মৌজা কি? মৌজা কিভাবে বের করবো?

গ্রাম এলাকার সকল মানুষের কাছে পরিচিত নাম মৌজা। কারণ, জমির নকশা করা হয় মৌজা অনুযায়ী। প্রতিটা মৌজার আলাদা আলাদা নকশা থাকে। যাতে করে খুব সহজেই জমির পরিমাণ জানা যায়। এবং কোন জমির আয়তন কি রকম। 

সাধারণত গ্রামকে মৌজা বলা হয়। আজ আমরা জানবো মৌজা কি? মৌজা কিভাবে বের করবো? কিন্তু বর্তমানে এই কাজটি অনেক সহজ হয়েছে। কারণ প্রতিটি এলাকার অনলাইন ম্যাপ তৈরি করা রয়েছে। এতে করে অনেক সুবিধা হয়েছে।

মৌজা কি মৌজা কিভাবে বের করবো

প্রতিটা মানুষের মৌজা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা প্রয়োজন। কারণ, প্রতিটা মানুষের কমবেশি রয়েছে। তাই জমি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে হলে অবশ্যই মজা সম্পর্কে জানতে হবে। এবং মজা কিভাবে বের করা যায় সে সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। 

বর্তমানে অনলাইনে সকল কাজ হওয়ার ফলে অনেক সুবিধা হয়েছে। চলুন জেনে নেই মৌজা কি? মৌজা কিভাবে বের করবো সেই সম্পর্কে:

    মৌজা কি?

    মৌজা শব্দের সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। আমারা সকলেই জানি প্রতিটি গ্রাম একটি করে মৌজা। মৌজা শব্দটি ব্যবহার হয়ে আসছে মোগল আমল থেকে। মুঘল আমলে রাজস্ব আয় এর সর্বনিম্ন এলাকার নাম মৌজা ছিল।

    আরও পড়ুনঃ খাজনা ও খারিজ কি? জমি খারিজ করার পদ্ধতি

    মৌজা শব্দটি রাজস্ব আয়ের একক হিসেবে ব্যবহার করা হতো। কয়েকটি মজা নিয়ে গঠিত হতো পরগনা। বর্তমান সময়ে পরগনা নামটি শোনা যায় না। কিন্তু জমির মানচিত্রের এখনো মজা শব্দের ব্যবহার রয়ে গেছে।

    মৌজা নং কি?

    প্রতিটি গ্রামের আলাদা আলাদা মৌজা রয়েছে। কিছু কিছু সময় মৌজার নাম একই হয়ে থাকে। যার ফলে মৌজার নাম বলে চেনা যায় না। এতে করে অনেক সমস্যা পড়তে হয়। তবে এই সমস্যার সমাধান করেছে মৌজা নং ব্যবহার করে। 

    প্রতিটি মজার নামের শেষে একদিন নম্বর থাকে। প্রতিটি মজার আলাদা আলাদা নাম্বার রয়েছে। এই নাম্বার গুলোকে মৌজা নং বলা হয়।

    বাংলাদেশের মৌজা মানচিত্র কি?

    প্রতিটি স্থানের আলাদা আলাদা মানচিত্র রয়েছে। কারণ মানচিত্রের মাধ্যমে এলাকা পরিমাপ করা যায়। এবং মানচিত্রের মাধ্যমে দিক নির্দেশনা পাওয়া যায়। মানচিত্র অনেক প্রকার হয়ে থাকে। যেমন, দেশ, বিভাগ, জেলা, থানা, ইউনিয়ন ও মৌজা ভিন্ন ভিন্ন মানচিত্র রয়েছে। 

    এই মানচিত্রের মাধ্যমে স্থান নির্ণয় করা যায়। বিশেষ করে প্রয়োজন পড়ে মৌজার কারণ প্রতিটি এলাকার মৌজা ভিন্ন ভিন্ন। এবং মৌজাতেই জমির সঠিক পরিমাণ এবং নকশা থাকে। এতে করে বোঝা যায় কোন জমির পরিমাণ কেমন এবং আয়তন কেমন।

    বাংলাদেশের সকল জমি পরিমাপ করা হয় মৌজা মানচিত্রের মাধ্যমে। কারন মানচিত্র না থাকলে কোন জমি কোন দিকে কতটুকু সেটা পরিমাপ করা অসম্ভব। এবং অনেক সময় দুর্বল লোকের জমি হারিয়ে যাবে। এ কারণে প্রতিটি মৌজার বিভিন্ন নকশা রয়েছে। এই প্রতিটি মৌজার নকশা কে মৌজা মানচিত্র বলা হয়।

    মৌজা ও গ্রামের মধ্যে পার্থক্য কি?

    মৌজা ও গ্রাম সকলের কাছে পরিচিত। আমরা অনেকেই মনে করি মৌজা ও গ্রাম একই। কিন্তু তা না , মৌজা ও গ্রামের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। চলুন জেনে নেই মজা ও গ্রামের মধ্যে পার্থক্য কি?

    মৌজা:

    মৌজা শব্দটি আমাদের কাছে পরিচিত। মৌজা শব্দটি ব্যবহার করা হয় জমির এলাকা নির্ধারণের জন্য। একটি মানুষের বিভিন্ন মৌজায় জমি থাকতে পারে। অনেক সময় দুটি গ্রাম মিলে একটি মৌজা থাকে।

    গ্রাম:

    গ্রাম সম্পর্কে আমাদের সকলেরই ধারণা রয়েছে। গ্রামের এলাকার নির্ধারিত হয় নির্বাচনী এলাকা নির্ণয়ের জন্য। এক গ্রামের মানুষ অন্য গ্রামে বসবাস করলে সে ওই গ্রামের ভোটার হয়ে যায়। একটি গ্রামে একটি মৌজা থাকে। এটি গ্রামের মধ্যে বিভিন্ন ভাগ থাকে।

    মৌজা কিভাবে বের করবো?

    বর্তমান সময়ে দুইভাবে মৌজা বের করা যায়। ১. অফিসিয়াল মাধ্যমে ২. অনলাইনে। অফিসিয়াল মাধ্যমে মৌজা বের করা বর্তমানে জটিল প্রক্রিয়া। কারণ মৌজা বের করতে হলে মৌজা নম্বর জানতে হয়। মৌজা নাম্বার দিয়ে ভূমি অফিসে যোগাযোগ করলে মৌজার নকশা পাওয়া যায়।

    এছাড়াও সহজ ভাবে মাৌজা বের করা যায় ইউনিয়নের নাম উল্লেখ করে। কারণ প্রতিটি ইউনিয়নে মৌজা আলাদা থাকে। বর্তমানে মৌজা বের করতে তেমন সমস্যায় পড়তে হয় না। কারণ অনলাইনের মাধ্যমে বর্তমান সময়ে মৌজা ঘরে বসেই বের করা সম্ভব। 

    বর্তমানে ভূমি মন্ত্রণালয় এর নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে। সেখানে শতভাগ সঠিক তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিনিয়ত তথ্যগুলি হালনাগাদ করা হয়। ভূমি অফিসের ওয়েবসাইট থেকে খুব সহজে প্রতিটা মৌজার মানচিত্র বের করা সম্ভব। https://land.gov.bd/এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খুব সহজে প্রতিটি মৌজার মানচিত্র বের করতে পারবেন।

    আর এস খতিয়ান কত সালে হয়?

    আর. এস. খতিয়ান বা জরিপ করা হয় ১৯৫৬ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত। এই জরিপে জমির মালিকের নাম, জমির বিবরণী, প্রকৃত দখল দার সকল কিছু খতিয়ানভুক্ত করা হয়। আর. এস. খতিয়ান করা হয় সরেজমিনে তদন্ত করে। 

    কারণ জমিদার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এস. এ. জরিপ বা খতিয়ান করা হয়। যাতে অনেক ধরনের ভুল ত্রুটি ছিল। তাই পুনরায় সঠিকভাবে আর. এস. খতিয়ান করা হয়।

    জমির বি আর এস কি?

    জমির বি আর এস একটি খতিয়ানের নাম। যা বর্তমানে কার চলমান রয়েছে। এই খতিয়ান আড়াআড়ি ভাবে প্রিন্ট করা হয়। সকল তথ্য কম্পিউটারের টাইপ করা। তবে এখানে সিটি জরিপ সিল দেওয়া হয় না। তবে দেখতে পুরোপুরি সিটি জরিপের মত।

    আরএস ও বিআরএস এর পার্থক্য:

    আর এস বা রিভিশনাল সার্ভে করা হয়েছিল ১৯৬৬ বা পরবর্তী সময়ের মধ্যে। শুধুমাত্র ১৯৪০ - ১৯৫২ সালে ফরিদপুর ও বরিশালে আর এস খতিয়ান করা হয়। আর এস এস নকশা চেনার উপায় হচ্ছে নকশাতে লেখা থাকবে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতা বলে সাল ১৯৬৬

    বি আর এস নকশার কাজ বর্তমান সময়ে চলমান রয়েছে। নকশা বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত শেষ নকশা। বি আর এস নকশা চেনার জন্য নিচের লেখার দিকে লক্ষ্য করতে হবে। এই নকশার নিচে লেখা থাকে, সরকার কর্তৃক ক্ষমতা বলে সময়কাল ১৯৭০ বা ১৯৯০।

    আর এস ও বি আর এস এর মধ্যে শুধু সময়ের পার্থক্য রয়েছে। এবং খতিয়ানের বাপের কম বেশি রয়েছে। এছাড়া সকল কিছুই ঠিক রয়েছে।

    শেষ কথা: মৌজা কি? মৌজা কিভাবে বের করবো?

    প্রতিটা মানুষের মৌজা সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। কারণ, আমাদের সকলের কম বেশি জমির রয়েছে। এবং জমির বিভিন্ন সময় মাপ করতে হয়। মাপ করার জন্য প্রয়োজন পড়ে জমির মৌজার নকশা। কারণ নকশা ছাড়া কোন জমির দিকনির্দেশনা ঠিক করা যায় না। 

    এজন্য সকলের জেনে থাকা প্রয়োজন কিভাবে মৌজা বের করতে হয়। মৌজা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে খুব সহজে আপনার জমি খুঁজে বের করতে পারবেন। এবং কোন জমির কত আয়তন সেটাও খুব সহজে বের করতে পারবেন। 

    আমার বিশ্বাস মৌজা কি? সে সম্পর্কে ধারণা পেয়েছে। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ