কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২৪

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা

আপনারা যারা কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী ছিলেন আমাদের আজকের পোস্টটি ঠিক তাদের জন্যেই। আজকে আমরা কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতার বিভিন্ন গুণাগুনের সাথে পরিচিত হবো। আমাদের শরীরের আয়রনের ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি রক্তে লাল কণিকার পরিমাণ বাড়ায় কিসমিস।

শুকনো কিসমিস খাওয়ার পরিবর্তে ভিজিয়ে খেলে উপকার বেশি। কিসমিস ভেজানো পানি রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কিসমিসের পানি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাবেন ওষুধ ছাড়াই। কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।

    কিসমিস কি?

    কিসমিসের উপকারিতা

    এখন আমরা জেনে নিবো যে কিসমিস আসলে কি? কিভাবে কিসমিস তৈরী করা হয় সেই সম্পর্কে।  কিসমিস শুকনো ফলের শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা আঙ্গুর শুকিয়ে প্রস্তুত করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় আঙ্গুরকে প্রায় তিন সপ্তাহ রোদে শুকিয়ে এর আর্দ্রতা বের করা হয়। কিসমিস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়।

    কিসমিস অনেক গুলো প্রয়োজনীয় ফাইটোকেমিক্যাল সমৃদ্ধ। এছাড়াও, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল কার্যকলাপও এতে পাওয়া যায়। কীভাবে এটি শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে, এই তথ্যটি নীচে দেওয়া হল। তার আগে চলুন আরো কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ

    আরও পড়ুনঃ খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

    কিসমিস কত প্রকার?

    কিসমিস কত প্রকার?

    কিসমিস প্রকারভেদে অনেক গুলো থাকলেও আজকে আমরা কিসমিসের মধ্যে প্রধান তিনটি সম্পর্কে নীচে আপনাদের সাথে আলোচনা করবোঃ

    বাদামী কিসমিসঃ এই বাদামী কিসমিস তিন সপ্তাহ ধরে আঙ্গুর শুকিয়ে তৈরি করা হয়। শুকানোর পরে এগুলি বাদামী হয়ে যেতে পারে। এটি তৈরি করতে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের আঙ্গুর ব্যবহার করা হয়। তাদের রঙ, আকার এবং স্বাদ আঙ্গুর ধরনের উপর নির্ভর করে। তাহলে বুঝতেই পারছেন বাদামী কিসমিস কিভাবে তৈরী করা হয়।

    সুলতানা (গোল্ডেন রেজিন)ঃ সুলতানা আঙ্গুর (বীজহীন সবুজ গোলাকার আঙ্গুর) শুকিয়ে এই কিশমিশ তৈরি করা হয়। এই ধরনের কিশমিশ তৈরি করতে আঙুর শুকানোর আগে এক ধরনের তৈলাক্ত দ্রবণে ভিজিয়ে রাখা হয়। এই কারণে, এই কিশমিশের রঙ সোনালি/হালকা বাদামী। এই কিশমিশটি প্রায়শই আকারে ছোট এবং অন্য দুটি কিশমিশের তুলনায় স্বাদে মিষ্টি হয়।

    বেদানা (কালো কিসমিস)ঃ এই ধরণের কিসমিসকে বেদানাও বলা হয় এবং এটি কালো আঙ্গুর থেকে তৈরি করা হয়। এগুলোও তিন সপ্তাহ ধরে আঙ্গুর শুকিয়ে তৈরি করা হয়। এদের স্বাদ প্রায়ই টক-মিষ্টি এবং আকারে ছোট। অন্যান্য আঙ্গুরের মতো কালো কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা কি, তাও বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে।

     শরীরে আয়রনের ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি রক্তে লাল কণিকার পরিমাণ বাড়ায় কিসমিস। শুকনো কিসমিস খাওয়ার পরিবর্তে ভিজিয়ে খেলে অনেকবেশি উপকারিতা পাওয়া যায়।

    কিসমিস ভেজানো পানি রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।

    কিসমিস ভেজানো পানি রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে

    আমরা অনেকেই কিন্তু জানি না যে কি পরিমান উপকারিতা রয়েছে এই কিসমিসের ভেতরে। তাই আপনি যদি প্রতিদিন কিসমিসের পানি খান তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাবেন ওষুধ ছাড়াই।

    এছাড়া কিসমিস হৃদয় ভালো রাখে। নিয়ন্ত্রণে রাখে কোলেস্টেরল। কিসমিসে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ আছে। আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা সহজে রোগমুক্তির কারণ। আর আছে প্রচুর আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার।

    আরও পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

    ভেজানো কিসমিস খাওয়ার উপকারিতাঃ

    ভেজানো কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

    কিসমিস খাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় সারারাত কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন ভোরে সেটা খান। ভেজানো কিসমিসে থাকে আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার। হাই ব্লাডপ্রেসারের সমস্যা থাকলেও এটি তা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

    ১। ব্লাড প্রেসার

    উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলোর মধ্যে একটি কিসমিস। এর মধ্যে থাকা পটাসিয়াম হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখে। তাই কিসমিস আমাদের শরীরের জন্য অত্যান্ত উপকারি একটি উপাদান।

    ২। রক্ত স্বল্পতা কমায়

    ধরুন আপনার শরীরে রক্ত স্বল্পতা রয়েছে তাহলে কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন। কেননা রক্ত স্বল্পতা কমাতে কিসমিস যথেষ্ট উপকারি। নিয়মিত কিসমিস খেলে এর মধ্যে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। এছাড়াও এর মধ্যে আছে তামা যা রক্তে লাল রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।

    ৩। হজমশক্তি বাড়ায়

    আমাদের সকলেরই কিন্তু সুস্থ থাকার জন্য ভালো হজমশক্তি জরুরি। এক্ষেত্রে কিসমিস হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। রোজ রাতে এক গ্লাস পানিতে কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন ভোরে সেই কিসমিস খান। নিজেই তারপর তফাত খেয়াল করুন দিন পনেরো পরেই।

    ৪। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

    আপনি যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়াতে চান তবে ভেজা কিসমিস এবং তার পানি নিয়মিত খান। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

    ৫। বিষমুক্ত শরীর

    শরীরকে দূষণমুক্ত করতে কিসমিস খান নিয়মিত। চারিদিকের দূষণে আপনি যখন জেরবার তখন সকালে খালি পেটে ভেজানো কিসমিস খেলে শরীর বিষমুক্ত হবে। ভেজানো কিসমিসের পাশাপাশি কিসমিস ভেজানো পানিও খেতে পারেন।

    আরও পড়ুনঃ আমলকীর উপকারীতা ও পুষ্টিগুন

    ৬। কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়

    নিয়মিত কিসমিস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে। আপনি যদি পেটের সমস্যায় নিয়মিত ভোগেন তাহলে প্রতিদিন সকালে খালিপেটে ভেজানো কিসমিস খান। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে কষ্ট পান তারা ওষুধের বদলে নিয়মিত কিসমিস খেয়ে দেখতে পারেন।

    ৭। হার্টের জন্য কিসমিসের বৈশিষ্ট্য

    হৃদরোগ এড়াতেও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা পাওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে, NCBI (ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, কিশমিশ খারাপ কোলেস্টেরল অর্থাৎ এলডিএল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড (রক্তে উপস্থিত এক ধরনের চর্বি) কমাতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।

    কোলেস্টেরল দ্বারা ঝুঁকি এড়ানো যায়। তবে এই প্রক্রিয়ার পেছনে কিসমিসের কী কী বৈশিষ্ট্য কাজ করে তা গবেষণার বিষয়।

    ৮। ক্যান্সার প্রতিরোধে কিসমিসের উপকারিতা

    কিসমিসের গুণাগুণ ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। আসলে, NCBI-এর একটি গবেষণা অনুসারে, কিসমিসের মিথানল নির্যাসে অ্যান্টি-র্যাডিক্যাল এবং ক্যান্সার প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে কিছুটা সহায়ক হতে পারে।

    অন্যান্য ধরণের ক্যান্সার প্রতিরোধে কিসমিস কীভাবে উপকারী প্রভাব দেখাতে পারে তার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন । পাঠকদের জানিয়ে রাখি, কিসমিস শুধুমাত্র ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে, এটি সারাতে পারে না। তাই ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।

    ৯। কিসমিসের গুণাগুণ অ্যাসিডিটিতে উপকারী

    অ্যাসিডিটি একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে বুক থেকে পেট পর্যন্ত জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে কিসমিসের সাহায্য নিতে পারেন। অম্লতা কমাতে সাহায্য করতে পারে এমন খাবারে কিশমিশ অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

    এই সম্পর্কিত একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে কিসমিসের ক্ষারীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা শরীরে অ্যাসিডের পরিমাণ স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।

    ১০। মুখ ও দাঁতের যত্ন

    কিশমিশ মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন দ্বারা পরিচালিত একটি সমীক্ষা পরামর্শ দেয় যে কিসমিস খাওয়া দাতের গহ্বর প্রতিরোধ করতে পারে।

    গবেষকদের মতে, কিসমিসে রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ওলিয়ানোলিক অ্যাসিড, যা দাঁতের ক্যারিস সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, কিশমিশে পাওয়া ফাইটোকেমিক্যালগুলি মুখের মধ্যে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া যেমন Mutans Streptococci, যা গহ্বর সৃষ্টি করে, দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

    ১১। ওজন নিয়ন্ত্রণে কিশমিশের উপকারিতা

    ওজন নিয়ন্ত্রণে সীমিত পরিমাণে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতাও দেখা যায়। আসলে, NCBI দ্বারা প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে কিসমিসে ডায়েটারি ফাইবার এবং প্রিবায়োটিক পাওয়া যায়।

    এই উভয় উপাদানই অন্ত্রের জন্য ভাল এবং স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া তৈরি করতে সাহায্য করে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। তবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিনের ব্যায়াম ও সুষম খাদ্যও প্রয়োজন।

    ১২। সংক্রমণ প্রতিরোধ করে

    সংক্রমণ এড়াতেও কিসমিসের উপকারিতা পাওয়া যায়। এমন অনেক গুণ এতে পাওয়া যায়, যা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়ালের মতো বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সহায়ক।

    এছাড়াও, কিসমিসের নির্যাস মুখের ব্যাকটেরিয়া, মিউটান স্ট্রেপ্টোকক্কাস (দাঁতের ক্ষয় সৃষ্টিকারী প্রধান ব্যাকটেরিয়া) এর বিরুদ্ধে লড়াই করে মুখকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

    ১৩। জ্বরের জন্য কিসমিসের উপকারিতা

    শরীরে যেকোনো ধরনের ইনফেকশন হলেই জ্বর হতে পারে। জ্বর হয় যখন শরীর সেই ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসকে নির্মূল করার চেষ্টা করে যা সেই সংক্রমণের কারণ হয়। এমন পরিস্থিতিতে কিসমিস সেই ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।

    কিসমিসের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়, যা এই ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে। আপাতত, এই বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।

    ১৪। যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতি করে

    যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা পাওয়া যায়। আসলে কিসমিসে বোরন নামক খনিজ পাওয়া যায়। NCBI (ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন) দ্বারা প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে বোরন নারী ও পুরুষ উভয়ের যৌন স্বাস্থ্যের সাথে যুক্ত হরমোন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। এর সাহায্যে, এটি যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতিতে খুব কার্যকরি প্রমাণিত হয়েছে।

    আরও পড়ুনঃ  কালো থেকে ফর্সা হওয়ার উপায়

    কিসমিস খাওয়ার নিয়ম

    কিসমিস এর সম্পূর্ণ উপকারিতা পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই নিয়ম মেনে খেতে হবে। বিভিন্ন সমস্যায় কিসমিস কিভাবে খাবেন তা আপনারা এতক্ষন জানলেন। এবার জানুন কিসমিস দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর উপায়ে কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে-

    • কিসমিস পিনাট বাটার এবং ফ্রুট সালাদের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
    • কিসমিসের সাথে ব্রকলি এবং গাজর (বা ঋতু অনুযায়ী যেকোনো সবজি) সালাদ হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।
    • সকালের নাস্তায় ওটসে চিনির পরিবর্তে কিসমিস ব্যবহার করুন।
    • এটি মাফিন এবং প্যানকেকগুলিকে মিষ্টি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
    • কিসমিস সরাসরি খাওয়া যায়।

    খাওয়ার পরিমাণ: শুকনো ফল সব বয়সের মানুষের জন্য উপকারী। দিনে 50-100 গ্রাম কিসমিস খাওয়া যেতে পারে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য, এর পরিমাণ তাদের খাদ্য এবং ওষুধ অনুসারে হতে হবে, যার জন্য ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

    কিভাবে কিসমিস দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করবেন

    কিভাবে কিসমিস দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করবেন

    কিসমিস দীর্ঘ শেলফ লাইফের জন্য ফ্রিজে একটি বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করুন। এভাবে প্রায় এক বছর পর্যন্ত কিসমিস সংরক্ষণ করা যায়। রাখার সময় খেয়াল রাখতে হবে বাক্সে যেন আর্দ্রতা না থাকে। আর্দ্রতা কিসমিস পচে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

    কিসমিসের পুষ্টিগুণ

    এখানে কিসমিসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।

    প্রতি ১০০ গ্রাম কিসমিসে রয়েছে এনার্জি ৩০৪ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৭৪.৬ গ্রাম, ডায়েটরি ফাইবার ১.১ গ্রাম, ফ্যাট ০.৩ গ্রাম, প্রোটিন ১.৮ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৮৭ মিলিগ্রাম, আয়রন ৭.৭ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৭৮ মিলিগ্রাম ও সোডিয়াম ২০.৪ মিলিগ্রাম।

    আরও পড়ুনঃ নবজাতক শিশুর যত্ন এবং শিশুর জন্মের পরে ভারনিক্স কি কি কাজ করে?

    কিসমিসের অপকারিতা

    শারীরিক উপকারের পাশাপাশি কিসমিস খাওয়ার অপকারিতাও রয়েছে। এটি অত্যধিক পরিমাণে সেবন করলে নিম্নলিখিত সমস্যা হতে পারে, যেমন-

    • শরীরের ওজন বৃদ্ধি
    • এলার্জি
    • ডায়রিয়া এবং গ্যাস
    • টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি

    কিসমিস অনেক ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ একটি সুস্বাদু খাদ্য আইটেম, যা আপনি আপনার দৈনন্দিন খাদ্যের একটি অংশ হিসেবে যুক্ত করতে পারেন। প্রবন্ধে উল্লেখিত কোনো সমস্যায় ভুগলে আজ থেকেই কিসমিস খাওয়া শুরু করুন।

    এছাড়াও মনে রাখবেন যে যদি এটি নিয়মিত সেবনের কারণে অ্যালার্জির মতো উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে অবিলম্বে এটির ব্যবহার বন্ধ করুন এবং আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। ডায়াবেটিস রোগীদের কিসমিস খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

    শেষ কথাঃ

    প্রকৃতি থেকে সরাসরি প্রাপ্ত প্রতিটি জিনিস আমাদের জন্য উপকারী হবে যদি আমরা সঠিক নিয়ম মেনে তা গ্রহণ করতে পারি। তাই এখানে উল্লেখিত কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পূর্ণ জেনে এবং নিয়মগুলো মেনেই এটি গ্রহণ করুণ।

    আপনারা যদি উপরের দেওয়া কনটেন্ট মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশাকরি কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের সমস্যা হবে না। এই পোস্ট গুলো যদি আপনার ভাল লাগে তাহলে আপনার বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করতে পারেন।

    এছাড়াও আপনি চাইলে আমাদের ফেসবুক পেজ এবং টুইটার এর অফিশিয়াল প্রোফাইলে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকতে পারেন তাহলে এধরনের পোষ্ট পাবলিশ হওয়ার সাথে সাথে আপনি নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ