ব্রয়লার মুরগি খেলে কি ক্যান্সার হয়?

বর্তমানে মাংসের অধিকাংশ চাহিদা পূরণ করে থাকে ব্রয়লার মুরগি। মুরগির মাংস খুব সুস্বাদু এবং নরম। এবং অন্য মাংসের তুলনায় দাম কম। ব্রয়লার মুরগি ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে দেড় থেকে দু কেজি ওজন হয়।

ব্রয়লার মুরগি খেলে কি ক্যান্সার হয়

খুব কম সময়ে বড় হওয়ার কারণে ব্রয়লার মুরগি মানব দেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর। ব্রয়লার মুরগি খেলে কি ক্যান্সার হয়? এই প্রশ্ন অনেকেই করে। ব্রয়লার পালনের সময় বিভিন্ন ধরনের মেডিসিন ব্যবহার করা হয়। 

এসব মেডিসিন মানব দেহের উপর অনেক প্রভাব ফেলে। নিম্নে, ব্রয়লার মুরগি খেলে কি ক্যান্সার হয়? বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

    ব্রয়লার মুরগি খেলে কি হয়?

    বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মাংসের চাহিদা পূরণ ব্রয়লার মুরগি। ব্রয়রার মুরগি খুব তাড়াতাড়ি বড় করা হয়। তাড়াতাড়ি বড় করার জন্য হরমোন ব্যবহার করা হয়। এবং কোন ধরনের রোগ যেন আক্রমণ না করতে পারে সে জন্য প্রচুর এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। 

    এসব ব্রয়রার মুরগির শরীরে মজুদ থাকে। এসব মুরগী খাওয়ার ফলে মানুষের শরীরের উপর প্রভাব পড়ে। যা ব্রেনের জন্য খুব ক্ষতিকর। এর ফলে নিউরোলজিক্যাল সমস্যাও হয়ে থাকে।

    মুরগি কি প্রোটিনের ভালো উৎস:

    মানব দেহের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে প্রোটিন। যা আমাদের শারীর শক্তি বৃদ্ধি করে এবং শরীর মজবুত করে। মুরগি প্রোটিনের সবচেয়ে ভালো হচ্ছে। মুরগির মাংস এবং ডিম প্রোটিনের অন্যতম উৎস। তাই প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে মুরগির ডিম ও মাংস খেতে পারেন।

    ব্রয়লার মুরগির পুষ্টি উপাদান:

    ব্রয়লার মুরগি পুষ্টির উপাদান এর ভালো উৎসব। ব্রয়লার মুরগি উচ্চ মানের প্রোটিন, ভিটামিন এবং  খনিজ পদার্থের উৎস। নিম্নে, ১০০ গ্রাম রান্না করা ব্রয়লার মুরগির পুষ্টি উপাদান তুলে ধরা হলো:
    1. ক্যালসিয়াম - ১৬৭ গ্রাম
    2. প্রোটিন - ২৫ গ্রাম
    3. কোলেস্টেরল - ৭০  গ্রাম
    4. ফ্যাট - ৬.৬ গ্রাম

    মুরগির হাড় খেলে কি হয়?

    মুরগির হাড় খেলে কি হয়

    দেশি মুরগির হাড়ে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে। তবে বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষ ব্রয়লার মুরগি খাচ্ছে। বয়লার মুরগিকে প্রচুর হরমোন এবং এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। মুরগির হাড়, সাদা অংশ, হাড়ের মজ্জা, মাথা খাওয়া ঠিক নয়। 


    কারণ মুরগিদের যেসব এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয় সেগুলো সব হাড়ে জমা হয়। যা মানব দেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এছাড়া অনেক সময় হাড় খাওয়ার ফলে পাকস্থলী সমস্যা হয়।

    পোল্ট্রি মুরগি খাওয়া কি ক্ষতিকর:

    পোল্ট্রি মুরগি খাওয়া অনেক ক্ষতিকর। পোল্ট্রি মুরগির দেহে। বিষাক্ত ক্রোমিয়াম থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবুল হোসেন পোল্ট্রি মুরগির উপর গবেষণা করেন। তিনি গবেষণা করে দেখতে পান ১০০০ গ্রাম পোল্ট্রি মুরগির মাংসের ৩৫০ মাইক্রগ্রাম ক্রোমিয়াম রয়েছে।

    পোল্ট্রি মুরগিকে যেসব খাবার দেওয়া হয় সেগুলো হচ্ছে চামড়া শিল্পের বর্জ্য পদার্থ। এইসব বর্জ্য পদার্থই ক্রোমিয়াম রয়েছে। যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

    পোল্ট্রি খাওয়া উচিত নয় কেন?

    পোল্ট্রি মুরগিকে চামড়া শিল্পের বর্জ্য পদার্থ খাওয়ানো হয়। এসব বর্জ্য পদার্থের ক্রোমিয়াম থাকে। যা পোল্ট্রি মুরগির দেহে মজুদ থাকে। এই বর্জ্য পদার্থ ২৯০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সহনীয়। কিন্তু আমরা স্বাধীনতা রান্না করে থাকি ১০০ থেকে ১৫০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায়। 

    পোল্ট্রি খাওয়া উচিত নয় কেন

    যার কারণে পোল্ট্রি মুরগিতে থাকা ক্ষতিকর পদার্থ মজুর থেকে যায়। যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এই পদার্থগুলো মানব দেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর। বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে। এই কারণে পোল্ট্রি মুরগি খাওয়া উচিত।

    ব্রয়লার মুরগি খেলে কি ক্যান্সার হয়?

    ব্রয়লার মুরগি মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ব্রয়লার মুরগিতে মাত্রা অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকে। যা খাওয়ার ফলে মানব দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এর সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও ব্রয়লার মুরগিতে প্রচুর পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া থাকে।

    ব্রয়লার তাড়াতাড়ি বড় করার জন্য চামড়া শিল্পের বজ্র পদার্থ খাওয়ানো হয়। এছাড়াও পশুর পরিমাণ এন্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেয়া হয়। ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ফলে এসব এন্টিবায়োটিক মানব দেহে মজুদ থাকে। যার শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

    ব্রয়লার মুরগি খেলে কি কি সমস্যা হয়?

    ব্রয়লার মুরগি প্রায় সকল মানুষই খেয়ে থাকে। প্রায় সকলেই জানে ব্রয়লার মুরগি মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তবুও মাংসের চাহিদা পূরণের জন্য ব্রয়লার মুরগি খেতে হয়। নিম্নে, ব্রয়লার মুরগি খেলে কি কি সমস্যা হয় তুলে ধরা হলো:
    1. স্মৃতিশক্তি কমে যায়।
    2. যৌন শক্তি কমে যায়।
    3. শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
    4. কম বয়সে মেয়েরা যৌবনপ্রাপ্ত হয়।
    5. শুক্রাণু সংখ্যা কমে যায়।
    6. ক্যান্সারে ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
    7. ডায়াবেটিক্স ও নিউরোলজিক্যাল সমস্যা হয়।
    8. শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়।

    মুরগির চামড়া খাওয়া কি ক্ষতিকর:

    বিজ্ঞানীরা বলেন, মুরগির চামড়া মানব দেহের জন্য অনেক ভালো। তবে অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া যাবেনা। অনেকে মনে করেন মুরগির চামড়া খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। এমনকি হৃদ রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তবে আপনি যদি কম পরিমাণ মুরগি চামড়া খান কোন ক্ষতি নেই।

    ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ভয়াবহতা:

    ব্রয়লার মুরগি মানব দেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর। বয়লার মুরগি খেলে কি কি সমস্যা হয় উপরে তুলে ধরা হয়েছে। ব্রয়লার মুরগির মাংস অল্প বয়সে মেয়েদের উপর প্রচুর প্রভাব ফেলে। নিয়মিত বয়লার মুরগী খাওয়ার ফলে কম বয়সী মেয়েরা যুবতী হয়ে ওঠে।


    কারণ অল্প দিনের মধ্যে মুরগির ওজন বৃদ্ধি করার জন্য হরমোন ব্যবহার করা হয়। সেই হরমোন মুরগির দেহে মজুদ থাকে। ব্রয়লার মুরগির মাংস খাওয়ার ফলে শরীরে হরমোনের প্রভাব পড়ে। যাওয়ার পরে খুব দ্রুত মেয়েরা যৌবনপ্রাপ্ত হয়। এছাড়াও সকল মানুষের জন্য ব্রয়লার মুরগির খাবার ভয়াবহতা রয়েছে।

    ব্রয়লার মুরগির উপকারিতা ও অপকারিতা:

    বর্তমান সময়ে মানুষের কাছে ব্রয়লার মুরগির মাংস অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ অনেক কম দামে ব্রয়লার মুরগি পাওয়া যায়। এজন্য মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরা ব্রয়লার মুরগির মাংস জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে ব্রয়লার মুরগির উপকারিতা অপকারিতা রয়েছে।

    ব্রয়লার মানবদেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর। কারণ ব্রয়লার মুরগিকে প্রচুর পরিমাণ এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা। যা মুরগিতে মজুদ থাকে। এই মাংস খাওয়ার ফলে মানব দেহের উপর এন্টিবায়োটিক প্রচুর প্রভাব ফেলে। এ কারণে মানুষের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা হয়।

    ফার্মের মুরগির ক্ষতিকর দিক:

    ফার্মের মুরগির মাংসে অতিরিক্ত পরিমাণ ক্রোমিয়াম পাওয়া যায়। যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ক্রোমিয়াম রান্না করার পরেও ধ্বংস হয় না। এই কারণে ফার্মের মুরগি শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।ক্রোমিয়াম পদার্থটি শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধি পেলে শরীরের ক্যান্সার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

    এছাড়াও ফার্মের মুরগি খাওয়ার ফলে কম বয়সী মেয়েদের যৌবন আসে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এছাড়াও স্মৃতি শক্তি কমে যায়। মানবদেহের উপর অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে ফার্মের মুরগি খাওয়ার ফলে।

    ব্রয়লারের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান কোনটি?

    বর্তমান সময়ে গ্রাম অঞ্চলে ব্রয়লার মুরগির খামার অনেক গড়ে উঠেছে। কারণ, ব্রয়লার মুরগি পালন করে কম সময়ের মধ্যে অনেক অর্থ উপার্জন করা যায়। এসব মুরগি কর কম এর মধ্যে বড় করার জন্য বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

    তবে ব্রয়লার মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির উপাদান হচ্ছে দানাদার খাদ্য। তবে দানাদার খাদ্য না খাওয়ায়ে মুরগিদের ফিট খাওয়ানো হয়। মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসব ক্ষতিকর পদার্থ না খাওয়ালে কম সময়ের মধ্যে মুরগি বড় হবে না। এসব কারণে ক্ষতিকর খাদ্য খাওয়ানো হয়।

    শেষ কথা: ব্রয়লার মুরগি খেলে কি ক্যান্সার হয়?

    ব্রয়লার মুরগি মানব দেহের জন্য বিষের মত। শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গের উপর প্রভাব পড়ে ব্রয়লার মুরগির খাওয়ার ফলে। ব্রয়লার মুরগি খেলে কি ক্যান্সার হয়? অনেকেই জানতে চাই। ব্রয়লার মুরগি খেলে সরাসরি ক্যান্সার হয় না। 

    তবে ব্রয়লার খাওয়ার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ