আজকে আমরা জানবো বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম বা কন্টেন্ট লেখার নিয়ম । কেননা আপনারা অনেকেই হয়তোবা জানেন যে একটা ওয়েব সাইটের আর্টিকেলকে কিং বা রাজা বলা হয়। কথাটা যে কেবল মুখেই বলা হয় বিষয়টা কিন্তু আসলে তা না।
এই কনটেন্ট লেখার নিয়ম বা আর্টিকেল্কে কিং বা রাজা বলার পিছনে রয়েছে হাজারটা কারন। তবে যদি এক বাক্যে বলতে হয় তাহলে বলবো, ভালো আর্টিকেল মানে আপনার সফলতা খুব দূরে নয়। আপনি যদি সঠিক ভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ আর ভালো আর্টিকেল লিখতে পারেন তাহলেই আপনার সেই পোস্টটি র্যাংক করার জন্য ৯৫% তৈরী।
আর বাকি ৫% নির্ভর করে অফপেজে কিছু কাজের উপর। যাই হোক আজ না হয় এসব নিয়ে আলোচনা না করলাম। চলুন যেনে নেয়া যাক, আর্টিকেল লেখার সময় কোন কোন বিষয়ে খুব বেশি জোর দিতে হয়। আবার যারা বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম বা কনটেন্ট লেখার নিয়ম খুজে বেড়াচ্ছেন তাদের জন্যে অনেক হেল্পফুল হতে চলেছে আজকের এই পোস্টটি।
১। কিওয়ার্ড । বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম । কন্টেন্ট লেখার নিয়ম
ধরুন আপনি একটি কিওয়ার্ডকে টার্গেট করে আর্টিকেল লিখবেন। যদি কিওয়ার্ডটি আপনার কোন বায়ারের হয় তাহলেতো কোন কথা নাই। ডানে বায়ে তাকানোর সুযোগ নাই। যা দিবে তাই লিখে দিতে হবে।
অপরদিকে যদি কিওয়ার্ডটি আপনার নিজের ওয়েব সাইটের জন্য হয় তাহলে আপনার মাথায় সবার আগে যে বিষয়টা আনাতে হবে তা হলো আমি কি সঠিক ভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করেছিলাম কি?।
আপনি যদি আবেগের বসে কোন কিওয়ার্ড সঠিক এনালাইসিস ছাড়া নিয়েই ফেলেন তাহলে কবে আপনার আর্টিকেল র্যাংক করবে তার হিসেব আপনাকে কেউ দিতে পারবে না।
এই পয়েন্টে এসে একটা কথাই বলবো ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না। তাই কিওয়ার্ড রিসার্চ করা অনেক জরুরি একটি বিষয় যেকোন আর্টকেলকে র্যাংকে আনতে।
আরও পড়ুনঃ বাংলা পোস্ট লিখে ঘরে বসে আয় পেমেন্ট বিকাশে। অনলাইন ইনকাম
২। কম্পিটেটর এনালাইসিস । বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম
আপনি কোন নিশ নিয়ে কাজ করছেন, আপনার মতো আরও কে কে সেই টপিক নিয়ে লিখালিখি করছে তা আপনাকে জানতে হবে। তাই লেখা শুরু করার আগে অবশ্যই আপনাকে আপনার কমপক্ষে ১০ জন কম্পিটেটরদের আর্টিকেল এনালাইসিস করতে হবে।
আপনার কম্পিটেটররা আপনার পছন্দের কিওয়ার্ড নিয়ে কি কি লিখেছে। কিভাবে লিখেছে? কোন কোন পয়েন্ট কভার করেছে, কিভাবে আর্টিকেল সাজিয়েছে, কতগুলো পয়েন্ট করেছে। এরপর সব কিছু দেখে শুনে বুঝে আপনার এমন ভাবে লিখতে হবে যাতে করে আপনার লেখাটি ১০ জনের থেকে আলাদা হয়।
তাদের থেকে সুন্দর হয়, তাদের থেকে বেশি ও কার্যকর পয়েন্টগুলো উল্লেখ হয়। সর্বপরি কথা হলে, কম্পিটেটররা যা দিয়েছে আপনাকে তার থেকে বেশি ও ভালো কিছু দিতে হবে।
৩। টাইটেল । বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম । কন্টেন্ট লেখার নিয়ম
আপনি যখন কোন আর্টিকেল লেখার নিয়ম বা কনটেন্ট লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হবেন। আপনাকে অবশ্যই শেখানো হবে যে আর্টিকেলের টাইটেল অবশ্যই মনে ধরার মত হতে হবে। টাইটেল লেখার সময় আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনার টাইটেলে অর্থবোধক ও আই ক্যাচি হয় ভাব ফুটে উঠে।
আপনি যত আকর্ষনীয় টাইটেল দিতে পারবেন ভিজিটরদের ক্লিক পাবার সম্ভাবনা ততো বেড়ে যাবে। অর্থাৎ সিটিআর বেড়ে যাবে। আপনি দ্রুত র্যাকে চলে আসবেন। অন্যদিকে আর একটা বিষয় মাথা রাখতে হবে তা হলে সব সময় চেষ্টা করবেন আপনার টাইটেলের প্রথমে যেন আপনার পছন্দের কিওয়ার্ডটি থাকে।
আর একটা কথা হলো, টাইটেলকে অবশ্যই ৬০ অক্ষরের ভিতর রাখার চেষ্টা করবেন। কারন গুগল রেজাল্ট পেজে এরচেয়ে বেশি দেখায় না।
উদাহরন- যদি আপনার কিওয়ার্ড যদি Best Laptop হয় , তাহলে আপনার টাইটেল হতে পারে Best laptop 2022 you should know!
আরও পড়ুনঃ আর্টিকেল লেখার নিয়ম | ব্লগে পোস্ট করার নিয়ম
৪। ইউআরএল । বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম বা কন্টেন্ট লেখার নিয়ম
আমাদের এই আর্টিকেলে আসলে URL (Uniform Resource Locator) নিয়ে কথা বলার কথা না। তারপরেও আমি আপনাদের সুবিধার জন্যে অনপেজটা মোটামুটি ভাবে কভার করার জন্যই বলে দিলাম। আপনার মূল কিওয়ার্ড অবশ্যই আপনার ইউআরএল এ রাখার চেষ্টা করবেন। কারন এটি অন্যতম র্যাংকিং ফ্যাক্টরস।
৫। ইন্ট্রোডাকশন । কন্টেন্ট লেখার নিয়ম
আপনি যখন আর্টিকেল লিখা শুরু করবেন তখন ইনট্রোডাকশনের প্রথম লাইনটা এমন ভাবে লিখতে হবে যাতে করে সেই প্রথম লাইনটাতে আপনি আপনার পছন্দের কিওয়ার্ডটি রেখে কথা বলতে পারেন। আবার সম্পূর্ন প্যারাটি এমন ভাবে লিখতে হবে যাতে কেউ যদি আপনার ইন্ট্রোটা পড়ে তাহলে যেন ভিতরের লেখাগুলো পড়ার আগ্রহ পায়।
অনেকটা হুমায়ূন আহমেদ স্যারের উপন্যাসের মতো। অনেকে ইন্ট্রো অনেক বড় লেখেন, তবে আমাদের পরামর্শ হলো ১৫০-২০০ ওয়ার্ড এর বেশি না, ছোট হলেও প্রবলেম নাই। আর একটা বিষয় হলো যে কোন প্যারা যেন আবার ১৫০ ওয়ার্ডের বেশি না হয়।
৬। এইচ ট্যাগ । বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম
আর্টিকেল বা কনটেন্ট লেখার নিয়ম এর ভেতরে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে H Tag এইচ ট্যাগ (H1, H2, H3, H4, H5) হলো খুবই গুরুত্বপূর্ন বিষয়। কিছু এইচ ট্যাগের ভিতর আপনার মূল কিওয়ার্ড রাখার চেষ্টা করবেন। বিশেষ করে H2 ট্যাগ এ।
৭। এল এস আই ও সিনোনেম । কন্টেন্ট লেখার নিয়ম
LSI (Latent semantic indexing) কিওয়ার্ড নিয়ে এ জীবনে অনেক কথা বলেছি। কেউ কেউ LSI কে সিনোনেম বলে বলে থাকেন। আমাদের কথা হলো, LSI কোন সিনোনেম না। গুগলে যদি আপনার কিওয়ার্ড নিয়ে সার্চ করেন তাহলে গুগল যে কিওয়ার্ড গুলো সাজেষ্ট করে তার ভিতরেই LSI থাকতে পারে।
যদি আপনি গগুলে সার্চ করেন best brew coffee তাহলে নিচের সাজেশন গুলো থাকতে পাবেন। তাদের ভিতর লাল মার্ক করা পয়েন্টই হলো LSI কিওয়ার্ড। এছাড়াও সার্পের একেবারে নিচে গুগল কিছু রিলেডেট সার্চও দেখিয়ে থাকে সেখানেও ভালো LSI পেতে পারেন।
আর একটু সংক্ষেপে বলি। brew coffee তৈরী করতে যা যা লাগবে কিংবা যার যার সাথে জড়িত তাই তাই এলএসই, অর্থাৎ, পানি, দুধ, চামুচ, চিনি, ব্রান্ড, মেকার, পট, কাপ ইত্যাদি। আর এই শব্দগুলো যদি আপনার আর্টিকেলে কভার করতে পারেন তাহলে আপনার লেখাটি ইনডেফথ্ হসেবে গুগল ধরে নিবে। তখন বুঝবে আপনি brew coffee সাথে আপনি সকল বিষয় কভার করেছেন।
google suggestion
অন্যদিকে আপনাকে আপনার কিওয়ার্ডের সিনোনেমও ব্যবহার করতে হবে। কারন একই শব্দ যদি বারবার লেখেন বিষয়টা আপনার কাছে কেমন লাগবে ভেবে দেখেুন।
একটু উদাহরন দেই– রহিম ভালো ছেলে, রহিমের বয়স ১০ বছর, রহিম ৫ম শ্রেনীতে পড়ে। এভাবে না লিখে যদি বলেন, রহিম ভালো ছেলে, তার বয়স ১০ বছর, সে ৫ম শ্রেনীতে পড়ে। পড়তে কিন্তু ভালো লাগে।
আরও পড়ুনঃ Make Money Online | ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়?
৮। মিডিয়া বা ইমেজ । বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম
আপনার আর্টিকেলের ভিতরে আপনি মিডিয়া যুক্ত করতে পারেন। যেমন ধরেন উপরে একটা ছবি ব্যবহার করেছি। এতে অনেকেরই বুঝতে সুবিধা হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। প্রয়োজনে আপনি চাইলে ইউটিউব ভিডিও ইউজ করতে পারেন। আর কিছু একটা যুক্ত করবেন সে বিষয়টা মাথায় রেখেই আপনাকে আর্টিকেল লিখতে হবে।
৯। প্যারাগ্রাফ । বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম
আর্টিকেলের প্রতিটা প্যারা যতটা সম্ভব ছোট রাখার চেষ্টা করবেন। বড় প্যারা দেখলে অনেকেই পড়তে ভয় পায়। অথচ প্যারা ছোট ছোট করে লিখলে অনেক সময় বড় আর্টিকেলও চোখের পলকে পড়া হয়ে যায়। সেটা হতে পারে ২০- ৫০ শব্দ ।
প্যারার ভিতরে যেখানে ন্যাচারালি যে যায়গায় আপনার কিওয়ার্ড বসানো যায় সেখানে বসাতে পারেন। তবে খুব বেশি যেন না হলে সেদিকে খেয়াল রাখুন। ১০০০ ওয়ার্ড আর্টিকেলে ৩-৪ বার কিওয়ার্ড ইউজ করতে পারেন।
আর একটা বিষয় হলো আপনার সেন্টেন্স গুলো যেন প্যাসিভ ভয়েজে না হয় সেদিকেও আপনাকে নজর দিতে হবে। আমেরিকানরা লেখার ভিতর প্যাসিভ ভয়েজ পছন্দ করেন না। যারা বাংলা আর্টিকেল লিখেন তাদের জন্যেও এটা ফলো করলে ভাল হয়।
১০। বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম ভিডিও
আরও পড়ুনঃ বাংলা আর্টিকেল লিখে আয়/টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে ২০২২
শেষ কথাঃ বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম বা কন্টেন্ট লেখার নিয়ম
আমরা কিন্তু সবাই জানি যে শেষ ভালো যার সব ভালো তার। প্রতিটা লেখার শেষে একটা সারাংশ টানুন। যা বলেছেন তা যেন শেষের প্যারাটা পড়লে কিছুটা আন্দাজ করা যায়। এখানে চাইলে আপনি আপনার কল টু একশন দিতে পারেন।
অর্থাৎ বলে দিতে পারেন, আপনারা যদি এসইও বিষয়ে এ টু জেড শিখতে চান তাহলে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে জয়েন করতে পারেন।
তো অনেক কিছুই লিখে ফেললাম। আজকের মতে তাহলে এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আর আমাদের সাইটের পোস্ট গুলো পড়ে উপকৃত হলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং টুইটারে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন। তাহলে নতুন পোস্ট পাবলিশ হবার সাথে সাথেই পেয়ে যাবেন আপডেট সমূহ।
0 মন্তব্যসমূহ