অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম

অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম

সকল কিছু অনলাইনের মাধ্যমে হওয়ার ফলে মানুষের দুর্ভোগ অনেক কমেছে। ছাড়াও সকল কাজে দুর্নীতি লোভ পেয়েছে। অফিসিয়াল মাধ্যমে কাজ করলে প্রতিটি কাজের জন্য কিছু সম্মানী দিতে হয়। যদি কেউ সম্মানী না দেয় তাহলে তার কাজ হতে অনেক দেরি হয়। 

অনলাইনে সকল কাজ হওয়ার ফলে এই সমস্যাটি দূর হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের তৎপরতাই সকল কিছু অনলাইন ভিত্তিক হচ্ছে। বর্তমান সময়ে অনলাইনে জমির খাজনা পরিষদের নিয়ম চালু করেছে। কিন্তু অনেকের এই সম্পর্কে ধারণা নেই। জনম জেনে নেই, অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম।

অনলাইনে জমির খাজনা পরিশোধ করার ফলে অনেক সুবিধা হয়েছে। করণ, ভূমি অফিসে গিয়ে খাজনা দিতে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় খাজনা দিতে দূর থেকে তিনবার যেতে হয়। কিন্তু এই সমস্যার সমাধানের জন্য অনলাইনে জমির খাজনার নিয়ম করেছে। 

চলুন জেনে নেই কিভাবেঅনলাইনে জমির খাজনা দিতে হয় এবং সুবিধাগুলো কি কি?

    জমির খাজনা অনলাইনে:

    অফিসিয়াল ভাবে কাজ করতে অনেক সমস্যা হয়। কারণ, কোন কাজ করতে হলে একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে কাগজ অন্য কর্মকর্তার কাছে যেতে হয়। এইভাবে একটি কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে। এ কারণে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয় এবং সময় লাগে। 

    বর্তমানে এই সমস্যার সমাধান হয়েছে। কারণ সকল কাজ অনলাইনে মাধ্যমে হচ্ছে। ঠিক একই ভাবে জমির খাজনা অনলাইনে পরিশোধ করা যাচ্ছে। এতে করে সঠিক পরিমাণ খাজনা প্রদান করা যাচ্ছে এবং খুব সহজেই খাজনা পরিষদের রশিদ হাতে পাওয়া যাচ্ছে। 

    এবং কোন ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না। জমির খাজনা অনলাইনে নেওয়ার ফলে মানুষের খাস না দেওয়ার আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

    অনলাইনে খাজনা কিভাবে দেয়?

    বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে অনলাইনের ছোঁয়া পড়েছে। অনলাইনে কাজ হওয়ার ফলে সকল কর্মকর্তার কাজের চাপ কমেছে। একই সাথে সাধারণ জনগণের অনেক সুবিধা হয়েছে। কারণ ঘরে বসেই সকল ধরনের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। 

    অনলাইনে কাজ করতে শুধু একটা ল্যাপটপ বা মোবাইল হলেই করা সম্ভব। বর্তমানে অনলাইনে জমির খাজনাপরিশোধ করা যাচ্ছে। এতে করে সাধারণ মানুষের অনেক সুবিধা হয়েছে। চলুন জেনে নেই, অনলাইনে ফালতু কিভাবে দেয়?

    আরও পড়ুনঃ খাজনা ও খারিজ কি? জমি খারিজ করার পদ্ধতি


    অনলাইনে জমির খাজনা দিতে হলে আপনাকে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এবং আপনার নামে যতটুকু জমি রয়েছে তার বর্ণনা দিতে হবে। জমির পরিমাণ সঠিক থাকলে আপনার খাজনা কত সেখানে দেখাবে। সেই হিসাবে আপনাকে খাজনা পরিষদ করতে হবে। 

    একবার অ্যাকাউন্ট তৈরি করলে আর নতুন করে করতে হবে না। খাজনা পরিশোধ হলে আপনাকে একটি রশিদ প্রদান করবেন। এই রশিদ ডাউনলোড করে আপনাকে প্রিন্ট করে নিতে হবে। অনলাইন রশিদ দিয়ে সকল ধরনের কাজ করতে পারবেন। 

    নিজে নিজে না পারলে কোন কম্পিউটারের দোকান গেলে আপনার জমির খাজনা পরিশোধ করতে পারবেন।

    বাংলাদেশে কত বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করা হয়েছে?

    বাংলাদেশের বেশিরভাগ কৃষক নিম্নবিত্ত। তাদের জমির পরিমাণ অনেক কম। তবে জমি থাকলে জমির খাজনার প্রদান করতে হয়। তবে বাংলাদেশ সরকার নতুন আইন প্রণয়ন করেছেন। কোন ব্যক্তির যদি জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার কম থাকে তাহলে তাকে খাজনা প্রদান করতে হবে না। 

    তবে ২৫ বিঘা জমি আবাদি হতে হবে। কারণ বাংলাদেশ সরকার কৃষির উপরে অনেক সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। বাংলাদেশর বেশিরভাগ মানুষের জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার নিচে। সরকার ২৫ বিঘার নিচে খাজনা মওকুফ করলেও এটা বাস্তবায়িত হয়নি। 

    কারণ, কোন জমি যদি রেজিস্টার করতে যাওয়া হয় তাহলে খাজনার রশিদ প্রদান করতে হয়। যদি আপনার ১ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি হয় তাও খাজনার রশিদ জমা দিতে হবে। এ কারণে, বাংলাদেশে আইন প্রণয়ন হলেও তার সঠিক ব্যবহার হয় না।

    ভূমি উন্নয়ন কর কি?

    ভূমি উন্নয়ন কর আমাদের অনেকের কাছে নতুন। কোন জমি ভোগ দখল করে খাওয়ার জন্য সরকারকে প্রতি শতাংশ জমির জন্য যে পরিমাণ টাকা প্রতি বছর প্রদান করা হয় তাকে ভূমি উন্নয়ন কর বলা হয়। প্রতিবছর ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করার ফলে দাখিলা পাওয়া যায়। 

    জমির দাখিলা প্রমাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজ হচ্ছে জমির দলিল। জমির দলিল থাকলে আপনাকে কেউ দাখিলা থেকে সরাতে পারবে না। তবে একটি আইন রয়েছে তিন বছর ভূমি উন্নয়ন কর বাকি থাকলে জমি নিলামের সম্ভাবনা থাকে।

    এক বিঘা সমান কত বর্গফুট?

    জমি পরিমাপ কিভাবে করতে হয় আমরা কম বেশি সকলেই জানি। বিশেষ করে জমির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় শতাংশ, কাঠা, বিঘা এবং একর। কিন্তু কত কত বর্গফুটে কত জমি হয় এ সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই। চলুন জেনে নেই এক বিঘা সমান কত বর্গফুট? এবং কত শতাংশ এক বিঘা ইত্যাদি সম্পন্ন।
    1. ১ শতাংশ = ৪৩৫ বর্গফুট
    2. ১ কাঠা = ৭২০ বর্গফুট
    3. ১ বিঘা = ১৪,৪০০ বর্গফুট
    4. ১ একর = ১০০ শতাংশ
    5. ১ বিঘা = ৩৩ শতাংশ

    জমির খাজনা কত টাকা শতক?

    আমাদের কমবেশি সকলেরই জমির রয়েছে। কিন্তু কোন জমির কি পরিমাণ খাজনা সেটা আমাদের জানা নেই। জমির খাজনার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। কারণ সকল জমি একই ধরনের না। কারণ, কিছু জমিতে ফসল চাষ হয় । কিছু জমিতে পুকুর রয়েছে।

    কিছু জমিতে বাড়ি রয়েছে। এবং কিছু জমিতে বাগান রয়েছে। এইসব জমির প্রকারভেদ অনুযায়ী জমির খাজনা প্রদান করতে হয়। তবে বাংলাদেশ সরকার ২৫ বিঘার নিচে জমির খাজ মওকুফ করে দিয়েছে। 
    জমির খাজনা প্রতিবছর প্রদান করতে হয়। খাজনার পরিমাণের কিছু কম বেশি রয়েছে। 

    যাদের জমির পরিমাণ ১০ একর তার প্রথম ৫ একর জমির খাজনা ৫১ টাকা। এবং ৫ উপরে যত শতাংশ জমি হবে তাকে শতাংশ ৩৬ পয়সা দিতে হবে। এবং যার জমির পরিমাণ ১০ একর তাকে প্রতিবছর ২৩১ টাকা প্রদান করতে হয়। এবং দশগরের উপরে যেটুকু জমি হবে প্রতি শতাংশ অনুযায়ী ৬০ পয়সা দিতে হবে।

    আরও পড়ুনঃ অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে


    আমাদের অনেকেরই বসতবাড়ি রয়েছে যার খাজনা প্রদান করতে হয় না। এবং খাজনা প্রদান করে টাকার পরিমান উল্লেখ থাকে না। ভূমি অধিদপ্তরে গেলে তারা খাজনার পরিমাণ বলে দেয়।

    অর্থনৈতিক খাজনা কিভাবে গণনা করা হয়:

    আমরা প্রতিদিন খাজনা বা ট্যাক্স প্রদান করে থাকি। কারণ প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন ধরনের পণ্য কেনাবেচা করি। প্রতিটি পণ্যে সরকারি ট্যাক্স রয়েছে। কোন পণ্য কিনলে তার দাম ট্যাক্স সহ উল্লেখ থাকে। বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে খাজনা বা ট্যাক্স। 

    ট্যাক্স এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল কার্য পরিচালক করা হয়। জমির সাথে বাংলাদেশের অর্থনীতির গভীর সম্পর্ক। কারণ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আয়ের উৎস কৃষি পণ্য। কৃষি পণ্য উৎপন্ন হয় জমি থেকে। এবং বর্তমান সময়ে বাসাবাড়ি করতে হলে সরকারকে খাজনা প্রদান করতে হয়। 

    খাজনা প্রদানের পর জমির উপরের ঘর করার অনুমতি প্রদান করা হয়। আরো অনেক ভাবে অর্থনৈতিক খাজনা গণনা করা হয়।

    জমির খাজনা দেওয়ার রশিদ:

    প্রতিটা মানুষকে জমির খাজনা প্রদান করতে হয়। আমরা কাজ না প্রদান করি তার প্রমাণ স্বরূপ একটি কাগজ প্রদান করে। যে কাগজ প্রদান করে তাকে খাজনার রশিদ বলা হয়। জমির খাজনার রশিদ ছাড়া জমির কোন কাজ করা যায় না। বিশেষ করে জমি রেজিস্ট্রি করা যায় না। 

    বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে খাজনা নেওয়া শুরু করেছে। এতে করে খুব কম সময়ের মধ্যে খাজনা পরিষদ এবং খাজনার রশিদ পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে টাকা জমা দেওয়ার ৭২ ঘন্টার মধ্যে খাজনার রশিদ পাওয়া সম্ভব।

    শেষ কথা: অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম

    বর্তমানে সকল কিছুতে আধুনিকতার ছোঁয়া পড়েছে। বিশেষ করে সরকারি অফিস আদালত আধুনিক হয়েছে। আধুনিক হওয়ার ফলে মানুষের দুর্ভোগ কমেছে। কারণ আধুনিক হওয়ার ফলে কম সময়ের মধ্যে সকল কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। এতে করে সময় কম লাগছে এবং কাজগুলো সঠিক হচ্ছে। 

    বর্তমানে বর্তমানে জমির খাজনা অনলাইনে নিচ্ছে। এতে করে ঘরে বসেই জমির খাজনা পরিষদ করা যাচ্ছে। অনলাইনে হওয়ার ফলে মানুষকে আর ভূমি অফিসে গিয়ে সময় নষ্ট করতে হচ্ছে না। খুব কম সময়ের মধ্যে খাজনা না পরিশোধ করে খাজনার রশিদ পাওয়া যাচ্ছে। 

    আমার বিশ্বাস সম্পূর্ণ লেখাটি পড়লে অনলাইনে জমির খাতনা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ