে আমরা রোজা ভঙ্গের প্রধান কারণগুলো সম্পর্কে  তুলে ধরবো। রোজা ভঙ্গের প্রধান কারণগুলো হচ্ছেঃ পানাহার এবং সহবাস করা। আর রোজা ভঙ্গের অন্য কারণগুলো আল্লাহর নবী রাসূল সাঃ তাঁর হাদিসে উল্লেখ করেছেন। তাই রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ ৭টি যেমনঃ 
১। স্ত্রী সহবাস করা 
২। পানাহার করা 
৩। এমন কিছু যা পানাহারের স্থলাভিষিক্ত 
৪। ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা 
৫। মহিলাদের হায়েয ও নিফাসের কারণে রক্ত বের হওয়া 
৬। হস্তমৈথুন করা 
৭। শিঙ্গা লাগানো বা এমন জাতীয় কোন কাজ করার কারণে রক্ত বের করা। উক্ত বিষয়গুলো হচ্ছে রোজা ভঙ্গের কারণ। নিম্নে রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

১। স্ত্রী সহবাস করা

সাওম বা রোজা ভঙ্গের একটি অন্যতম কারন হচ্ছে স্ত্রী সহবাস করা। রোজা ভঙ্গের কারণ গুলোর মধ্যে স্ত্রী সহবাস করা সবচেয়ে বড় কারণ। আর এই কাজে রোজা থেকে লিপ্ত হলে সবচেয়ে বেশি গুনাহ হয়ে থাকে। যে রোজাদার ব্যক্তি রমজান মাসে দিনের বেলায় ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী সহবাস করবে। 

অর্থাৎ ২ খতনার স্থানদ্বয়ের মিলন ঘটাবে এবং পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ লজ্জাস্থানের ভেতরে অদৃশ্য হয়ে যাবে যে ব্যক্তি তার রোজা নষ্ট করল। এতে করে বীর্যপাত হোক আর নাই হোক। রোজাদার ব্যক্তির উপর তাওবা করা, সেদিনের রোজা সম্পূর্ণ করা এবং পরবর্তীতে এই দিনের রোজা কাযা আদায় করে নিতে হবে এবং কঠিন কাফফারা আদায় করা রোজাদার ব্যক্তির উপর ফরয। তাই রোজা পালনের সময় সকল হুকুম আহকাম গুলো মেনে চলতে হবে।

২। পানাহার করা

পানাহার বলতে যা বোঝায় মুখ দিয়ে এমন কোনো কিছু প্রবেশ করা এবং সেটি পাকস্থলীতে পৌঁছে যাওয়া। অনুরূপভাবে যদি নাক দিয়ে কোনো কিছু পাকস্থলীতে পৌছে সেটিও পানাহারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।

এই কারণে আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তুমি ভালো করে নাকে পানি দাও, যদি না তুমি রোজাদার হও। [সুনানে তিরমিযি (৭৮৮)। সুতরাং যদি নাক দিয়ে পাকস্থলীতে পানি প্রবেশ করানো রোজাকে ক্ষতিগ্রস্ত না করতো তবে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভালো করে নাকে পানি দিতে নিষেধ করতেন না।

৩। হস্তমৈথুন করা

হস্তমৈথুন করলে রোজা বা সাওম নষ্ট হয়ে যায়। আর হস্তমৈথুন বলতে বোঝায় ইচ্ছাকৃত ভাবে যদি কেউ হাত দিয়ে কিংবা অন্য কোনো পদ্ধতিতে বীর্যপাত ঘটায় সেটিকে। হস্তমৈথুন হচ্ছে রোজা ভঙ্গের কারণ। হস্তমৈথুন রোজা ভঙ্গের কারণ তার দলিল হলোঃ হাদিসে কুদসীতে রোজাদার সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ সে আমার কারণে পানাহার এবং যৌনকর্ম পরিহার করে। 

সুতরাং এখান থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে রোজাদার ব্যক্তি রমযান মাসে দিনের বেলায় হস্তমৈথুন করবে সেই ব্যক্তির রোজা নষ্ট হয়ে যাবে ও তার উপরে ফরয হচ্ছে তওবা করা। সেই দিনের বাকী সময় রোজা রাখা ও পরবর্তীতে সেই রোজাটি কাযা আদায় করা।

৪। ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা

যদি কোন ব্যক্তি মুখের মধ্যে হাত দিয়ে অথবা পেট কচলিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কিছু শুকেছে বা বারবার দেখেছে এক পর্যায়ে তার বমি চলে আসছে তবে তাকেও রোজা কাযা আদায় করে নিতে হবে। তবে হ্যাঁ যদি কারো পেট ফাপা থাকে তার জন্যে বমি আটকে রাখা বাধ্যতামূলক না। কেননা এতে করে তার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। [শাইখ উছাইমীনের মাজালিসু শাহরি রামাদান, পৃষ্ঠা-৭১]

রোজাদার ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করেন তবে সেটা রোজা ভঙ্গের কারণ হিসেবে ধরা হবে। দলিল হলোঃ যে ব্যক্তি অনিচ্ছাকৃত ভাবে বমি করে তাকে উক্ত রোজা কাযা করতে হবেনা। কিন্তু যে ব্যক্তি রোজা থেকে স্বেচ্ছায় বমি করল তাকে সে রোজা কাযা করতে হবে। সুনানে তিরমিযি (৭২০), আলবানী সহিহ তিরমিযি গ্রন্থে (৫৭৭) হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন] ইবনে মুনযির বলেনঃ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে বমি করলো আলেমদের ঐক্যবদ্ধ অভিমত হলো উক্ত ব্যক্তির রোজা ভেঙ্গে গেছে।[আল-মুগনী (৪/৩৬৮)] 

৫। এমন কিছু যা পানাহারের স্থলাভিষিক্ত

পানাহারের স্থলাভিষিক্ত বলতে এমন বিষয়কে বোঝানো হয়, যা পানাহারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি ২টি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। যেমনঃ 

১। রোজাদারের শরীরে রক্ত পুশ করা। আহত হয়ে রক্তক্ষরণের কারণে কারও শরীরে যদি রক্ত পুশ করানো হয় তাহলে সেই ব্যক্তির রোযা ভেঙ্গে যাবে। যদি কোনো রোজাদার ব্যক্তি এই ধরনের কাজ করে তবে তার রোজা ভেঙ্গে যাবে। তাই এই সমস্ত বেপার অত্যান্ত সতর্ক থাকতে হবে রোজাদার ব্যক্তিদের।

২। অপরদিকে খাদ্যের বিকল্প হিসেবে ইনজেকশন পুশ করা অর্থাৎ শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য স্যালাইন নেওয়া ইত্যাদি। যদি কোনো রোজাদার ব্যক্তি এমন করে তবে তার রোজা ভেঙ্গে যাবে। কেননা এমন ইনজেকশন নিলে পানাহারের প্রয়োজন হয়না।

৬। শিঙ্গা লাগানো বা এমন কোনো কাজ করার কারণে রক্ত বাহির করা

যদি কোন রোজাদার ব্যক্তি হিজামা বা শিঙ্গা লাগানোর মতো কোন কাজ করে এবং সেই রোজাদার ব্যক্তির শরীর থেকে রক্ত বাহির করা হয় তবে উক্ত রোজাদার ব্যক্তির রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। দলিল হলোঃ আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ “যে ব্যক্তি শিঙ্গা লাগায় ও যার শিঙ্গা লাগানো হয় উভয়ের রোযা ভেঙ্গে যাবে।” [সুনানে আবু দাউদ (২৩৬৭), আলবানী সহিহ আবু দাউদ গ্রন্থে (২০৪৭) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

তাই একটু ভাল ভাবে চিন্তা করে দেখলে বুঝতে পারবেন যে রক্ত দেয়াও কিন্ত শিঙ্গা লাগানোর অর্ন্তভুক্ত। কেননা রক্ত দেওয়ার কারণে শরীরের উপরে শিঙ্গা লাগানোর মতো প্রভাব পড়ে। তাই রোজাদার ব্যক্তির জন্য রক্ত দেওয়া জায়েয নেই। তবে যদি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে কোন রোগীকে রক্ত দেওয়া লাগে তবে তখন রক্ত দেওয়া জায়েয হবে। সেক্ষেত্রে রক্ত দানকারীর রোজা ভেঙ্গে যাবে এবং সেই দিনের রোজা কাযা করবে। [শাইখ উছাইমীনের ‘মাজালিসু শারহি রামাদান’ পৃষ্ঠাঃ ৭১]

আর যদি অনিচ্ছাকৃত কারণে রোজাদার ব্যক্তির রক্ত ক্ষরণ হয় তার রোজা ভাঙ্গবে না। কেননা রক্ত ক্ষরণ তার ইচ্ছাকৃত ছিলোনা। আর দাঁত তোলা, ক্ষতস্থান ড্রেসিং করা অথবা রক্ত পরীক্ষা করা ইত্যাদির কারণে রোজা ভাঙ্গবে না। কেননা এগুলা শিঙ্গা লাগানোর অর্ন্তভুক্ত নয়। কারণ এই কাজগুলো দেহের উপরে শিঙ্গা লাগানোর মতো প্রভাব ফেলেনা।

৭। মহিলাদের হায়েয ও নিফাসের কারণে রক্ত বের হওয়া

রোজা বা সাওম ভঙ্গের বেশ কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে মহিলাদের ক্ষেত্রে। যদি কোন মহিলাদের হায়েয এবং নিফাসের রক্ত বাহির হয় তাহলে সেই ব্যক্তির রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) বলেনঃ যখন মহিলাদের হায়েয হয় তখন কি তারা নামায ও রোযা ত্যাগ করে না? [সহিহ বুখারী (৩০৪)] তাই কোনো মহিলার হায়েয ও নিফাসের রক্ত বাহির হওয়া শুরু হলে তার রোজা ভেঙ্গে যাবে। এমনকি যদি সেটা ইফতারের সামান্য কিছুক্ষণ আগে হলেও। 

আবার ধরুন যদি কোনো মহিলা বুঝতে পারে যে তার হায়েয শুরু হবে কিন্তু ইফতারের পূর্বে পর্যন্ত রক্ত বাহির হয়নি তবে তার রোজা শুদ্ধ হবে এবং সেদিনের রোজা তাকে আর কাযা আদায় করে নিতে হবেনা। আর যদি কোনো মহিলার হায়েয এবং নিফাসের রক্ত যদি রাত থাকতেই বন্ধ হয়ে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে তিনি রোযার নিয়ত করেন এবং তার গোসল করার আগেই ফজর হয়ে যায় তবে সেক্ষেত্রে আলেমদের মাযহাব হলো তার রোজা শুদ্ধ হবে। উপরোক্ত আলোচনা করা বিষয়গুলো হলো রোযা বিনষ্টকারী।

রোজার মাকরুহগুলো:

  • অনাবশ্যক কোনো জিনিস চিবানো বা কোন জিনিসের স্বাদ গ্রহন করা।
  • কোনো দ্রব্য মুখে দিয়ে রাখা রোজা মাক্রুহ হওয়ার একটি কারন।
  • গড়গড় করা বা নাকের ভেতর দিয়ে পানি টেনে নেওয়া। কিন্তু খেয়াল রাখবেন পানি যদি নাক দিয়ে গলায় পৌঁছে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।
  • ইচ্ছাকৃত ভাবে যদি কেউ মুখে থুথু জমা করে গলাধঃকরণ করে।
  • গীবত, গালা-গালি ও ঝগড়া-ফাসাদ করা। কেউ গায়ে পড়ে ঝগড়া-ফাসাদ করতে এলে বলবে, আমি রোজাদার তোমাকে প্রত্যুত্থর দিতে অক্ষম
  • সারাদিন নাপাক অবস্থায় থাকা। এটি অত্যন্ত গুনাহের কাজ
  • অস্থিরতা ও কাতরতা প্রকাশ করা
  • কয়লা চিবিয়ে অথবা পাউডার, পেস্ট ও মাজন ইত্যাদি দ্বারা দাঁত পরিষ্কার করা

যেসব কারণে রোজা না রাখলে ক্ষতি নেই তবে কাযা আদায় করতে হবে:

  •  কোনো অসুখের কারণে রোযা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেললে অথবা অসুখ বৃদ্ধির ভয় হলে। তবে পরে তা কাযা করতে হবে।
  • গর্ভবতী স্ত্রী লোকের সন্তান বা নিজের প্রাণ নাশের আশঙ্কা হলে রোজা ভঙ্গ করা বৈধ তবে কাযাকৃত রোজা পরে করে নিতে হবে।
  • যেসব স্ত্রী লোক নিজের বা অপরের সন্তানকে দুধ পান করান রোজা রাখার ফলে যদি দুধ না আসে তবে রোজা না রাখার  অনুমতি আছে কিন্তু পরে কাযা আদায় করতে হবে।
  • শরিয়তসম্মত মুসাফির অবস্থায় রোযা না রাখার অনুমতি আছে। তবে রাখাই উত্তম।
  • কেউ হত্যার হুমকি দিলে রোযা ভঙ্গের অনুমতি আছে। পরে এর কাযা করতে হবে।
  • কোনো রোগীর ক্ষুধা বা পিপাসা এমন পর্যায়ে চলে গেল এবং কোনো দ্বীনদার মুসলিম চিকিৎসকের মতে রোজা ভঙ্গ না করলে তখন মৃত্যুর আশঙ্কা আছে। তবে রোযা ভঙ্গ করা ওয়াজিব। পরে তা কাযা করতে হবে।
  • হায়েজ-নেফাসগ্রস্ত (বিশেষ সময়ে) নারীদের জন্য রোজা রাখা জায়েজ নয়। পরবর্তীতে কাযা করতে হবে।
এই পোস্ট গুলো যদি আপনার ভাল লাগে তাহলে আপনার বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এছাড়াও আপনি চাইলে আমাদের ফেসবুক পেজ এবং টুইটার এর অফিশিয়াল প্রোফাইলে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকতে পারেন তাহলে এধরনের পোষ্ট পাবলিশ হওয়ার সাথে সাথে আপনি নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন।

আরও পড়ুনঃ

আল্লাহর ৯৯টি নাম বাংলা অর্থসহ ফজিলত সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন
High CPC Keywords In Bangladesh/হাই সিপিসি কিওয়ার্ডের তালিকা সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ