গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা

গ্রামীণ ব্যাংক নামটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। গ্রামীণ ব্যাংক একটি ক্ষুদ্র ঋণদানকারী সংস্থা। এই ব্যাংক নিম্ন শ্রেণীর মানুষদের ঋণ দিয়ে থাকে। এই ব্যাংকটি কোন ধরনের জমানোত ছাড়া ঋণ প্রদান করে থাকে। 

গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা

বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা রয়েছে। যার কারণে গ্রামীণ ব্যাংক সকলের কাছে পরিচিত। গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা অনেক রয়েছে। সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এই ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে কোন ধরনের জামানত রাখতে হয় না। 

এছাড়াও দিনে দিনে টাকা পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের কারণে সাধারণ মানুষগুলো প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে নিম্ন বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

গ্রামীণ ব্যাংক কী?

গ্রামীণ ব্যাংক  বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ব্যাংক। এই ব্যাংকটি বাংলাদেশের নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষদের ঋণ প্রদান করে থাকে। এই ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য পিছিয়ে পড়া মানুষদের আর্থিক সাহায্য  দিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা। কারণ এই ব্যাংকের ঋণ শোধ করা খুব সহজ। 

দিনে দিনে কিস্তির মাধ্যমে সুদ সহ টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ব্যাংকটি বৈধ এবং স্বতন্ত্র হবে কার্যক্রম শুরু করে ১৯৮৩ সালে।

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধানের নাম কি?

গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস। তিনি ১৯৭৬ সালে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত করেন। সেই সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ব্যাংকটি সৎ ভাবে কাজ করে আসছে। বাংলাদেশের একমাত্র নির্ভরযোগ্য ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক।

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস। তবে বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমান গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন। বর্তমানে তার পরিচালনায় গ্রামীণ ব্যাংক এর কার্যক্রম চলছে।

গ্রামীণ ব্যাংক সরকারি কি না?

গ্রামীণ ব্যাংক ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস এর হাত ধরে যাত্রা শুরু করে। গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৬ সালে। সেই সময় গ্রামীণ ব্যাংক মালিকানা ছিল। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের সফলতা দিন দিন বৃদ্ধি পায়। গ্রামীণ ব্যাংকের সফলতা দেখে সরকার এর উপর হস্তক্ষেপ করা শুরু করে।

অনেক প্রচেষ্টার পর বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশ সরকারের অধীনে রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা করে থাকে। তবে গ্রামীণ ব্যাংক সম্পূর্ণ সরকারি না। অনেকেই মনে করে সরকারের অধীনে থাকার ফলে গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গ্রামীণ ব্যাংক প্রথম কোথায় কার্যক্রম শুরু করে?

গ্রামীণ ব্যাংক সর্বপ্রথম যাত্রা শুরু করে ১৯৭৬ সালে। সেই সময় গ্রামের ব্যাংকের প্রধান ছিলেন ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস। গ্রামীণ ব্যাংক যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রাম জোবড়া গ্রামে। 

আ্যাকশন গবেষণা পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের যাত্রা শুরু। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা রয়েছে।

বাংলাদেশ গ্রামীণ ব্যাংকের গুরুত্ব:

গ্রামীণ ব্যাংকের গুরুত্ব বলে শেষ করা যাবে না। কারণ, ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হলে কিছু জামানত রাখতে হয়। নিম্ন শ্রেণীর মানুষেরা ব্যাংকে জামানত রাখতে পারে না যার কারণে ঋণ পায় না। এসব কারণে সাধারণ মানুষগুলো চাইলেও অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করতে পারে না।

তবে গ্রামীণ ব্যাংক এই সমস্যার সমাধান করেছে। তারা শুধু মানুষের কথার উপর ভিত্তি করে কোন জামানত ছাড়াই ঋণ দিয়ে থাকে। যার কারণে সকল শ্রেণীর মানুষ খুব সহজে ঋণ নিতে পারে। 

এছাড়াও এই ব্যাংকের সবচেয়ে বড় সুবিধা কিস্তির মাধ্যমে টাকা শোধ করা। কিস্তির মাধ্যমে টাকা শোধ করলে মূল টাকা ও সুদ দুটাই পরিশোধ হয়ে যায়। যার কারণে সকলে সময় মতো টাকা পরিশোধ করতে পারে।

গ্রামীণ ব্যাংক কত সালে নোবেল পুরস্কার পান?

গ্রামীণ ব্যাংক ও ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার পায়। বাংলাদেশের প্রথম  নোবেল পুরস্কার পায়, ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস। নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় শান্তিতে।

মুহাম্মদ ইউনূস কিসের জন্য বিখ্যাত ছিলেন?

ডঃ মোহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। তার হাত ধরে গ্রামীণ ব্যাংক সম্পূর্ণ বাংলাদেশ ছড়িয়ে পড়ে। তিনি ক্ষুদ্রঋণ নামক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জনক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ডঃ মোহাম্মদ ইউনূস ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থার জন্য বিখ্যাত ছিলেন।

ইউনূস কেন নোবেল শান্তি পুরস্কার পান?

ডঃ মোহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি সর্বপ্রথম ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থা চালু করেন। যার কারণে দেশের নিম্ন শ্রেণীর মানুষেরা ঋণ সুবিধা পেয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠার কারণে মানুষেরা সহজে নিজের উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে। 

যার ফলে মানুষের অনেক সমস্যা সমাধান হয়েছে। এই কারণে, ডঃ মোহাম্মদ ইউনূস কে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।

গ্রামীণ ব্যাংক লোন পদ্ধতি:

গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের প্রথম একমাত্র ব্যাংক যারা কোন জামানত ছাড়া ঋণ দিয়ে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংকের লোন পদ্ধতি অন্য ব্যাংকের তুলনায় সহজ। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে প্রথমে অফিসে কথা বলতে হয়। তারপর আপনার সম্পর্কে তাদের কর্মকর্তারা কিছু খোঁজ খবর নেবে।

যদি আপনার দৈনিক আয়ের কোন উৎস থাকে তাহলে আপনাকে ঋণ প্রদান করবে। এবং টাকার পরিমান অনুযায়ী কিস্তি ভাগ করা থাকে। ধরেন আপনাকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হল। 

তাহলে আপনাকে ২০ কিস্তির মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে হবে। ২০ কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করলে মূল টাকাও সুদ দুইটাই পরিশোধ হয়ে যাবে। যার কারণে সকলে গ্রামীণ ব্যাংকের লোন নিতে পারে।

গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা কয়টি?

গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় রয়েছে। ২০১৭ সালের হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা ২,৫৬৮ টি। বর্তমানে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।

গ্রামীন ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত:

১৯৭৬ সালে ডঃ মোহাম্মদ ইউনূস এর এর হাত ধরে গ্রামীণ ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৮৩ সালে সম্পূর্ণ বৈধ এবং স্বতন্ত্র ব্যাংক হিসেবে কাজ শুরু করে। গ্রামীণ ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য ছিল দরিদ্র মানুষদের ঋণ প্রদান করা। 

কারণ, দরিদ্র মানুষেরা কোন ধরনের জামানত দিতে পারে না যার কারণে কোন ব্যাংক তাদের ঋণ দেয় না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ডঃ মোহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর সাধারণ মানুষ উপকৃত হতে শুরু করেন। যার কারণে সকলেই সঠিক সময় টাকা পরিশোধ করে। 

যার কারণে গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ পরিষদের হার ৯৮%। যা বাংলাদেশের প্রথম ব্যাংক। কোন ব্যাংকের ঋণ ৯৮% পরিশোধ হয় না। গ্রামীণ ব্যাংকের কারণে গ্রামের অনেক মানুষ উপকৃত হয়েছে। যার কারণে শান্তিতে গ্রামীণ ব্যাংক নোবেল পুরস্কার পায়। 

বর্তমান সময়ে গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশ সরকার পরিচালনা করছে। কারণ গ্রামীণ ব্যাংকের সফলতা দেখে সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের উপর হস্তক্ষেপ করে।

গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা:

গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের অনেক পরিচিত একটি ব্যাংক। এই ব্যাংকটি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। যার কারণে গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা অনেক। নিম্নে গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা গুলো তুলে ধরা হলো।
  1. কোন জামানত ছাড়া ঋণ পাওয়া যায়।
  2. নারী এবং পুরুষ উভয়ে ঋণ নিতে পারে।
  3. কিস্তির মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা যায়।
  4. গ্রামীণ ব্যাংকের কম পরিমাণ টাকা ঋণ পাওয়া যায়।
  5. গ্রামীণ ব্যাংকে শিক্ষা লোন পাওয়া যায়। তবে শিক্ষা জীবনে লোন পরিশোধ করতে হয় না।
  6. গ্রামীণ ব্যাংকের কিস্তি সাপ্তাহিক এবং মাসিক দুই ভাবে নেওয়া যায়।
উপরে যে সব সুবিধা গুলো তুলে ধরা হয়েছে এগুলো ছাড়াও আরো অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণের সুদের হার একটু বেশি হল সুযোগ সুবিধা বেশি দিয়ে থাকে। যার কারণে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতি সকলের বিশ্বাস রয়েছে।

গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যাবলি:

গ্রামীণ ব্যাংক সকল শ্রেণীর মানুষকে ঋণ প্রদান করে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দরিদ্র  মানুষকে ঋণ প্রদান করা। বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যাবলী প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন গ্রামীণ ব্যাংক সকল ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকে। নিম্নে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যাবলী গুলো তুলে ধরা হলো:
  1. গ্রামীণ ব্যাংক কৃষি লোন
  2. গ্রামীণ ব্যাংক গরু ক্রয় লোন
  3. গ্রামীণ ব্যাংক বাড়ি নির্মাণ লোন
  4. গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোন
  5. গ্রামীণ ব্যাংক মৌসুমী লোন

অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা:

গ্রামীণ ব্যাংক একটি ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠা। গ্রামীণ ব্যাংক সকল ধরনের মানুষকে ঋণ প্রদান করে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ প্রাপ্ত মানুষেরা বেশির ভাগই নিম্ন শ্রেণীর। তারা এই ঋণ পাওয়ার মাধ্যমে অনেক ধরনের কাজ করে থাকে। যেমন পশু পালন, কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়, বিভিন্ন ধরনের গাড়ি।

এসবের মাধ্যমে খুব সহজেই পারিবারিকভাবে মানুষ সচ্ছল হচ্ছে। এতে করে ব্যাংক যেমন লাগেমান হচ্ছে ঠিক একই ভাবে ঋণ প্রাপ্ত মানুষেরাও অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করছে। বর্তমানে প্রায় জেলা ও উপজেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা রয়েছে। যার ফলে খুব সহজেই সাধারণ মানুষ ঋণ পাচ্ছে।

গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার মাধ্যমে মানুষ খুব সহজেই অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হয়ে উঠছে। এতে করে দেশের উন্নয়ন ঘটছে। কারণ দেশে বেকারত্বের হার দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৪৪৬৬৩৬ টি গ্রামে গ্রামীণ ব্যাংকের নেটওয়ার্ক রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে প্রায় ৩৩,৫৬,৬৪১ জন সদস্য ঋণ পেয়েছে।

এই থেকে আমরা জানতে পারি গ্রামীণ ব্যাংক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা পাচ্ছে। যার ফলে দেশের বেকারত্ব দূর হচ্ছে। এবং মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গ্রামীণ ব্যাংকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:

গ্রামীণ ব্যাংকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একটাই সাধারণ মানুষকে ঋণ প্রদান করা। কারণ, কোন ব্যাংক জামানত ছাড়া ঋণ প্রদান করে না। এই সমস্যা থেকে কেন্দ্র করে ডঃ মোহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে। 

এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষকে কোন জামানত ছাড়া ঋণ প্রদান করা। ১৯৭৬ সালে এর কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমান পর্যন্ত এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একই রয়েছে। তারা সাধারণ মানুষকে ঋণ দিয়ে থাকে।

দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা:

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে দরিদ্র। কারণ বাংলাদেশের জনসংখ্যা অনুযায়ী কর্মসংস্থান কম। এছাড়াও গরীব মানুষকে কেউ সাহায্য করে না। যার কারণে দরিদ্র মানুষেরা আরো পিছিয়ে পড়ে। কিন্তু দরিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংক ভূমিকায় রেখেছে। 

তাদের কারণে আজ গ্রামের অসংখ্য পরিবার সচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে। যেসব ব্যক্তিদের কোন প্রতিষ্ঠান ঋণ দেয় না। গ্রামীণ ব্যাংক তাদের ঋণ প্রদান করে। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ মোহাম্মদ ইউনূস জানেন গরিব মানুষেরা সাহায্য পেলে উন্নতি করতে পারবে। 

সেই লক্ষ্যে তিনি গরীবদের লোন প্রদান শুরু করে। এতে করে গ্রামের মানুষেরা বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম শুরু করে। এইভাবে গ্রামের সাধারণ মানুষেরা উন্নতি করেছে। যেমন: অনেকে পশু পালন করে, অনেকে গাড়ি করে, অনেকে বর্গা জমি করে। 

এই ভাবেই দিনে দিনে মানুষ পরিবর্তন হয়েছে। সেই কারণে, দরিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা রয়েছে।

গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারের বেতন কত?

বর্তমান সময়ে অনেকেই গ্রামীণ ব্যাংকের চাকরি করছে। আবার অনেকে গ্রামীণ ব্যাংকে চাকরি করার জন্য ইচ্ছুক। সে কারণে অনেকেই জানতে চাই। গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারের বেতন কত? গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারের বেসিক বেতন ৩০ হাজার টাকা। এরপর আস্তে আস্তে বেতনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

গ্রামীণ ব্যাংক কি এনজিও?

ব্যাংক ও এনজিও এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এনজিও হচ্ছে একটি ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান। তারা শুধু ঋণ দিয়ে থাকে। এছাড়াও এরা একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে কাজ করে থাকে। কিন্তু ব্যাংক একটি বিস্তীর্ণ ব্যবস্থা। 

এখানে সকল ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংক প্রথমে এনজিওর মত কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংক একটি ব্যাংক। 

গ্রামীণ ব্যাংক কি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান?

গ্রামীণ ব্যাংক স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান না। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি অধ্যয়নের পরিচালিত হয়। কিন্তু সকল কার্য পরিচালনা করে সংগঠনটি। সেই ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংক সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ গ্রামীণ ব্যাংক যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৭৬ সালে। 

সেই সময় ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস নিজ অর্থায়নে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ করেছে। এখন সরকারের নিয়ম অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালিত হয়। 

কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের সম্পূর্ণ অর্থ গ্রামীণ ব্যাংকের নিজস্ব। এখানে সরকারের কোন অর্থায়ন নেই। তবে বর্তমানে সরকার এই ব্যাংক পরিচালনা করছে। যার কারণে, অর্থের পরিবর্তন হতে পারে।

ক্ষুদ্র ঋণ বলতে কী বোঝায়?

ক্ষুদ্র ঋণ হচ্ছে স্বল্প পরিমাণের ঋণ। যেসব দরিদ্র, বেকার, দরিদ্র উদ্যোক্তা ও নিম্ন শ্রেণীর মানুষ তারা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে থাকে। যাদের কোন জামানত দেওয়ার মতো অর্থ থাকে না তারা সাধারণত ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে থাকে। 

কারণ কোন ব্যাংক জানানো ছাড়া ঋণ প্রদান করেনা। কিন্তু বর্তমানে কিছু এনজিও রয়েছে যারা জামানো ছাড়া ঋণ প্রদান করে। সাধারণত জামানত ছাড়া যেসব ঋণ প্রদান করা হয় সেগুলোই ক্ষুদ্র ঋণ। 

এসব ঋণের পরিমাণ ত্রিশ হাজার থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। ক্ষুদ্র ঋণ দান শুরু করেন গ্রামীণ ব্যাংক। বর্তমানে অনেক ধরনের ক্ষুদ্র ঋণ দানকারী প্রতিষ্ঠা রয়েছে।

শেষ কথা: গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা

গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের একটি বড় ব্যাংক। এই ব্যাংক সর্বপ্রথম নিম্নবিত্ত মানুষকে ঋণ প্রদান শুরু করেন। এই ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলে মানুষের উন্নতি হয়। গ্রামীণ ব্যাংকের অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। 

কোন জামানত ছাড়া তারা ঋণ প্রদান করে এটাই সবচেয়ে বড় সুবিধা। গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে আমাদের সকলের ধারণা রয়েছে। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ