গাড়ির নাম্বার প্লেটঃ
আপনার যদি গাড়ি থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই লক্ষ্য করে দেখেছেন যে আপনার গাড়ির পেছনে একটি নাম্বার প্লেট হয়েছে অথবা সামনে আপনার একটি গাড়ির নাম্বার প্লেট রয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানি না আসলে এই নাম্বার প্লেট এর কি অর্থ বোঝায়। এই নাম্বার প্লেটে যেই নাম্বার গুলো রয়েছে এই কোডগুলো দ্বারা কি বুঝানো হয় তা আমরা অনেকেই জানিনা। আমরা শুধু জানি যে এটি গাড়ির নাম্বার মাত্র কিন্তু আপনারা যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকেই পোষ্টের মাধ্যমে জেনে যাবেন আসলে এই নাম্বার গুলো ভিন্ন-ভিন্ন অর্থ বহন করে।
আর এই নাম্বারগুলোর একেকটা ডিজিট কি কি ধরনের অর্থ বহন করে তা আজকে আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের মাঝে তুলে ধরব। ধরুন একটি গাড়ির নাম্বার পেতে রয়েছে রাজশাহী মেট্রো এ থেকে আমরা খুব সহজেই বুঝে যায় যে এটি রাজশাহী শহরের একটি গাড়ি, এবং এটি রাজশাহী মেট্রোপলিটন এর আওতাধীন একটি গাড়ি যা সহজেই আমরা রাজশাহী মেট্রো দেখে বুঝে ফেলি। কিন্তু ধরুন রাজশাহী মেট্রো হ,ল এই ধরনের যখন একটি নাম্বার অর্থাৎ বর্ণ জুড়ে দেওয়া হয় তখন আমাদের মাঝে বেশ কনফিউশন সৃষ্টি হয়। এর অর্থ আমরা অনেকেই জানিনা তাই আমাদের মাঝে এই ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় অথবা আমরা এর অর্থই বুঝিনা এর দ্বারা কি বুঝায়? আর আমরা কখনও এই বর্ণ সম্পর্কে বা এই নাম্বার গুলো নিয়ে কোন ধরনের চিন্তাভাবনায় করিনা, আসলেই এগুলো তারা কি অর্থ বহন করে?
বর্ণমালা গুলো দ্বারা কি অর্থ বুঝানো হয় এই বিষয়টি জানার আগে আমাদের আরেকটি বিষয়ে জেনে নেওয়া অত্যান্ত জরুরী প্রয়োজন, আর সেটি হচ্ছে যে এই নাম্বার প্লেট সাধারণত কারা দিয়ে থাকে? আপনি যখন একটি গাড়ি ক্রয় করেন তখন সেই গাড়ির নাম্বার প্লেট এর জন্য আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা জমা দিতে হয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি কে অর্থাৎ আমরা যাকে বিআরটিএ বলে জানি। এরপরে বিআরটিএ আপনার এই গাড়িটি কোন ক্যাটাগরিতে পড়ে সেটি নির্ধারণ করে তারপরে আপনাকে একটি নাম্বার প্রদান করে থাকে।
উপরের ছবিতে দেখানো ফরমেট এর মাঝের অংশকে গাড়ির ক্যাটাগরি বুঝাতেই এই ধরনের বাংলা বর্ণমালা গুলো দেওয়া হয়ে থাকে। আর এই বর্ণমালাগুলো গাড়ির ক্যাটাগরি অনুযায়ী দেওয়া হয়ে থাকে যা কিনা সম্পূর্ণরূপে বিআরটিএর ওপর নির্ভর করে। আসলে আপনার গাড়িটি কোন ক্যাটাগরিতে পড়ছে সেটির উপর নির্ভর করে, তারা সেই বর্ণমালা টি আপনার নাম্বার প্লেট এর সঙ্গে সংযুক্ত করে দিয়ে থাকেন। বিআরটিএ এই ক্যাটাগরি গুলোর ভিতর আমাদের জানামতে ১৯ টি ক্যাটাগরির রয়েছে যার মধ্যে একটি শুধু নির্দিষ্ট করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জন্যেই তৈরি করা হয়ে থাকে। আর বাকি ১৮ টি ক্যাটাগরির রয়েছে সেগুলো পাবলিক সার্ভিস এর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
চলুন আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা বিআরটিএর অনুমোদিত যানবাহন সম্পর্কে আরও বেশ কিছু তথ্য নিচে দেওয়ার চেষ্টা করছি আশা করি আপনারা এই তথ্যগুলো সম্পর্কে জানা থাকলে সমস্ত রকমের নাম্বার প্লেট নিয়ে আর কোন ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব কনফিউশন থাকবে না আশা করি দূর হয়ে যাবে এই পোস্টের মাধ্যমে। BRTA-এর অনুমোদিত সকল যানবাহনে নাম্বারপ্লেট ব্যবহারের নিয়ম চালু হয় ১৯৭৩ সালে। আসলে এই নাম্বার প্লেট কি অর্থ বহন করে? নাম্বারপ্লেট অনেক মজার তথ্য বহন করে, যা আমাদের অনেকেরই ধারনা নেই।
বাংলাদেশের যানবাহনগুলোর নাম্বারপ্লেটের ফরম্যাট হচ্ছে- শহরের নাম-গাড়ির ক্যাটাগরি ক্রম এবং গাড়ির নাম্বার।
যেমন ধরুনঃ ঢাকা মেট্রো য-১১২৫৯৯। এখানে একটু ভালো করে খেয়াল করে দেখুন ঢাকা মেট্রো দ্বারা বোঝানো হয়েছে গাড়িটি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আওতাধীন। যা আমি ইতিপূর্বে উপরে বলে এসেছি ঠিক নাম্বারটি দেখে বুঝে নিন শুধু উপরের বিষয়টি মাথায় নিলে হবে।
য হচ্ছে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গাড়ির চিহ্নকারী বর্ণ। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন সব গাড়ি য বর্ণ দ্বারা চিহ্নিত করা হবে। আর এর পরবর্তী ১১ হচ্ছে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার এবং ২৫৯৯ হচ্ছে গাড়ির সিরিয়াল নাম্বার।
আমরা জানিসাধারণত বাংলা বর্নমালার অ, ই, উ, এ, ক, খ, গ, ঘ, ঙ, চ, ছ, জ, ঝ, ত, থ, ঢ, ড, ট, ঠ, দ, ধ, ন, প, ফ, ব, ভ, ম, য, র, ল, শ, স, হ অক্ষরগুলো ব্যবহার করা হয়। উপরের প্রতিটি বর্ণ আলাদা আলাদা গাড়ির পরিচয় বহন করে থাকে।
তাহলে চলুন আমরা এখন জেনে নিন এগুলো দ্বারা কি বোঝায় সেই বিষয়টি সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিতঃ
ক – এই ক বর্ণমালাটি সাধারণত ৮০০ সিসি প্রাইভেটকার গুলোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
খ – এখন খ বর্ণমালা ব্যবহার করা হয়ে থাকে ১০০০-১৩০০ সিসি প্রাইভেটকার গুলোর জন্য।
গ – অপরদিকে গ বর্ণমালা টি ব্যবহার করা হয়ে থাকে ১৫০০-১৮০০ সিসি প্রাইভেটকারের জন্য।
ঘ – আর ঘ বর্ণমালা টি ব্যবহার করা হয়ে থাকে জীপগাড়ি গুলোর জন্য।
চ – মাইক্রোবাস এর জন্য চ বর্ণমালা টি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ছ – মাইক্রোবাস / লেগুনা (ভাড়ায় চালিত) যানবাহন গুলোর জন্য ছ বর্ণমালা কি ব্যবহৃত হ...
জ – সাধারণত মিনিবাসের ক্যাটাগরিগুলো বুঝাতে জ ব্যবহৃত হয়।
ঝ – বাস (কোস্টার) বা বড় বাসের ক্যাটাগরি বোঝাতে ঝ বর্ণমালা টি ব্যবহৃত হয়।
ট – ট্রাক এর ক্ষেত্রে ট বর্ণমালা ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ঠ – ডাবল কেবিন পিকআপ গুলোর ঠ ক্যাটাগরি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
ড – মাঝারি ধরণের ট্রাকের নাম্বার গুলোর ক্ষেত্রে ড বর্ণমালা টি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ন – ছোট ধরনের পিকআপ এর ক্ষেত্রে ন বর্ণমালা টি ধারা তার ক্যাটাগরি বুঝানো হয়
প – ট্যাক্যি ক্যাব এর ক্ষেত্রে প ব্যবহৃত হয়।
ভ – ২০০০+ সিসি প্রাইভেটকার গুলোর জন্য ভ ব্যবহৃত হয়।
ম – পিকআপ (ডেলিভারী) টাইপের যানবাহনের ম জন্য ব্যবহৃত হয়।
দ – প্রাইভেট বা নিজস্ব পরিবহনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সি এন জি এর ক্ষেত্রে দ বর্ণমালার ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
থ – সি এন জি (ভাড়ায় চালিত)
হ – ৮০-১২৫ সিসি মোটরবাইক গুলোর ক্যাটাগরি বোঝাতে হ বর্ণমালা কি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ল – অপরদিকে একটু বড় সাইজের বা মাঝারি টাইপের আমাদের দেশের মোটরসাইকেল গুলোর সিসি বোঝাতে ল ব্যবহৃত হয়ে থাকে উদাহরণস্বরূপ ১৩৫-২০০ সিসি এর মোটরবাইক।
ই – ভটভটি টাইপের ট্রাকের নাম্বারপ্লেটে অনুমোদন দেয়ার সময় তাতে ই বর্ণটি দিয়ে ক্যাটাগরি ঠিক করে দেয়া হয়।
আপনি যদি উপরের বর্ণমালা গুলো সম্পর্কে বা নাম্বার প্লেট সম্পর্কে একটি মোটামুটি ভালো ধরনের ধারণা পেয়ে থাকেন তাহলে ভবিষ্যতে যেকোনো গাড়ির নাম্বার প্লেটের দিকে এক নজর দেখলে আপনি সেটি কোন সিটির আন্ডারে বা কোন ক্যাটাগরির এটি সহজেই বুঝে নিতে পারবেন এই নাম্বার প্লেট দেখেই। এছাড়াও আপনার মনে যদি কোন ধরনের কনফিউশন থেকে থাকে তাহলে আপনি এই পোস্টটি পুনরায় আর একবার ভালো করে দেখে নিবেন আশাকরি আপনার কোন ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব আর থাকবে না।
এই ধরনের তথ্যবহুল পোস্ট গুলো পেতে আমাদের পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের অফিশিয়াল পেজ গুলো ফলো করলে নতুন কোন পোস্ট করার সাথে সাথে আপনার কাছে নোটিফিকেশন চলে যাবে এছাড়াও আপনার যদি ব্যক্তিগত কোনো মতামত থাকে তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই আপনি জানাতে পারবেন মেসেঞ্জারে টেক্সট করে অথবা কন্টাক্ট ফর্ম পূরণের মাধ্যমে।
যেভাবে বিটিসিএল ইন্টারনেট সংযোগের জন্য এপ্লিকেশন করবেন? জানতে এখানে ক্লিক করুন।
0 মন্তব্যসমূহ