খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২৪

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা- আমরা হয়তো সকলেই জানি যে খেজুর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। খেজুর চুল ও ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখতেও অসামান্য ভুমিকা পালন করে। গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ছাড়াও খেজুরে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সালফার, প্রোটিন, ফাইবার এবং আয়রন। আমাদের ক্লান্ত শরীরে যথেষ্ট পরমিাণ শক্তির জোগান দিতে সক্ষম এই খেজুর।

আপনাদের সুবিধার জন্য রেফারেন্স হিসাবে বিআরবি হসপিটালের প্রধান পুষ্টিবিদ ইশরাত জাহান গণমাধ্যমকে বলেন, পাকা খেজুরে প্রায় ৮০% চিনিজাতীয় উপাদান রয়েছে। সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে উপকার বেশি হয়। তাছাড়া ব্যায়াম করার ৩০ মিনিট আগে কয়েকটি খেজুর খাওয়া ভালো।

অত্যন্ত সুস্বাদু একটি ফল হল খেজুর। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিও রয়েছে এতে অনেক। এটিকে চিনির বিকল্প হিসেবে খাওয়া যায়। এই ফল খাওয়ার সাথে সাথেই দেহের ক্লান্তিভাব দূর হয়। অবসাদ কমে শরীরে আসে প্রফুল্লতা। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-বি সমৃদ্ধ এই ফলে ভিটামিন বি ছাড়াও রয়েছে আরও অনেক পুষ্টি উপাদান। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

    খেজুরের পুষ্টি উপাদান ও উপকারিতা । খেজুরের উপকারিতা

    খেজুরের পুষ্টি উপাদান ও উপকারিতা

    আরেকটু বিস্তারিত বলতে গেলে বলা যায় যে খেজুরে ভিটামিন-বি ছাড়াও আরও আছে ক্যালরি, প্রোটিন। এছাড়াও এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফাইবার এবং অন্যান্য আরও পুষ্টি উপাদান। এটি ফ্রুকটোজ এবং গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ একটি ফল। এ সকল উপাদান দেহের নানা প্রকার উপকার করে থাকে। প্রতি ৩০ গ্রাম বা ৪টি খেজুরে যে পরিমান পুষ্টি উপাদান রয়েছে, চলুন দেখে নেওয়া যাকঃ

    খেজুরের উপাদান ও পরিমাণ

    • প্রোটিন => ১ গ্রাম
    • ক্যালোরি => ৯০
    • ক্যালসিয়াম => ১৩ মি.লি.
    • গ্রামফাইবার => ২.৮ গ্রাম

    আজওয়া খেজুরের উপকারিতা

    আজওয়া খেজুরের উপকারিতা

    এই পর্যায়ে আমরা জেনে নিবো যে আজওয়া খেজুরের উপকারিতা সমূহ কি কি? আমরা জানি যে একটি বিশেষ প্রজাতির খেজুর হলো আজওয়া খেজুর। এই প্রজাতিটির খেজুর মূলত পবিত্র মক্কা নগরীতে উৎপন্ন হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের হাতে এর গাছ সর্বপ্রথম রোপণ করেন। এই প্রজাতির খেজুরে রয়েছে বিশেষ বরকত ও ফজিলত। এর সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে সেদিন বিষ ও যাদু তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না (বুখারি)। তিনি আরও বলেছিলেন এ খেজুর হল রোগ নিরাময়কারী ও এটি জান্নাতের ফল। এর মধ্যে রয়েছে বিষ নিরাময় গুণ।

    এছাড়াও এই আজওয়া খেজুরের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতাও অনেক। নিচে এর সম্পর্কে আলোচনা করা হল:

    আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আবার অনেকই রয়েছেন জানেন না যে আজওয়া খেজুরে আছে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় শর্করা, আমিষ, প্রোটিন, স্বাস্থ্যসম্মত ফ্যাট। এছাড়াও রয়েছে খাদ্য আঁশ, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি৬, ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-কে। আরও আছে ক্যারোটিন, যা চোখের জন্য উপকারী। তাছাড়া আরও রয়েছে ফলেট, নিয়াসিন, থিয়ামিন ও রিবোফ্লেভিন এর মতো উপাদান যারা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

    আজওয়া খেজুর দেহের পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি দেহে শক্তি জোগায়। দিনের শুরুতে একটি খেজুর খাওয়া আপনার সারাদিনের কর্মক্ষমতা জোগাতে সক্ষম। রমজানের সময় সারাদিন রোজা রাখার শেষে এই ফল খেলে আপনার দেহ হয়ে উঠবে আবারও কর্মচঞ্চল ও প্রাণবন্ত।

    আরও পড়ুনঃ রোজা ভঙ্গের কারণ ও রোজার মাকরুহ সমূহ

    মরিয়ম খেজুরের উপকারিতা । খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

    মরিয়ম খেজুরের উপকারিতা

    যেসমস্ত খেজুর রয়েছে তা ভেতরে শুকনো খেজুরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিসমৃদ্ধ ও উপকারী ভাবা হয় মরিয়ম খেজুরকে। মরিয়ম খেজুর রয়েছে নানা উপকারী গুনাগুণ আর এই জন্য মানুষের কাছে এটি খুবই জনপ্রিয়। রমজান মাসে রোজা রেখে দিনের শেষে এই খেজুর খেলে অনেক উপকার হয় শরীরের।

    এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি, সি, কে ইত্যাদির মতো নানা উপকারী উপাদান। এ সকল উপাদান দেহের অনেক উপকার করে। এবার মরিয়ম খেজুরের উপকারিতা জেনে নিই।

    1. পেশী গঠনে সাহায্য করে।
    2. এতে থাকা ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-সি চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়।
    3. রক্তশূন্যতা দূর করে।
    4. হৃৎপিন্ডকে সুস্থ রাখে।
    5. যাদের হৃৎপিণ্ড দুর্বল তারা এ খেজুর খেলে উপকার পাবেন।
    6. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
    7. দেহের ক্লান্তি দূর করে।

    খেজুর কমাতে পারে হৃদরোগের ঝুঁকি: 

    দ্রবণীয় ভোজ্য আঁশ সরবরাহ করে খেজুর। শরীরের জন্য ক্ষতিকর কোলেস্টেরল ‘এলডিএল’য়ের যুক্ত হয়ে তা রক্তে মিশে যেতে বাধা দেয় এই আঁশ। একারণে ওই কোলেস্টেরলে থাকা ‘ফ্যাটি লিপিড’ রক্তনালীর দেয়ালের জমতে পারেনা। এভাবেই হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে এই ফল।

    ক্যান্সারের রোগে খেজুরের উপকারিতা: 

    ‘ক্যারোটিনয়েড’, ‘পলিফেনলস’ আর ‘অ্যান্থোসায়ানিনস’ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খেজুর। খাদ্যাভ্যাসে এই উপাদানগুলোর প্রাচুর্য থাকলে ক্যান্সারসহ আরও অনেক দূরারোগ্য ব্যাধির ঝুঁকি কমে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। বিশেষ করে ‘কলোরেক্টাল ক্যান্সার’য়ের বিরুদ্ধে খেজুর বিশেষ উপকারী ভূমিকা রাখে বলে দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা।

    ডায়াবেটিস রুখতে খেজুরের উপকারিতা: 

    দ্রবণীয় ভোজ্য আঁশের আছে নানান উপকারিতা। যার মধ্যে একটি হল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা।

    পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে খেজুরের উপকারিতা: 

    ভোজ্য আঁশ, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম আর ভিটামিন ডি, এই চারটি পুষ্টি উপাদান মানুষ বরাবরই কম গ্রহণ করে, এমনটাই দাবি বিশেষজ্ঞদের। আর মাত্র চারটি খেজুর থেকে পেতে পারেন ভোজ্য আঁশের দৈনিক চাহিদার ২৭ শতাংশ এবং পটাসিয়ামের দৈনিক চাহিদার ২০ শতাংশ। ফলে প্রতিদিন কয়েকটি খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে এমন দুটি পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। যেগুলোর ঘাটতিতে ভোগে পুরো বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ।

    কোলেস্টেরল এবং ফ্যাট খেজুরের উপকারিতা

    খেজুরে কোন কোলেস্টেরল এবং বাড়তি পরিমাণে চর্বি থাকে না। যার ফলে আপনি যখন সহজেই খেজুর খাওয়া শুরু করবেন তখন অন্যান্য ক্ষতিকর ও চর্বি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে পারবেন।

    প্রোটিন এর জন্য খেজুরের উপকারিতা

    আমাদের শরীরের জন্য প্রোটিন অত্যাবশ্যকীয় একটি প্রয়োজনীয়  উপাদান। খেজুর হল প্রোটিন সমৃদ্ধ। ফলে আমাদের পেশী গঠন করতে সহায়তা করে এবং শরীরের জন্য খুব অপরিহার্য প্রোটিন সরবরাহ করে।

    ভিটামিন এর জন্য খেজুরের উপকারিতা

    খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক। যেমন, বি১, বি২, বি৩ এবং বি৫। এছাড়াও ভিটামিন এ১ এবং সি ভিটামিন পাওয়ার আরও একটি সহজ মাধ্যম হচ্ছে খেজুর। সেই সাথে খেজুরে দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়। সেই সঙ্গে রাতকানা রোগ প্রতিরোধেও খেজুর অত্যন্ত কার্যকর।

    আয়রন এর জন্য খেজুরের উপকারিতা

    আয়রন মানব দেহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। খেজুর প্রচুর আয়রন রয়েছে। ফলে এটা হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। তাই যাদের দুর্বল হৃৎপিণ্ড, তাদের জন্য খেজুর হতে পারে সবচেয়ে নিরাপদ ওষধ।

    ক্যালসিয়াম এর জন্য খেজুরের উপকারিতা

    ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়ক। আর খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। যা হাড়কে মজবুত করে। খেজুর শিশুদের মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে।

    রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ এর জন্য খেজুরের উপকারিতা

    প্রচুর মিনারেল সঙ্গে আয়রন থাকার কারণে খেজুর রক্তশূন্যতা রোধ করে। তাই যাদের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম তারা নিয়মিত খেজুর খেয়ে দেখতে পারেন।

    কর্মশক্তি বাড়ায় এর জন্য খেজুরের উপকারিতা

    খেজুরে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকার কারণে খেজুর খুব দ্রুত শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সারাদিন রোজা রাখার পর রোজাদাররা যদি মাত্র ২টি খেজুর খান তবে খুব দ্রুত কেটে যাবে তাদের ক্লান্তি।

    স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়

    খেজুর নানা ভিটামিনে পরিপূর্ণ থাকার কারণে এটি মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনার গতি বৃদ্ধি রাখে, সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ছাত্র-ছাত্রী যারা নিয়মিত খেজুর খায় তাদের দক্ষতা অন্যদের তুলনায় ভাল থাকে।

    বন্ধ্যাত্ব দূর এর জন্য খেজুরের উপকারিতা

    খেজুরে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার অনেকগুলি রোগ নিরাময় করতে পারে। এটি খেলে ডায়াবেটিস, স্থূলত্ব এবং হৃদরোগ নিরাময় হয়। একই সাথে এটি পেটের ক্যানসার এবং আলসারের মতো অবস্থার ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে। আফ্রিকায় দেখা গেছে পুরুষ বন্ধ্যাত্বের জন্য সেখানকার লোকেরা দীর্ঘ দিন ধরে খেজুর ।

    তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজনে। শোনা যায় খেজুর ফুলের পরাগরেণু বন্ধ্যাত্ব দূর করে, শুক্রাণু বৃদ্ধি করে। খেজুর ও এর ফুলে থাকা পরাগরেণু ডিএনএ’র গুণগত মান উন্নত করে ওষুকোষের শক্তি বাড়ায়। পুরুষদের কাজের চাপে অনেক সময় শরীর দুর্বল লাগে সেক্ষেত্রে কয়েকটি খেজুর খেয়ে নিলেই ফিরে পাবে আগের এনার্জি।

    ​উচ্চ রক্তচাপ কমাতে খেজুরের উপকারিতা

    খেজুরে থাকা পটাশিয়াম ও সোডিয়াম দেহে উচ্চ রক্তচাপ কমায়। ও বাজে কোলেস্টেরল দূর করে ও শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং খুব অল্প পরিমাণে সোডিয়াম। প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার অভ্যাস দেহের খারাপ কলেস্টোরল কমায় এবং ভালো কলেস্টোরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে।

    রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি এর জন্য খেজুরের উপকারিতা

    দুধ ও খেজুর- উভয়েই রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রনের মাত্রা। এই দুটি জিনিস একসঙ্গে মিশলে আয়রনের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্তে হিমোগ্লোবিন ও প্রোটিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

    একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে, দুধের মধ্যে দুটি করে খেজুর দিয়ে ফোটানো হলে, সেই উপাদেয় খাবারটি সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর বলে মানা হয়। খালি পেটে একটি নির্দিষ্টি সময়ে এই উপকারী পানীয় খেতে পারেন। মাত্র ১০ দিনে রক্তাল্পতার সমস্যা উধাও হবে।

    খেজুর খওয়ার ফলে আপনার শরীরে যা ঘটে

    আপনাদের বুঝার সুবিধার জন্যে বলে রাখি যে শুধু আজওয়া বা মরিয়ম খেজুর খেলেই যে উপকার পাওয়া যায় এমন কিন্তু নয়। সকল প্রকার খেজুর থেকেই উপকার পাওয়া যায়। এটির সকল প্রকারেই রয়েছে অনেক পুষ্টি ও উপকারিতা। খেজুর খেলে যে সকল উপকারিতা পাওয়া যায় এবার সে সম্পর্কে জেনে নিই।

    1. খেজুরে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা মানুষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে সহজে কোনো রোগ আপনাকে আক্রমণ করতে পারবে না।
    2. এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই এটি দেহের ওজন কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার পেটকে অনেকক্ষণ ভরা রাখতে সাহায্য করে। ফলে অন্য খাবার খেতে ইচ্ছে হয় না। এতে ওজন কমে। তাই ডায়েট চার্টে এই ফল রাখতেই পারেন।
    3. এতে আছে ম্যাগনেসিয়াম। এই ম্যাগনেসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগের ঝুঁকি কমে।
    4. যারা চিনি খান না তাদের জন্য চিনির বিকল্প হতে পারে খেজুর। চিনির বিকল্প হিসেবে খেজুরের রস বা খেজুরের গুড় খেতে পারেন। এতে চিনির চেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
    5. রক্তশূন্যতায় ভুগা রোগীর জন্য এটি হতে পারে এক দারুণ সমাধান। দেহে আয়রনের অভাব পূরণ করে রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে খেজুর। যেকোনো মানুষের দেহের জন্য প্রয়োজনীয় আয়রনের প্রায় ১১ ভাগই পূরণ করে এই ফল
    6. এতে থাকা নানা উপাদান হৃৎপিন্ডের উপকার করে ও হৃৎস্পন্দন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই হার্টকে সুস্থ রাখতে খেতে পারেন যেকোনো প্রজাতির খেজুর।
    7. কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার সমাধান হিসেবে এটি বেশ উপকারী। রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে এটি খাওয়া ভালো যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে।
    8. এতে লিউটেন ও জিক্সাথিন নামক উপাদান থাকায় এটি চোখের রেটিনার উপকার করে।

    খেজুর খাওয়ার নিয়ম । খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

    খেজুর খাওয়ার নিয়ম

    খেজুর একটি উপকারী ফল এ বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যেই জেনে গেছি৷ কিন্তু কখন বা কি নিয়মে খেলে বেশি উপকার পাবো?

    সকালে খেজুর খেলে ভালো, এতে সারাদিন দেহে শক্তি পাওয়া যায় প্রচুর। ব্যায়াম করার কমপক্ষে আধা ঘন্টা আগে এটি খেলে দেহে সহজে ক্লান্তি আসে না, পাশাপাশি পেট থেকে দূষিত পদার্থও বেরিয়ে যায়।

    আবার সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখেও খেতে পারেন এই ফল। সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও ঘুমানোর আগেও খেতে পারেন এটি। তবে ডায়রিয়া বা পেট খারাপের সমস্যা থাকলে এটি না খাওয়াই ভালো। এছাড়া হজমের সমস্যা থাকলেও এটি না খাওয়া উচিৎ।

    খেজুরের ঔষধি গুনঃ 

    খেজুর বিভিন্ন সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে যকৃতের সংক্রমণ এবং সর্দি, কাশি, জ্বর প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও বদহজম, উচ্চরক্তচাপ, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি সমস্যায় খেজুর উপকারী।

    আমাদের রাসূল সাঃ বলেছেন যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে সেদিন বিষ ও যাদু তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না (বুখারি)। তাই এখন আপনারা নিজে থেকেই বুঝে নিন যে কি পরিমান উপকারিতা রয়েছে খেজুরে।

    খেজুরের অপকারিতা/পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

    আপনাদের অনেকের মনেই হয়তোবা প্রশ্ন রয়েছে যে এতো উপকারিতা সম্পন্ন একটি ফল খেজুর, তাহলে খেজুরের কোন অপকারিতা নেই? বা অত্যন্ত উপকারী খেজুরের কি অপকারিতা আছে? আসলে সকল উপকারী জিনিসেরই কিছু না কিছু ক্ষতিকর দিক বা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া থাকে।

    খেজুরেরও তেমন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া আছে। তেমন কোনো ক্ষতিকর দিক এর না থাকলেও ডায়াবেটিস রোগীরা এই ফল খাওয়ার সময় অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিৎ। এছাড়া যাদের দেহে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি তারা এই ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ।

    আরও পড়ুনঃ সূরা দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ

    ডায়াবেটিস রোগীরা কি খেজুর খেতে পারবে?

    ডায়াবেটিস রোগী কি কিসমিস খেতে পারবে

    আমরা সকলেই জানি যে ডায়াবেটিস একটি মারাত্মক রোগ। এটি অন্য অনেক রোগের ঝুঁকিও তৈরি করে। তাই এটি নিয়ে মানুষের চিন্তার শেষ নেই। এ রোগের রোগীরা সাধারণত চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার তেমন খেতে পারেন না। এ সকল খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে খেজুর হতে পারে একটি সমাধান।

    খেজুর সাধারণত মিষ্টি ফল হলেও চিনির বিকল্প হিসেবে এটি খাওয়া যায়। বিভিন্ন গবেষণার মতে, এই ফল খেলে ব্লাড সুগার বাড়ে না। এই ফল বরং শরীরের উপকার করে। মিষ্টির বিকল্প হিসেবে এই ফল খেলেও ডায়াবেটিস রোগীদের ২-১টির বেশি খাওয়া উচিৎ নয়।

    একটি নিরীক্ষার মতে, ১০ জন মানুষকে ১০০ গ্রাম খেজুর খাওয়ানোর পর চার সপ্তাহ পর তাদের দেহের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে ছিলো। পাশাপাশি তাদের দেহের কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে ছিলো। তবে সকল ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে কিন্তু এটি যে উপকারী এমন কিন্তু নয়। তাই এক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই এই ফল খাওয়া উচিৎ।

    খেজুর নিয়ে অধিক সার্চকৃত শব্দ গুলো হচ্ছেঃ খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা, খেজুর ও কিসমিস এর উপকারিতা, খেজুরের অপকারিতা, খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা, সেক্সে খেজুরের উপকারিতা, খেজুর খাওয়ার নিয়ম, শুকনো খেজুর খাওয়ার নিয়ম, খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়, মধু ও খেজুরের উপকারিতা, দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত, খেজুর খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি।

    শেষ কথা খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কেঃ

    তো বন্ধুরা আশা করি আপনারা এখন বুঝেই গিয়েছেন যে খেজুরের কি পরিমান উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে সেই সম্পর্কে। আপনাদের যেকোন মতামত জানাতে পারেন আমাদের কমেন্ট বক্সে অথবা কন্টাক্ট পেজে গিয়ে।

    আর আমাদের পোস্ট যদি আপনার উপকারে আসে বা ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে একদমই ভুলবেন না। এই রকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের অফিসিয়াল পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ