জাকারবার্গের ফেসবুকের ১৫০ কোটি গ্রাহকের তথ্য বিক্রি! ও সার্ভার ইস্যু।

১৫০ কোটি ফেসবুক গ্রাহকের তথ্য বিক্রি

বর্তমানে ফেসবুক দিনে দিনে এমন পর্যায়ে পৌছে গিয়েছে বা যাচ্ছে তা খুব সহজেই আমাদের চোখে পড়ার মতো একটি ট্রেন্ডিং বিষয়। আর হু হু করে বেড়েই চলেছে এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যেম ফেসবুকের গ্রাহক সংখ্যা মিনিটে মিনিটে বা চাইলে বলতে পারেন সেকেন্ডের মাথায়। বেশ জনপ্রিয়তার তুংগে রয়েছে এই ফেসবুক তাদের ব্যবহারকারীদের কাছে।

আর এই ফেসবুক এমনি পর্যায়ে এসে পৌঁছে গিয়েছে যে যদি কয়েক সেকেন্ডের জন্যে বন্ধ থাকে তাহলে কোটি কোটি ডলার ট্রান্সেকশন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এক মুহূর্ত যেন চলেনা এই ফেসবুককে ছাড়া এর ব্যবহারকারীদের। আপনারা জানেন যে এই ফেসবুকই বন্ধ ছিল ছয় ঘণ্টারও বেশী সময়। আর ফেসবুকের ইতিহাসে ২০১৯ সালের পর এমন বড় ধরনের বিপর্যয়ের ঘটনার ময়নাতদন্ত চলছে বিশ্ব জুড়ে। এ নিয়েই ফেসবুকের গ্রাহকের মনে রয়েছে হাজারো প্রশ্ন।

তবে শোনা যাচ্ছে যে ১৫০ কোটি ফেসবুক গ্রাহকের তথ্য বিক্রি হয়ে গেছে একটি হ্যাকার ফোরামের কাছে। মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) রোমানিয়াভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রাইভেসি অ্যাফেয়ার্সের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য তারা জানিয়েছেন।

ফেসবুক এর এই বিভ্রাট বা বিপর্যয়ের ঠিক পরদিনই প্রকাশিত প্রাইভেসি অ্যাফেয়ার্সের এই প্রতিবেদন নতুন চমকের সৃষ্টি করেছে। যদিও প্রাইভেসি অ্যাফেয়ার্স বলছে ৪ অক্টোবরের বিপর্যয়ের সঙ্গে ১৫০ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য বিক্রির কোনো সম্পর্ক নেই। তবে ধারনা করা হচ্ছে যে এই ঘটনা ঘটেছে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে।

ফেসবুকের একজন মুখপাত্রও মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বিপর্যয়ের এ সময়ে কোনো ব্যবহারকারীর ডাটা বেহাত হওয়ার প্রমাণ তারা পাননি। তিনি বলেন, ব্যাকবোন রাউটারের কনফিগারেশনে পরিবর্তন আনার সময় কারিগরি ত্রুটির কারণে গত সোমবার রাতে বন্ধ হয়ে যায় ফেসবুক, মেসেঞ্জার এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামের সেবা। প্রায় ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর ত্রুটি কাটিয়ে ওঠে সেবা চালুতে সক্ষম হন ফেসবুক প্রকৌশলীরা। এবং এর পরেই এই সোস্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারীগণ তাদের এক্সেস ফিরে পান পুনরায়।

আরও পড়ুনঃ  টিন সার্টিফিকেট কি এবং কিভাবে করবেন? এখানে দেখুন।

তবে প্রাইভেসি অ্যাফেয়ার্স মঙ্গলবার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানিয়েছে ওয়েব স্ট্ক্র্যাপারস হিসেবে পরিচিত ওয়েবসাইট থেকে তথ্য চুরিতে নিয়োজিত একটি গ্রুপের কাছ থেকে তারা জানতে পেরেছে, সাম্প্রতিক সময়ে তারা ফেসবুক থেকে প্রায় ১৫০ কোটি গ্রাহকের তথ্য একটি হ্যাকার ফোরামের কাছে বিক্রি করেছে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই তথ্য বিক্রি হওয়ার কথা দাবি করেছে ওয়েব স্ট্ক্র্যাপাররা। সেই দাবির সমর্থনে তারা কিছু প্রমাণও দিয়েছে। এই কেনার ক্ষেত্রে প্রতি এক মিলিয়ন বা ১০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্যের জন্য পাঁচ হাজার ডলার মূল্য পরিশোধ করতে হয়েছে ক্রেতা হ্যাকার ফোরামকে। অর্থাৎ দেড়শ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য কিনতে হ্যাকার ফোরামের ব্যয় হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা প্রায় ৬৫ কোটি টাকা।

প্রাইভেসি অ্যাফেয়ার্সের প্রতিবেদনে ওয়েব স্ট্ক্র্যাপারস ও হ্যাকারদের পাঠানো ই-মেইল বার্তার কিছু স্ত্রিনশটও সংযুক্ত করা হয়েছে। যেখানে ওয়েব স্ট্ক্র্যাপারদের গ্রুপটি তাদের কাছে থাকা ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য শতভাগ ‘জেনুইন’ বলে দাবি করেছে। তবে কোন হ্যাকার গ্রুপ তথ্য কিনে নিয়েছে, তার নাম প্রকাশ করা হয়নি প্রতিবেদনে।

ফেসবুকের মুখপাত্র বিবৃতিতে জানান, ফেসবুকের ডাটা সার্ভারগুলোর মধ্যে নেটওয়ার্ক ট্রাফিক সমন্বয় করা রাউটারটির কনফিগারেশনে পরিবর্তন করার সময় ডাটা আদান-প্রদান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে উল্লিখিত সেবাগুলো বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় রাউটারটির ত্রুটি দূর করা হয় এবং ফেসবুকের সেবাগুলো অনলাইনে ফিরে আসে। এখন পুরো কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে ফেসবুক প্রকৌশলীরা কাজ করছেন। ফেসবুকের সেবা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে ব্যবহারকারীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে বিবৃতিতে। সেখানে আরও বলা হয়, কারিগরি ত্রুটির কারণে ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হওয়ার কোনো প্রমাণ ফেসবুকের কাছে নেই।

ফেসবুকের রাউটারে নতুন কনফিগারেশনটি চলছিল ফেসবুকের বিপর্যয়ের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা গেছে। জাকারবার্গের সকল সোস্যাল মিডিয়া গুলো যেমন ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপের মধ্যে একটি কমন সুইচ প্ল্যাটফর্ম তৈরির জন্য এবং এর মাধ্যমে ফেসবুক এবং এর অধীন মাধ্যমগুলোর মধ্যে প্রয়োজনীয় ডাটা আদান-প্রদান সহজ হতো। কিছুদিন আগে ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ফেসবুকের সঙ্গে ডাটা আদান-প্রদানে সম্মতি আদায় করে নেয়।

এরপরই সেবাগুলোর মধ্যে একটি কমন সুইচ প্ল্যাটফর্ম তৈরির জন্য রাউটিং কনফিগারেশন হালনাগাদ করার কাজ শুরু করে। সেই কাজটি চলমান থাকা অবস্থায় পুরো রাউটিং ব্যবস্থায় বড় ধরনের কারিগরি ত্রুটি দেখা যায় এবং ফেসবুক ও এর অধীন সবগুলো অনলাইন সেবা বন্ধ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত সেই কারিগরি ত্রুটি সারিয়ে তোলার প্রাথমিক কাজটি হয়েছে। এখন আগের ত্রুটিগুলোর দিকে লক্ষ্য রেখে কনফিগারেশনের কাজ চলছে। সূত্র আরও জানায়, এবার বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে ২০১৯ সালের মতো সার্ভারের ত্রুটি ঘটেনি। সেবার ফেসবুক বন্ধ ছিল টানা ১৪ ঘণ্টা। তবে এই বারের মতো প্রায় ৬ ঘন্টার মতো বন্ধ থাকার পরে আবার পুনরায় সচল এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম গুলো। 

এই ধরনের তথ্যবহুল পোস্ট গুলো পেতে আমাদের পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের অফিশিয়াল পেজ গুলো ফলো করলে নতুন কোন পোস্ট করার সাথে সাথে আপনার কাছে নোটিফিকেশন চলে যাবে এছাড়াও আপনার যদি ব্যক্তিগত কোনো মতামত থাকে তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই আপনি জানাতে পারবেন মেসেঞ্জারে টেক্সট করে অথবা কন্টাক্ট ফর্ম পূরণের মাধ্যমে।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার পদ্ধতিসমূহ জানুন এখানে আরও পড়ুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ