গরম পানির উপকারিতা ও অপকারিতা

গরম পানির উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা সকলেই জানি যে বিশুধ পানির অপর নাম হচ্ছে জীবন। কেননা আমাদের দেহের ৩ ভাগের দুই ভাগ পানি এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন আট থেকে দশ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। আর আপনি চাইলে এক্ষেত্রে হালকা কুসুম গরম পানি খেতে পারেন। 

এতে করে আপনার শরীর সুস্থ, সতেজ ও চাঙ্গা থাকবে। বিশেষ করে শীতকালে হালকা গরম পানি পান করলে উপকার তো পাবেনই, পাশপাশি বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানেও কার্যকরী ভূমিকা লক্ষ্য করতে পাবেন।  

    গরম পানির উপকারিতাঃ 

    আমাদের অনেকের মাঝেই ভুল ধারনা রয়েছে যে গরম পানি খেলে শরীর শুকিয়ে যায় ইত্যাদি নানা ধরনের গুজব। আপনারা যারা এমনটা ভেবে থাকেন, তাদের উদ্দেশ্য বলছি যে একদল জাপানি চিকিৎসক নিশ্চিত করেছেন যে কয়েকটি স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে গরম পানি ১০০% কার্যকর। 

    আরও পড়ুনঃ থাইরয়েড সমস্যা কি? | থাইরয়েড কমানোর উপায়

    চলুন তাহলে সল্প পরিশরে জেনে নেওয়া যাক, যেসব শারীরিক সমস্যায় গরম পানি খেলে উপকার পাওয়া যায় সেগুলো হলোঃ

    1. মাইগ্রেন
    2. উচ্চ রক্তচাপ
    3. নিম্ন রক্তচাপ
    4. জয়েন্ট এর ব্যথা
    5. হঠাৎ হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি এবং হ্রাস
    6. কোলেস্টেরলের মাত্রা 
    7. কাশি
    8. শারীরিক অস্বস্তি
    9. গাটের ব্যথা
    10. হাঁপানি
    11. শিরায় বাধা
    12. জরায়ু ও মূত্র সম্পর্কিত রোগ
    13. পেটের সমস্যা
    14. ক্ষুধার সমস্যা 
    15. মাথা ব্যথা

    কীভাবে গরম পানি পান করবেন? 

    আমরা যদি গরম পানি খাওয়ার উপকারিতার কথা মাথায় রেখে নিয়মিত রাত ১০-১১টার মধ্যে ঘুমিয়ে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে যেতে পারি এবং খালি পেটে প্রায় ২ গ্লাস গরম পানি পান করতে পারি তাহলে গরম পানির অনেক উপকারিতা পেতে পারি।

    আপনারা প্রথম পর্যায়ে কিন্তু ২ গ্লাস পানি পান করতে সক্ষম নাও হতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে  আস্তে আস্তে পানি পান করতে পারেন। কিছুদিন নিয়মিত রুটিন মাপিক এই ভাবে চলতে থাকলে দেখবেন অভ্যাস হয়ে গেছে। সকালে উঠে গরম পানি পান করতে আপনার আর কোন সমস্যা হচ্ছে না।

    বিঃদ্রঃ: আপনাদের উদ্দেশ্য বলে রাখছি যে গরম পানি পান করার পরে ৪৫ মিনিট এর মধ্যে ভারি কোনো কিছুই খাওয়া যাবে না। গরম পানির থেরাপি যুক্তি সঙ্গত সময়ের মধ্যে যে সমস্ত স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির সমাধান করবে, নিম্নে তা উল্লেখ করা হলোঃ

    • আপনার যদি ডায়াবেটি থাকে তাহলে ৩০ দিনের মধ্যে ডায়াবেটিস নিরাময়ের কাজ করবে।
    • অনেকের রক্তচাপের মতো সমস্যা থাকে তাদের ৩০ দিনের মধ্যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে।
    • আপনারা যারা পেটের ব্যাথার মতো বিভিন্ন সমস্যায় ভুগেন নিয়মিত গরম পানি পান করলে আশা করছি ১০ দিনের মধ্যে পেটের সমস্যার সমাধান পেতে পারেন।
    • দেহের চাহিদা অনুযায়ী নিয়মিত পানি পান করলে ০৯ মাসের মধ্যে সমস্ত ধরণের ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় মিলবে।
    • ০৬ মাসের মধ্যে শিরার বাধার সমস্যা 
    • খাবার খাওয়া নিয়ে যাদের সমস্যায় ভুগেন ১০ দিনের মধ্যে ক্ষুধা জাতীয় সমস্যার সমাধান পেতে পারেন।
    • যারা জরায়ু এবং এর সম্পর্কিত রোগগুলির মতো সমস্যায় রয়েছেন তারা গরম পানি পান করার পাশাপাশি গরম পানির শেক দিতে পারেন।
    • আপনারা যারা নাক, কান এবং গলার সমস্যা ভুগছেন তারা চাইলে গরম পানি পান এবং শেক দিতে পারেন।
    • মহিলাদের অনেক গোপন সমস্যা গুলোর নিয়মিত পানি পান করার মাধ্যমে উপকার পেতে পারেন।
    • হৃদরোগ জাতীয় সমস্যার সমাধান হতে পারে নিয়মিত পানি পান করার ফলে।
    • মাথা ব্যাথা / মাইগ্রেন সমস্যার মতো সমস্যা গুলো ভাল হয়ে যেতে পারে।
    • আপনাদের মধ্যে যাদের কোলেস্টেরল সমস্যা রয়েছে তারা চাইলে নিয়মিত গরম পানি পান করে তাঁর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।

    ঠান্ডা পানির অপকারিতা

    আপনারা যারা ঠান্ডা পানি পান করতে বেশি পছন্দ করেন তাদের জন্য বলে রাখা ভাল যে আমাদের শরীরের জন্য অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি ক্ষতির কারন হতে পারে। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক ঠান্ডা পানি অপকারিতা সম্পর্কে।
    • আপনারা যারা ঠান্ডা পানি পান করেন বা ঠান্ডা পানি খাওয়া যাদের অভ্যাস রয়েছে তাদের জন্য এই ঠান্ডা পানি পান করা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে! যদি অল্প বয়সে ঠাণ্ডা পানি প্রভাবিত না করে, তবে এটি বৃদ্ধ বয়সে ক্ষতি করবেই। 
    • ঠান্ডা পানি হার্টের ৪টি শিরা বন্ধ করে দেয় এবং হার্ট অ্যাটাকের কারণ হয়।  হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ হ'ল কোল্ড ড্রিঙ্কস।
    • এটি লিভারেও সমস্যা তৈরি করে। এটি লিভারের সাথে ফ্যাট আটকে রাখে। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের অপেক্ষায় থাকা বেশিরভাগ মানুষ ঠান্ডা পানি পান করার কারণে এর শিকার হয়েছেন।
    • ঠান্ডা পানি পেটের অভ্যন্তরীণ দেয়ালকে প্রভাবিত করে। এটি বৃহত অন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং ফলস্বরূপ ক্যান্সারে রুপ নেয়।

    শীতে গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা

    আপনারা ইতিমধ্যে জেনেই গিয়েছেন যে শীত কিংবা গ্রীষ্মে গরম পানি খাওয়ার কোনো অপকারিতা নেই। বরং গরম পানিতে রয়েছে নানা ধরনের উপকারিতা। তবে অবশ্যই আরেকটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে অতিরিক্ত বেশি গরম পানি খাওয়া যাবে না। শুধুমাত্র হালকা গরম পানিতেই শরীরে ক্ষতি না হয়ে মিলবে হাজারো উপকারিতা।

    ডায়েটেশিয়ানদের মতে, নিয়মিত হালকা গরম পানি খাওয়ার অভ্যাসে মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়, ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ে, হজম শক্তি বাড়ে, বুকব্যথা এবং সর্দি-কাশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। বন্ধ নাক খুলে যায়। 

    প্রাকৃতিক উপায়ে শরীর পরিষ্কার করে বিষাক্ত টক্সিন বের করতেও ভালো কাজে আসে হালকা গরম পানি খাওয়ার অভ্যাসে। এতে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং ত্বকে বয়সের ছাপ কিংবা বলিরেখা সহজে পরে না।

    শেষকথাঃ গরম পানির উপকারিতা ও অপকারিতা

    আপনারা চাইলে কিন্তু আপনাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে এই তথ্যগুলো শেয়ার করতে পারেন। এতে করে আপনার পাশাপাশি তারাও উপকারিত হবে আপনার মাধ্যেমে এই তথ্য গুলো জানার মাধ্যেমে।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ