রমজানের পবিত্রতা নিয়ে উক্তি বা রোজা নিয়ে কিছু কথা

রমজানের পবিত্রতা নিয়ে উক্তি বা রোজা নিয়ে কিছু কথা

মুসলিম ভাই বোনেরা আমরা সকলেই জানি যে রমজান মাস হচ্ছে পবিত্রার মাস এবং রহমতের মাস। আর তাই আজকে আমরা আপনাদের জন্য রমজানের পবিত্রতা নিয়ে উক্তি বা রোজা নিয়ে কিছু কথা তুলে ধরবো এই পোস্টের মাধ্যমে।

যাতে করে আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে রমজানের পবিত্রতা অনেকের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় সেটির জন্য। এতে করে আমাদের মাঝে যারা এই সম্পর্কে তেমন ভাল তথ্য জানেন না তাদের জন্য অনেক সহযোগী বা সহায়ক হয় আমাদের এই রমজানের পবিত্রতা নিয়ে উক্তি বা রোজা নিয়ে কিছু কথা গুলো।

আপনি যদি রমজানের পবিত্রতা নিয়ে আপনার ফেসবুক বা অন্য যেকোন সোশ্যাল প্রোফাইলে শেয়ার করতে চান তাহলে আপনি আমাদের ওয়েবসাইট থেকে সহজেই এই পোস্টটি শেয়ার করে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন। 

এতে করে আপনি নিজেও সেই সওয়াবের অংশীদারী হতে পারেন। কেননা আপনার মাধ্যমে অনেকেই আমল করতে পারে যেটা আমাদের অজান্তেই ঘটতে থাকবে আল্লাহ তায়ালা রমজানের পবিত্রতা নিয়ে উক্তি বা রোজা নিয়ে কিছু কথা বলার জন্য সেখানে আমরাও উপকারী হবো।

    রোজা মানে কি

    সহজ কথায় রোজার মানে বলতে গেলে যেভাবে বলা যায় তা হচ্ছে যে, এর অর্থ হল আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সম্পূর্ণভাবে খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন আল্লাহ তা'য়ালাকে খুশি করার জন্য। 

    এটি সাধারণত সুবেহ সাদিক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত ১৪ থেকে ১৬ ঘন্টা স্থায়ী হয় এবং রোজার রাখার সকল নিয়ম কানুন মেনেই আপনাকে অনাহারে থাকতে হয় একটি নিদির্ষ্ট সময় পর্যন্ত।

    আরও পড়ুনঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম / শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত

    রোজা সম্পর্কে স্ট্যাটাস । রোজা নিয়ে কিছু উক্তি

    আমরা এখন এই পর্যায়ে রোজা সম্পর্কে স্ট্যাটাস বা রোজা নিয়ে কিছু উক্তি, কথা গুলো সম্পর্কে জানবো। যাতে করে আমরা সঠিক ভাবে রমজানের পবিত্রতা ধরে রাখতে পারি। তাই চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক রোজা নিয়ে কিছু কথাঃ

    • হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর । যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার। ( আল কুরআন) 
    •  রোজা, নামাজ এবং বাকি সকল ইবাদতগুলো মানুষকে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী করে তোলে। (জোসেপ বি উরলিন) 
    • রোজা এই চেতনা আমাদের সবার হৃদয়ে থাকুক এবং আমাদের আত্মাকে ভিতর থেকে আলোকিত করুক। ( মনিকা জনসন)
    • রোজার একটি অন্যতম ফজিলত হলো রোজার মাধ্যমে আচার-আচরণ ও চরিত্র সুন্দর হয়। ( আল হাদিস) 
    • নামাজ পড়ো, রোজা রাখ, কলমা পড় ভাই,তোর আখেরের কাজ করে নে সময় যে আর নাই । (কাজী নজ্রুল ইসলাম)
    •  প্রতিটি রোজাদার বান্দার মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশকের চেয়ে বেশী ঘ্রানযুক্ত। ( আল হাদিস)
    • রোজার মাস শুরু হলে জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। (আল হাদিস)
    • প্রতিটি রোজাদার বান্দাকে আল্লাহ তায়ালা নিজ হাতে তাদের পুরস্কার তুলে দিবেন। (আল হাদিস)
    •  জাহান্নাম থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য মানুষের সবথেকে বড় ঢাল হলো রোজা। (আল হাদিস)
    • রোজা হলো আত্মসংযম যা আমাদেরকে সকল মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। ( আল হাদিস)
    • রোজার সবথেকে সুন্দর বাহ্যিক দিক হচ্ছে, নিজেকে সংযত রাখা। সুন্দর আচার-আচারণ ও সুন্দর চরিত্র গঠন হয়। বানীঃ আল হাদিস।
    • আল্লাহ এবং তার বান্দাদের মধ্যে সবচেয়ে মধুর সম্পর্ক হয় পবিত্র রমজান মাসে। (আল হাদিস)
    • নিজেদেরকে আত্মশুদ্ধি করার অন্যতম সময় রমজান মাস। যে পারল সে ধন্য। (আল হাদিস)
    • রিজিকের একমাত্র মালিক আল্লাহ তায়ালা, এটি স্মরণ করে দেয় আমাদেরকে পবিত্র মাহে রমজান।(আল হাদিস থেকে)

    রমজানের পবিত্রতা নিয়ে উক্তি

    আমরা সকলেই জানি যে রমজান মাস হচ্ছে আত্মশুদ্ধির মাস। এই রমজান মাসের পবিত্রতা বলে শেষ করার মতো না। রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা তাঁর রহমতের দরজা খুলে দেন। তাই এই পবিত্র মাসে আমাদের অনেক বেশি বেশি আমল করতে হবে।

    আমাদের আজকের পোস্টের মাধ্যমে রমজানের পবিত্রতা নিয়ে কিছু উক্তি তুলে ধরবো আপনাদের মাঝে, যাতে করে রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত জানতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী আমল করতে পারেন।

    তাহলে চলুন আর বেশি দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক রমজানের পবিত্রতা নিয়ে উক্তি গুলো সম্পর্কেঃ

    • রোজা এমন এক মহান আত্মসংযম যা মানুষকে সব রকম মন্দ কাজ থেকে দূরে রাখতে পারে। (আল হাদিস)
    • রোজাদারদের কে ইফতার করালে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়। (আল হাদিস)
    • রমজান মাসের প্রত্যেক রোজায় ইফতারির আগ মুহূর্তে ফেরেশতারা রোজাদারদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে। (আল হাদিস)
    • রোজাদার ব্যক্তিদের জন্য আল্লাহ প্রতিদিন ফেরেশতাদের দিয়ে জান্নাতকে সুন্দর করে সাজান। (আল হাদিস)
    • মানব জাতির পাপ মোচনের জন্য সবথেকে বড় এবং সহজ উপায় হচ্ছে রোজা। (আল হাদিস)
    • একমাত্র রোজা রাখার প্রতিদান আল্লাহ নিজ হাতে তার বান্দাদের দিবেন। (আল হাদিস)
    • রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ কাছে শ্রেষ্ঠ মেশক (অত্যন্ত সু-গন্ধি) এর সমান। (আল হাদিস)
    • রোজা এই চেতনা আমাদের সবার হৃদয়ে থাকুক এবং আমাদের আত্মাকে ভিতর থেকে আলোকিত করুক। (আল হাদিস)
    • রমজান জান্নাতে যাওয়ার উৎকৃষ্টতম উপায় এবং রাইয়ান নামক বিশেষ দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ। (আল হাদিস)

    রোজা সম্পর্কে কুরআনের আয়াত

    আমরা যারা মুসলিম ভাই বোনেরা রয়েছি আশা করি সকলেই জানি যে ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে সিয়াম বা রোজা অন্যতম একটি স্তম্ভ। হাদিসে কুদসীতে আল্লাহ তায়ালা রোজার প্রতিদান নিজ হাতে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
    আর তাই এখন রোজা সম্পর্কে ৪টি কুরআনের আয়াত আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো যাতে করে আপনারা এই বিষয় গুলো সম্পর্কে অবগত থাকেন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক রোজা সম্পর্কে কুরআনের আয়াত গুলো নিয়েঃ

    1. হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্যে সিয়ামের বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া বা আল্লাহ ভীরুতা অবলম্বন করতে পারো। (সূরা বাকারাহ-১৮৩)
    2. সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্যে তোমাদের স্ত্রীদের বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্যে এবং তোমরাও তাদের জন্যে পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা তোমাদের নিজেদের সাথে খিয়ানত করছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের তাওবা কবুল করেছেন এবং তোমাদেরকে মার্জনা করেছেন, সুতরাং এখন তোমরা তাদের সাথে সংগত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্যে যা নির্ধারণ করে রেখেছেন (অর্থাৎ সন্তান) তা অন্বেষণ করো। আর তোমরা আহার করো ও পান করো যতক্ষণ তোমাদের জন্যে (রাত্রির) কালো রেখা থেকে ফজরের সাদা রেখা স্পষ্ট হয়ে যায়। এরপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো। আর তোমরা মসজিদে ই’তিকাফ অবস্থায় তাদের সাথে সংগত হয়ো না। এগুলো আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমা, সুতরাং এর নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ মানুষের জন্যে তার আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা তাকওয়া বা আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করতে পারে। (সূরা বাকারাহ-১৮৭)
    3. রমাজান মাস, এ মাসেই মানুষের জন্য আলোর দিশা এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে এবং কেউ অসুস্থ্য থাকলে কিংবা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্যে যা সহজ তাই চান এবং যা তোমাদের জন্যে কষ্টকর তা চান না, এজন্যে যে তোমাদের সংখ্যা পূর্ণ করবে এবং তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার কারণে তোমরা আল্লাহর মাহিমা ঘোষণা করবে এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো। (সূরা বাকারাহ-১৮৫)
    4.  সিয়াম নির্দিষ্ট কয়েক দিনের। তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে অথবা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূর্ণ করবে। যাদের জন্য অতিশয় কষ্টদায়ক হয় তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদইয়া-একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্যদান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে তবে তা তার পক্ষে অধিক কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্যে অধিকতর কল্যাণকর যদি তোমরা তা জানতে। (সূরা বাকারাহ-১৮৪)
    আপনারা আয়াত গুলো সম্পর্কে আমার মনে হয় সুষ্পষ্ট একটি ধারনা পেয়েছেন আমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে। মনযোগ সহকারে পুরো পোস্টটি পড়ুন আর আমল করার চেষ্টা করুন।

    শেষকথাঃ রমজানের পবিত্রতা নিয়ে উক্তি বা রোজা নিয়ে কিছু কথা

    রমজানের পবিত্রা নিয়ে উক্তি বা রোজা নিয়ে কিছু কথা শুনেই শুধু বসে থাকলে চলবে না। আমাদের নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী সেগুলোর ভেতরে থেকেই আমল করতে হবে আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করার জন্য।

    আমরা যদি সঠিক আমল দ্বারা আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করতে পারি তাহলে আমাদের ইহকাল এবং পরকাল দুটোই আমরা হাসি আনন্দে কাটিয়ে দিতে পারবো। তাই বেশি বেশি আমল করতে হবে সঠিক নিয়ম কানুন মেনে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় সচেতন থাকতে হবে।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ