ক্যান্সার এর লক্ষণ এবং ক্যান্সার কেন হয়?

ক্যান্সার এর লক্ষণ এবং ক্যান্সার কেন হয়

বর্তমানে মানুষের প্রযুক্তিগত ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রচুর পরিমানে উন্নয়ন করছে যা হয়তো আমরা কখনো কল্পনায় করিনি। তবে মানুষের উন্নতির সাথে সাথে সৃষ্টি হচ্ছে অনেক জটিল ও কঠিনতর বিভিন রকমের ব্যাধি। আর ক্যান্সার হচ্ছে তার মধ্যে একটি ভয়ংকর ব্যাধি। আজকে আমরা ক্যান্সার এর লক্ষন এবং ক্যান্সার কেন হয়? সেই সম্পর্কে জানতে চলেছি বিস্তারিত এই পোস্টের মাধ্যেমে।

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন যে ক্যান্সার বা কর্কটরোগ অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগসমূহের সমষ্টি। আর বর্তমানে প্রেক্ষাপটে রোগে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুর হার অনেক বেশি পরিমানে রয়েছে। আর এই অধিক মৃত্যের কারণ হিসাবে বলা যায় যে প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার রোগটি সহজে ধরা পড়ে না।

আর সত্যি কথা বলতে গেলে কি এখন পর্যন্ত ক্যান্সারের চিকিৎসায় পুরোপুরি কার্যকর কোনও ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি, যা দিয়ে এই রোগ থেকে পুরোপুরি নিস্তার লাভ করা যাবে। তবে আমাদের বিশ্বে ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় বের করার জন্য বিজ্ঞানীরা উঠে পড়ে লেগেছে এবং অনেক সাফল্য লাভ করেছেন তারা। আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে জানতে পারবেন ক্যান্সার এর লক্ষণ কি কি এবং কেন ক্যান্সার হয়? ক্যান্সার রোগ থেকে মুক্তি  উপায় কি কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।

    ক্যান্সার কী ?

    ক্যান্সার কী

    ক্যান্সার সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পূর্বে আমাদের উচিত হবে ক্যান্সার টা আসলে কি সেটা জেনে নেওয়া। আপনারা জেনে রাখুন যে প্রাণি দেহের কোষগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায়। আর যেই সমস্ত কোষ মারা গিয়েছে তাদের সেই জায়গা গুলোর অভাব পুরন করার জন্যে নতুন নতুন কোষের সৃষ্টি হয়ে থাকে।

     আমরা জানি যে প্রতিটি জিনিস একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে সংগঠিত হয়ে থাকে। আর ঠিক সেই রকমই প্রাণিদেহে কোষগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং সঠিক প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়। আর যদি কোনও কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে এই কোষ গুলো বাড়তে থাকে ঠিক তখনই ত্বকের নিচে কিছু মাংসের দলা অথবা চাকার মতো দেখা যায়, যাকে টিউমার বলে।  এই টিউমার বিনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে। ম্যালিগন্যান্ট টিউমারকেই ক্যান্সার বলে।

    ক্যান্সার কেন হয়?

    আপনার উপরের ক্যান্সার কি সেখানে জেনেছেন যে ক্যান্সার কি এবং কিসের কারনে বা মাধ্যেমে ক্যান্সার হয়। এখন আমরা এই পর্যায়ে জেনে নিবো যে ক্যান্সার কেন হয় সেটি সম্পর্কে। এছাড়াও আপনারা যারা জানেন না তাদের জন্য বলে রাখছি যে এই ক্যান্সার কোন সংক্রামক রোগ নয়। ডিএনএ মিউটেশন বা রুপান্তর ক্যান্সার সৃষ্টির প্রধান কারণ।

    তবে এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি যে কেন বা কি কারনে এটি হয়ে থাকে। তবে আমরা বলতে পারি যে এই স্বাভাবিক কোষবিভাজন যখন অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করে ধারনা করা হয় তখনই এই রোগ টি দেহে আঘাত বাসা বাধে।

    আর এই ক্যান্সার হওয়ার কারন হিসাবে বিশেষ কিছু মাধ্যমকে চিহ্নিত করা হয়েছে যেমন ধরুনঃ
    • ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান, 
    • হরমোন
    • তেজস্ক্রিয়তা 
    • পেশা
    • অভ্যাস (ধূমপান, তামাক সেবন, মদপান ইত্যাদি)
    • আঘাত
    • প্রজনন ও বিকৃত যৌন আচরণ
    • বায়ু ও পানি দূষণ
    • খাদ্য (যেমন- অত্যধিক চর্বি বা অধিক চর্বিযুক্ত খাদ্য)
    • বিভিন্ন বর্ণগত, জীবন যাপন পদ্ধতিগত
    •  ভৌগোলিক ও পরিবেশগত প্রভাব
    • প্যারাসাইট ও ভাইরাস সাধারণত সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত ক্যান্সার সৃষ্টির কারণ।
    তবে এর প্রায় ৯০ শতাংশই এড়িয়ে চলা সম্ভব এবং ক্যান্সার থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব।


    কলার উৎস অনুসারে ক্যান্সারের প্রকারভেদ সমূহ

    ক্যান্সারের প্রকারভেদ সমূহ

     ১। কারসিনোমা

    আপনাদের উদ্দেশ্য বলে রাখা ভাল যে কারসিনোমা খুব সাধারণ ধরনের একটি ক্যান্সার। আর এই ক্যান্সার প্রাণি দেহের ফুসফুস, মলদ্বার, স্তন এবং ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার এর অন্তর্ভুক্ত।

    ২। সারকোমা

    এখন আমরা জেনে নিবো যে সারকোমা ক্যান্সার কাকে বলে সেই সম্পর্কে। সাধারণত হাড়ের, কশেরুকা, চর্বি বা মাংসপেশির ক্যান্সারকে সার্কোমা বলে।

    ৩। লিম্ফোমা

    আমাদের সারা শরীর জুড়ে লিম্ফ নোড ছড়ানো রয়েছে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এই লিম্ফ নোডের সাথে জড়িত। আর এই লিম্ফ নোডের ক্যান্সারকেই লিম্ফোমা বলে।

    ৪। লিউকেমিয়া

    আপনারা যারা জানেন না যে লিউকোমিয়া ক্যান্সার কাকে বলে তাদের জন্যে বলছি যে রক্ত কোষের ক্যান্সারকেই লিউকেমিয়া বলে। এই রক্তকোষগুলো হাড়ের মজ্জা থেকে জন্ম নেয়।

    ক্যান্সার হবার কারণ

    এখন পর্যন্ত সঠিক ভাবে বলা যায় না যে কি কারণে ক্যান্সার হয় সেটা সম্পর্কে তেমন কেউই নিশ্চিত নয়। তবে সাধারণ কিছু কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে।

    ক্যান্সার হবার বয়স

    মানুষের বয়সের সাথে সাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। আর যখন রোগ প্রতিরোধরে ক্ষমতা কমতে শুরু করে ঠিক তখনই বিভিন রোগ জীবাণু শরীরে বাসা বাধতে শুরু করে। সাধারণত বয়স যত বাড়তে থাকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও তত বাড়তে থাকে।

    কারণ এ সময়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। প্রাথমিক ভাবে দেখা গিয়েছে যে যত মানুষই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তাদের শতকরা ৭০ ভাগেরই বয়স ৬০ বছরের ওপর।

    খাবার এবং জীবনযাপনের ধারা

    আমাদের প্রতিনিয়ত জীবন যাপনের ধরন পরিবর্তন হচ্ছে সময়ে সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে। আর তাই  খাবার এবং জীবনযাপনের ধারার সাথে ক্যান্সারের গভীর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছে একদল গবেষকরা। যেমন ধরুনঃ ধূমপান বা মদ্যপানের সাথে ফুসফুস, মুখ ও কণ্ঠনালীর এবং যকৃৎ বা লিভারের ক্যান্সারের যোগাযোগ রয়েছে। 

    তেমনই ভাবে পান-সুপারি, জর্দা, মাংস, অতিরিক্ত লবণ, চিনি ইত্যাদি খাবারের সাথেও ক্যান্সারের যোগসূত্র রয়েছে। এছাড়াও আমরা দিনে দিনে জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের কারনে শারীরিক পরিশ্রম করতেই চায়না। যারা শারীরিক পরিশ্রম কম করে তাদের মধ্যেও ক্যান্সারের প্রবণতাটা অনেক বেশি রয়েছে।

    পারিবারিক ইতিহাস

    জেনেটিক ভাবে আমরা আমাদের পরিবার থেকেই কিছু আচরন বিধি থেকে শুরু করে রোগ জীবাণুর মতো ভয়ংকর কিছু জিনিস পেয়ে থাকি। ঠিক তেমনি ক্যান্সার হচ্ছে একটি রোগ যা কিনা বংশগত ভাবেও হয়ে থাকে। ক্যান্সারের সাথে জিনগত সম্পর্ক রয়েছে বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই কারণে পরিবারের কারো যদি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা থাকে তাহলে অন্যদেরও ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়।

    পরিবেশ এবং পেশাগত কারণ

    • আমরা জানি যে রাসায়নিক পদার্থের সাথে ক্যান্সারের অনেক বড় একটা সম্পর্ক রয়েছে। যেমন, জমেসোথেলিওমিয়া-তে (এক ধরনের দূর্লভ ক্যান্সার, এতে ফুসফুসের চারপাশ এবং পেটের দিকের কোষগুলো আক্রান্ত হয়) আক্রান্তদের ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই এসবেস্টস ধাতুর সংস্পর্শে আসার কারণে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। 
    • আমাদের ভেতরে যারা সাধারণত জাহাজ তৈরির শিল্পের সাথে যারা জড়িত তাদের এই ধাতুর সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনাটা বেশি থাকে। এই কারণেই অনেক দেশে এই ধাতুর ব্যবহার নিষিদ্ধ।
    •  এছাড়াও আপনারা যারা বিভিন্ন রঙের কারখানা, রাবার বা গ্যাসের কাজে্র সাথে নিয়োজিত তারা এক ধরনের বিশেষ রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসার কারণে মুত্রথলির ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। 
    • রাসায়নিক পদার্থের কারনে মানুষের এই ধরনের সমস্যার কারনে বিভিন্ন দেশে রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারও নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।
    • পরিবেশগত কারণেও কিন্তু ক্যান্সার হতে পারে আর এর ভেতরে অন্যতম একটা মাধ্যম হচ্ছে সূর্য। রোদে বেশিক্ষণ থাকার কারণে ত্বকের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তেজস্ক্রিয়তার কারণেও বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে প্রতিটি পদক্ষেপের ক্ষেত্রে।

    ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণ

    ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণ

    বর্তমানে মানুষ অধিক হারে ক্যান্সারের মতো মরণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। মানবদেহে যে সকল স্থানে ক্যান্সার ধরা পড়েছে তা হল প্রস্টেট গ্রন্থি, স্তন, জরায়ু, অগ্ন্যাশয়, রক্তের ক্যান্সার, চামড়ায় ক্যান্সার ইত্যাদি। ক্যান্সারের প্রকার ভেদের তার লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। 

    তবে ক্যান্সারের সাধারণ কিছু লক্ষণ হচ্ছে:
    • খুব ক্লান্ত বোধ করা
    • ক্ষুধা কমে যাওয়া
    • শরীরের যে কোনজায়গায় চাকা বা দলা দেখা দেয়া
    • দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা গলা ভাঙা
    • মলত্যাগে পরিবর্তন আসা (ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা মলের সাথে রক্ত যাওয়া)
    • জ্বর, রাতে ঠান্ডা লাগা বা ঘেমে যাওয়া
    • অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমা
    • অস্বাভাবিক রক্তপাত হওয়া
    • ত্বকের পরিবর্তন দেখা যাওয়া
    • মানসিক অস্বস্তি[৪]
    • ক্যান্সারের চিকিৎসা
    • ক্যান্সারের চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
    উপরের লক্ষণ গুলো নিজের দেহের ভেতরে দেখলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না। এতে করে নিজেকে সেভ রাখা যায় অনেকাংশেই এই ক্যান্সার নামক মরণ ব্যাধি থেকে।

    অস্ত্রোপচার

    আপনার শরীরের যেই জায়গাতে ক্যান্সারের কোষ গুলো বাসা বেধেছে সেই কোষগুলোকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে সরিয়ে ফেলা হয়। ক্যান্সার যদি অল্প একটু জায়গা জুড়ে থাকে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলে এ ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়। এটির মাধ্যেমে বেশ ভাল ভাবেই রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব হয়।

    রেডিওথেরাপি

    আপনারা যারা এই রেডিওথেরাপি সম্পর্কে জানে না তাদের জন্যে বলছি যে নিয়ন্ত্রিতভাবে শরীরের অংশবিশেষে তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রয়োগ করে সেই জায়গার কোষগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হয়।

    কেমোথেরাপি

    এই ব্যবস্থায় ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করতে অ্যান্টি-ক্যান্সার (সাইটোটক্সিক) ড্রাগস বা ওষুধ ব্যবহার করা হয়। ৫০টিরও বেশি ধরনের কেমিওথেরাপি ওষুধ রয়েছে। এগুলোর কোনকোনটা ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল হিসেবে খেতে হয়।

    কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ওষুধগুলোকে স্যালাইনের সাথে বা অন্য কোনভাবে সরাসরি রক্তে দিয়ে দেয়া হয়। রক্তের সাথে মিশে এই ওষুধগুলো শরীরের যেখানে যেখানে ক্যান্সার কোষ রয়েছে সেখানে গিয়ে ক্যান্সার কোষগুলোকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে।

    হরমোন থেরাপি

    ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের শরীরের কিছু হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন করার মাধ্যমে এই চিকিৎসা করা হয়। শরীরের বৃদ্ধির সাথে হরমোনের একটা সম্পর্ক রয়েছে। কোন কোন ক্যান্সার এই হরমোনের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়। ফলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি কমিয়ে ক্যান্সারকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে এই ধরনের হরমোন থেরাপি ব্যবহৃত হয়।

    সহায়ক চিকিৎসা

    আপনারা জেনে খুশি হবে যে ক্যান্সারের শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীদের মানসিক চিকিৎসার ব্যাপারে এখন জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর রোগীরা বেশ মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং সারাক্ষণ ভয়ে থাকেন। আর অনেক সময় দেখা যায় অতিরিক্ত ভয়ের কারনে অনেক  রোগী অসুস্থ হয়ে দ্রুত মারা যাওয়া মতো ঘটনাও ঘটে থাকে।

    এর পাশাপাশি যোগ, মেডিটেশন ইত্যাদির মাধ্যমেও রোগীদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার শিক্ষা দেয়া হয়। এছাড়া নিজের মনকে সুস্থ রাখতে যেকোন সামাজিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা যেতে পারে।

    অন্যান্য চিকিৎসা

    শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করে তোলে এ ধরনের ওষুধ তৈরির ব্যাপারে এখন গবেষণা চলছে। এছাড়াও ক্যান্সারের ভ্যাকসিন তৈরির ব্যাপারে চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখনো এগুলো একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

    ক্যান্সার প্রতিরোধ

    আমাদের যেকোন রোগ থেকে পরিত্রান পেতে হলে নিজেদের জীবন যাপনের ধরনের অনেক পরিবর্তন আনা গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। কেননা বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত কিছু ব্যাপার মেনে চললে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকখানি কমানো যায়। যেমন:

    ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্যায়াম এর গুরুত্ব

    নিয়মিত ভাবে যদি কেউ ব্যায়াম করে তাহলে সেই ব্যক্তি অনেক ধরনের রোগ থেকে নিজেকে সুরক্ষা দিতে পারে আর ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্যায়াম করা অত্যান্ত গুরুত্ব পূর্ণ একটি ট্রিটমেন্ট হিসাবে কাজ করে।

    ক্যান্সার প্রতিরোধে খাদ্যভ্যাসের পরিবর্তন

    ক্যান্সার সহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে খাদ্যভ্যাসের দিকে নজর রাখা অন্ত্যান্ত জরুরী। ধূমপান বা মদ্যপান ছেড়ে দেয়া বা পরিমাণ কমিয়ে আনা। পান-সুপারি জর্দা, তামাকপাতা খাওয়া বন্ধ করা। চর্বিজাতীয় পদার্থ কম খাওয়া । প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি, ফলমূল এবং আঁশজাতীয় খাবার খাওয়া।

    সচেতনতা

    নিজেদের শরীরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে এবং পারলে নিয়মিত ডাক্তার দেখানো যেকোন শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করলে। আর যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে শরীরে কোন অস্বাভাবিকতা দেখা দিলেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া। ৫০ বছরের বেশি বয়স হলে অবশ্যই নিয়মিত ডাক্তারের কাছে গিয়ে শরীর পরীক্ষা করানো।

    ক্যান্সারের পরিভাষা ও নামের উৎস

    ক্যান্সারের পরিভাষা ও নামের উৎস
    • হাইপারপ্লাসিয়া (hyperplasia) =কলায় কোষের সংখ্যাধিক্য (হাইপার= অধিক, ~প্লাসিয়া= মোটামুটিভাবে কলায় কোষের সংখ্যাবৃদ্ধি বা কোষীয় বৈশিষ্ট্য)
    • মেটাপ্লাসিয়া (metaplasia= একরকম কলার অন্যরকম কলায় পরিবর্তন
    • টিউমার (Tumor, অর্বুদ)= স্ফীতি (গ্রিক ভাষায়)। পূর্বে প্রদাহ জনিত স্ফীতিকেও টিউমার বলা হত। তবে এখন টিউমার বলতে নিওপ্লাসিয়া বোঝায়।
    • (সাধারণতঃ সব টিউমরের নামের শেষে ~ওমা অনুসর্গ থাকে, যেমন (মেলানোমা, লাইপোমা), ও শুরুর অংশে কলার উৎস সম্বন্ধে নির্দেশ থাকে।)

    • নিওপ্লাসিয়া (neoplasia)= অনিয়ন্ত্রিতভাবে বর্ধনশীল কলা (নিয়ো~ = নতুন)
    • হ্যামারটোমা (Hamartoma = কলার কোষগুলি এককভাবে স্থানীয় বিশেষীভবন লাভ করলেও সমবদ্ধভাবে কলার ত্রিমাতৃক স্থাপত্য সঠিকভাবে দেওয়ার বদলে জট পাকিয়ে যায়। (অর্থাৎ কোষীয় সংখাবৃদ্ধি খুব একটা অনিয়ন্ত্রিত না হলেও কলাসংগঠন অনিয়ন্ত্রিত)
    • ম্যালিগন্যান্ট টিউমার (malignant) = অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজনক্ষম এবং ভেদন ক্ষমতাযুক্ত টিউমার = ক্যান্সার
    • ক্যান্সার মানে কাঁকড়া (সংস্কৃত কর্কট)। স্থানীয় কলা ভেদ করে ম্যালিগ্ন্যান্ট টিউমর যখন অনেক শুঁড়ের মত মাইক্রোমেটাস্টাসিস সম্প্রসারিত করে তখন তাকে দেখতে অনেকটা দাঁড়া-ওয়ালা কাঁকড়ার মত দেখায়।
    • অ্যানাপ্লাসিয়া (anaplasia) = কলার অপ-বিশেষীভবন (ডি-ডিফারেন্সিয়েশন), অর্থাৎ কলা আগের বিশেষীভূত কলা-বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ভ্রুণীয় বা প্রাক-কলার মত আচরণ করতে থাকে। অ্যানাপ্লাস্টিক অর্থাৎ অ্যানাপ্লাসিয়া-যুক্ত ক্যান্সার সাধারাণতঃ বেশি ক্ষতিকর।
    • কারসিনোমা = আবরণি কলা (Epitheilum) উৎসের ক্যান্সার
    • সারকোমা = সংযোগ কলা (মেসেনকাইম) উৎসের ক্যান্সার

    উপসংহারঃ

    আশা করি আপনাদের ক্যান্সারের লক্ষণ এবং ক্যান্সার কেন হয় এই বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূণ বুঝাতে পেরেছি। আপনারা যারা আমাদের এই পোস্টটি মনযোগ সহকারে পুরোটা পড়েছেন তাদের কাছে ক্যান্সার কেন হয়, ক্যান্সার কি, ক্যান্সার এর লক্ষণ, ক্যান্সার হলে করণীয় কি, ক্যান্সার কিভাবে হয়, ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় কি কি এই সমস্ত সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন আমাদের এই পোস্টের ভেতরে।

    আর এই ধরনের আরো পোস্ট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং টুইটারে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন। তাহলে নতুন নতুন পোস্ট পাবলিশের সাথে সাথে আপডেট পেয়ে যাবেন খুব সহজেই ধন্যবাদ সবাইকে।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ