ভিডিও ধারণের জন্য ক্যামকোর্ডার আর ডি এস এল আর এর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে বেশি ভালো

best-dslr-camera

একটা সময় শুধু ডিএসএলআর ক্যামেরা এর রাজত্ব থাকলেও এখন ভিন্ন ভিন্ন ফিচার এবং সুবিধা যুক্ত ক্যামকোর্ডার এর চাহিদা ও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আপনার জন্য কোনটি দরকার তা বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত কেবলই আপনার!

বিভিন্ন ধরনের সুবিধা-অসুবিধা যুক্ত ফিচার গুলোর আলোচনা দেখলেই বুঝতে পারবেন ক্যামকোর্ডার আর ডিএস এল আর এর মধ্য কোনটি সবচেয়ে বেশি ভালো!

১) সেন্সর সাইজ (Sensor Size)

ডিএসএলআর এবং ক্যামকর্ডারের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো এক ই দামে ডিএসএলআর-এ ক্যামকর্ডারের তুলনায় অনেক বড় সেন্সর থাকে। 

বড় সেন্সর সহ ক্যামকর্ডার বাজারে পাওয়া যায় তা হাই-এন্ড মডেলগুলিতে এভেইলেবল। কিন্তু এর জন্য আপনাকে খরচ করতে হবে অযথা বেশ কিছু টাকা। অথচ সেই এক ই দামে ডি এস এল আর কিনলে সাহজেই এই সুবিধাটা পেতে পারবেন।

ভাবতে পারেন বড় সেন্সর এর কাজ টা আসলে কি? বা আপনার লাভ কোথায়? বড় সেন্সর আপনাকে ব্যাকগ্রাউন্ড এর অনেক খানিকটা যায়গা ব্লার করতে সাহায্য করে, এই কাজ টা ডি এস এল আর খুব ভালো করতে পারে তাই অনেক প্রপফেশনাল ফটোগ্রাফার ডি এস এল আর দিয়ে ছবি তুলতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

এছাড়াও বড় সেন্সর কম আলো তেও ছবি তুলতে হেল্প ফুল, ফলে ভিডিও লাইট এর প্রয়োজন হয় না। এছাড়া এক্সট্রা নয়েজ বড় সেন্সর এর কারনে ভিডিওতে শোনা যায় না। যেটা আরেকটা খুব ভালো দিক সেন্সর বড় চ্যুজ করা।

আরও পড়ুনঃ রাউটারের কিছু গুপোন ফিচার ও রাউটার ব্যবহারের নিয়ম

২) ফোকাস (Focus)

ডিএসএলআর এবং ক্যামকর্ডার তুলনা করার সময় ফোকাস একটি শীর্ষ বিবেচ্য বিষয় হয়ে ওঠে-কিন্তু প্রযুক্তির সাম্প্রতিক অগ্রগতিগুলি সেই ব্যবধানটিকে উল্লেখযোগ্যভাবে সংকুচিত করে ফেলেছে। 

যদিও পেশাদার ভিডিওগ্রাফাররা প্রায়শই ম্যানুয়াল ফোকাস ব্যবহার করবেন, তারা যে ধরনের গিয়ার ব্যবহার করছেন তা বিবেচনা না করে। কেন? ফোকাসের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রেখে, আপনি কখন এবং কত দ্রুত ফোকাস করবেন তা চয়ন করতে পারেন, পাশাপাশি কে কথা বলছে তার উপর ভিত্তি করে দুজন ব্যক্তির মধ্যে ফোকাস পরিবর্তন করার মতো বিভিন্ন প্রভাব প্রয়োগ করতে পারেন। DSLR-এর মাধ্যমে ম্যানুয়াল ফোকাস করা সম্ভব, কিন্তু গুরুতর ভিডিওগ্রাফাররা প্রায়শই একটি ফলো ফোকাস কিট বাছাই করে, যা ম্যানুয়াল ফোকাস রিংকে সহজে দখল এবং নিয়ন্ত্রণ করে।

৩) ফিল্টার (Filter)

উজ্জ্বল বা রোদের দিনে ভিডিওট সঠিকভাবে প্রকাশ করার জন্য ক্যামকর্ডারগুলিতে আলো ব্যালেন্স করার জন্য ফিল্টার রয়েছে। dSLR-এ এই বৈশিষ্ট্যটি নেই। সেক্ষেত্রে আপনাকে একটি ND ফিল্টার কিট কিনতে হবে যদি আপনি অতিরিক্ত উজ্জ্বল ভিডিও নিয়ে সমস্যায় পড়েন। অতিরিক্ত কেনাকাটা ছাড়াও, এটি বহন করারও আপমার বিরক্তির কারন হতে পারে।

৪) রেকর্ডিং এর সময় (Recording time)

ক্যামেরার ক্ষেত্রে এক সাথে অনেক গুলো ডাটা নিয়ে কাজ করা প্রায় অসম্ভব, অনেক সময় প্রসেসর ঠিক মতন কাজ না করতে পেরে রেকর্ডিং বন্ধ হয়েও যেতে পারে। এদিক দিয়ে ক্যামকর্ডার এগিয়ে—এতে ভিডিওর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, সাধারণত এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে রেকর্ড করতে সক্ষম হয় এবং তা ব্যাটারি শেষ না হওয়া পর্যন্ত। 

DSLR-এর সর্বোচ্চ রেকর্ড সময় কম থাকে, প্রায় আধা ঘণ্টা এর মতন। 4K ভিডিওর জন্য এ সময় আরো কম হতে পারে। যদিও মডেল ভেদে কিছু পার্থক্য থাকে। 

বেশিরভাগ পেশাদার ভিডিওগ্রাফাররা তাদের চূড়ান্ত ভিডিও তৈরি করতে একসাথে বেশ কয়েকটি রেকর্ডিং সংযোজন করে, তাই সংক্ষিপ্ত রেকর্ডের সময় প্রায়শই তেমন সমস্যা হয় না। কিন্তু আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটি সম্পূর্ণ স্পোর্টস গেম রেকর্ড করার পরিকল্পনা করেন তবে একটি ক্যামকর্ডার সম্ভবত আপনার ভাল বিকল্প হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে যা যা করণীয় ২০২১

৫) শব্দ (Audio)

নতুন ভিডিওগ্রাফাররা সাধারণত এ বিষয়টা বিবেচনা করে না, তবে অডিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সাধারণভাবে, ক্যামকর্ডারের ভিতরে থাকা একটি মাইক DSLR-এর ভিতরে থাকা মাইকগুলির চেয়ে ভাল৷ তবে, এখানে জিনিসটি হল: কাছাকাছি রাখা একটি সস্তা মাইক ও যেকোন বিল্ট-ইন মাইকের চেয়ে ভাল কাজ করে, তা আপনি ক্যামকর্ডার বা ডিএসএলআর দিয়ে শুটিং করেন না কেনো! 

তবে অভিজ্ঞ ভিডিওগ্রাফাররা যখন DSLR-এর মাধ্যমে শুট করে তখন এক্সট্রা মাইক ব্যবহার করে তাই বলে এটা তাদের অসুবিধার বিষয় না।

৬) দাম (Cost)

ক্যামকর্ডারের তুলনায়, ডিএসএলআরগুলি অনেক বেশি সাশ্রয়ী। কম দামের জন্য বিভিন্ন কাজের একাধিক DSLR বাছাই করা আপনার জন্য অনেকটা সহজ, যা অনেক পরিস্থিতিতে একটি বড় সুবিধা হতে পারে।

তবে ডিএস এল আর এর ক্ষেত্রে ফিলটার, ম্যানুয়াল ফোকাস ইত্যাদি এক্সেসোরিজ ও কিনতে হতে পারে আপনার। তবে, ডিএসএলআর এবং ক্যামকর্ডার উভয়ই অডিও সরঞ্জাম এবং ট্রাইপড এবং ভিডিও লাইটের মতো অন্যান্য আনুষাঙ্গিকগুলো ভালভাবে যুক্ত।

আরও পড়ুনঃ স্মার্টফোন চার্জে দেবার ৮ টি সুপার টিপস

শেষ কথাঃ

ক্যামকর্ডার এর ফিল্টার, খুব স্মুথলি এবং অনেক বেশি সময় ধরে ভিডিও এবং রেকর্ডিং করার টেকনোলজি এটি কে সব সময় এগিয়ে রাখবে ডি এস এল আর এর চেয়ে।

তবে DSLR-এর এও অনেক বড় সুবিধা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অনেক বড় সেন্সর এবং উন্নত ক্যামকর্ডারের তুলনায় কম দাম। এখন পছন্দ আপনার! প্রয়োজন, সাধ্য আর রুচি অনুযায়ী আপনি ই বেছে নিন ক্যামকোর্ডার আর ডি এস এল ওর এর মধ্যে আপনার জন্য কোনটি ভালো!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ