তারাবির নামাজের নিয়ম / তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ

তারাবির নামাজের নিয়ম  তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ

তারাবির নামাজের নিয়ম / তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ => রমজান মাস হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর জন্য রহমতের মাস। এই রমজান মাসে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মুসলিম জাতি তারাবি নামাজ আদায় করবেন। দীর্ঘ একবছর পর পর রমজান এলেই রাতের তারাবির নামাজ পড়তে হয়। 

হাদিসে এসেছে- নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজানের রাতের (তারাবি ) নামাজ ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে পড়বে, তার জীবনের আগের সব গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। সুবহানাল্লাহ!

রমজানের শুরুতেই মুমিন মুসলমান তারাবি নামাজের নিয়ত, নিয়ম, দোয়া ও মোনাজাত শেখার বা প্রস্তুতি নেওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেয়। তাই তারাবি নামাজ পড়ার প্রস্তুতিতে এর নিয়ম, নিয়ত, দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে আমরা আজকে এই পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরবোঃ

    তারাবির নামাজ কত রাকাত?

    তারাবির নামাজ কত রাকাত

    তারাবির নামাজ কত রাকাত এটা নিয়ে অনেক মতোবিরোধ রয়েছে। তবে আমরা জানি যে তারাবির সালাত দুই দুই রাকআত করে যেকোনো সংখ্যক রাকআত পড়া হয়। তারাবির নামাজের রাকআত নির্দিষ্ট করা হয়নি। 

    বিভিন্ন মাজাহাভের লোকজন ভিন্ন সংখ্যক রাকাত তারাবির নামাজ পড়ে থাকেন। যেমন ধরুনঃ হানাফি, শাফিয়ি ও হাম্বলি ফিকহের অনুসারীগণ ২০ রাকআত, মালিকি ফিকহের অনুসারীগণ ৩৬ রাকআত এবং আহলে হাদীসরা ৮ রাকআত তারাবির নামাজ পড়েন।

    আরও পড়ুনঃ রমজানের পবিত্রতা নিয়ে উক্তি বা রোজা নিয়ে কিছু কথা

    তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল?

    আমরা অনেকেই জানি না যে তারাবির নামাজের কতো ফজিলত বা গুরুত্ব রয়েছে। অনেকেই ইচ্ছাকৃত ভাবে বা অলসতার কারনে এই বিশেষ ফজিলত পূর্ণ ইবাদাত থেকে বঞ্জিত থাকেন। তারাবির নামায নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা। (সুন্নতে মুআক্কাদা ওয়াজিবের মতই। 

    অর্থাৎ ওয়াজিবের ব্যাপারে যেমন জবাবদিহী করতে হবে, তেমনি সুন্নতে মুআক্কাদার ক্ষেত্রে জবাবদিহী করতে হবে। তাই পূর্বে যারা বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তারাবির নামাজ পড়েননি তারা সকলেই এই সালাত আদায় করবেন।

    কেননা ওয়াজিব তরককারীর জন্য সুনিশ্চিত শাস্তি পেতে হবে, আর সুন্নতে মুআক্কাদা ছেড়ে দিলে কখনো মাফ পেয়ে যেতেও পারে। তবে শাস্তিও পেতে পারে। – আল্লামা জুরজানী রাহ)

    তারাবির নামাজের নিয়ম

    তারাবির নামাজের নিয়ম

    রমজান মাস যেহেতু মুসলিম উম্মাহর জন্য অনেক ফজিলত পূর্ণ মাস তাই এই মাসে অধিক সওয়াব পেতে আপনারা তারাবির নামাজ আদায় করতে পারেন। আর এই তারাবি নামাজ দুই দুই রাকাতে আদায় করতে হয়।

    অনেকেই নামাজটির আরবি নিয়ত করে থাকেন, তবে আমাদের মাঝে যারা আরবি নিয়তের দোয়াটি জানেন না তারা চাইলে বাংলাতেই নিয়ত করতে পারেন। রমজান মাস এলেই অনেকেই রয়েছেন যারা কিনা তারাবি নামাজের নিয়ম, তারাবি নামাজের আরবি নিয়ত, তারাবি নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ ও দোয়া খুঁজে থাকেন।

    আর তাই আপনারা যারা যারা তারাবির নামাজের নিয়ম বা তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ খোজাখুজি করছেন তাদের জন্য আমরা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

    তারাবির নামাজের নিয়ম আরবিতে

    نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ للهِ تَعَالَى رَكْعَتَى صَلَوةِ التَّرَاوِيْحِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اللهُ اَكْبَرْ

    উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা, রাকাআতাই সালাতিত তারাবি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার।

    অর্থ : আমি কেবলামুখী হয়ে দুই রাকাত তারাবি সুন্নত নামাজের নিয়ত করছি; আল্লাহু আকবার।

    নিয়ত আরবিতেই করতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বাংলাতেও করা যাবে।

    তারাবি নামাজের দোয়া

    سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ

    উচ্চারণ : ‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’

    আমরা সকলেই জানি যে ৪ রাকাত তারাবি আদায় করে বিশ্রাম বা বিরতি দেওয়া হয় অল্প সময়ের জন্য। বিরতির পর  ব্যাপক প্রচলিত একটি দোয়া রয়েছে, যা দেশের প্রায় সকল মসজিদে পড়া হয়।

    চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ ফজিলত সম্পর্কে জেনে নেই।

    আরও পড়ুনঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম / শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত

    তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহঃ

    তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ

    اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ – الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ– بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّا-رُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ – الرَّحِمِيْنَ…

    দোয়াটির বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্না নাস – আলুকাল জান্নাতা-ওয়া নাউ জুবিকা মিনান-নার। ইয়া খলিক্বাল জান্নাতি ওয়ান-নার। বিরাহ – মাতিকা ইয়া আঝিঝুইয়া গফফা-  ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রহিমু ইয়া জাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া – বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান-নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া – মুঝির। বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমিন।

    তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থঃ আমি পবিত্রতা ঘোষণা করছি তাঁর, যিনি ইহ জগৎ ও পর জগতের মালিক। সেই আল্লাহর মহিমা বর্ণনা করছি যিনি মহিমাময়, শক্তিময়, গৌরবময় এবং বৃহত্তর। আমি সেই প্রতিপালকের গুণগাণ করছি, যিনি চিরঞ্জীব, যিনি কখনও নিদ্রা যান না এবং যার কখনও মৃত্যু ঘটে না। 

    পুতঃ পবিত্র মহান আল্লাহ। তিনি আমাদের, ফেরেশতাকুল ও আত্মাসমূহের পালনকর্তা। আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ বা মাবুদ নেই, আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমরা আপনার কাছে বেহেশত চাচ্ছি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাচ্ছি।

    তারাবি নামাজ শেষ করে এই দোয়াটি আপনি পড়লে অনেক ফজিলত পেয়ে যাবেন। তবে আপনি চাইলে এই দোয়াটি একবারে তারাবি পড়া শেষে বেতের নামাজ আদায়ের পরেও করতে পারবেন। কেননা এটি নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট বিধি নিষেধ নাই।

     আপনারা যদি কখনো মসজিদে জামাতের সাথে তারাবির নামাজ আদায় করে থাকেন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন যে, প্রত্যেক চার রাকাত পর পর একটু বেশী সময় ধরে ইমাম বসে থাকেন। ওই সময়ে ইমাম এবং মুসল্লিরা খুব দ্রুততার সাথে কিছু দোয়া পাঠ করে থাকেন।

    আর তাই এই বিষয়ে আপনাদের স্পষ্ট ধারনা থাকা দরকার বলে মনে করি। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক তারাবির নামাজের চার রাকাতের দোয়া অর্থ সহঃ

    তারাবি নামাজের চার রাকাতের দোয়া অর্থ সহ

    আমরা জানি যে, প্রত্যক চার রাকাত তারাবির নামাজ আদায়ের পর কিছু সময় বিশ্রামের জন্য একটু বসে থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে নিজেদের ব্যস্ত রাখার জন্য দোয়া দরুদ বা জিকির করতে পারেন এই সময়ের মধ্যে।

    বিভিন্ন আলেমদের মতে যেকোনো দোয়া দরুদ আপনি পড়তে পারেন এই সময়টাতে। তবে আপনি যদি না পারেন সেক্ষেত্রে না পরলেও পাপ নেই। এই দোয়া তারাবি নামাজের সাথে সম্পৃক্ত নয়। চলুন তাহলে এখন জেনে নেওয়া যাক বহু দিন থেকে প্রচলিত তারাবির নামাজের চার রাকাত পরপর দোয়া আরবি অর্থাৎ সুবহানাযিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি বাংলা অর্থ সহ জেনে নেই।

    আরবিতে চার রাকাত তারাবি নামাজ শেষের দোয়াঃ 

      سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ – سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَة- وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّن –  وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ

    চার রাকাত তারাবি শেষে পড়া দোয়ার বাংলা উচ্চারণঃ “সুবহানাজিল মুলকি ওয়ালমালাকুতি, সুবহানা-জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়-বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রি য়ায়ি ওয়াল ঝাবারুত। সুবহানাল মালি-কিল হাইয়্যিল্লাজি-লা-ইয়ানামু ওয়া লা-ইয়ামুত আবা-দান আবাদা – সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রব্বুনা ওয়া রব্বুল মালা-য়িকাতি ওয়ার – রূহ”।

    চার রাকাত তারাবি নামাজের দোয়ার বাংলা অর্থঃ আল্লাহ পবিত্রময় সাম্রাজ্য এবং মহত্ত্বের অধিপতি। তিনি পবিত্রময় সম্মান মহত্ত্ব এবং প্রতিপত্তিশালী সত্তা। ক্ষমতাবান, গৌরবময় এবং প্রতাপশালী তিনি পবিত্রময় ও রাজাধিরাজ যিনি চিরঞ্জীব। কখনো ঘুমায় না এবং চির মৃত্যুহীন সত্তা। আল্লাহ পবিত্রময় ও বরকতময় আমাদের, ফেরেশতাকুল এবং জিবরাইলের (আ.) এর প্রতিপালক।

    আরও পড়ুনঃ জাজাকাল্লাহ খাইরান অর্থ কি | Jazakallah Khairan Meaning

    তারাবি নামাজের মোনাজাত

    اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ - اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

    উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

    রমজান জুড়ে বিশ্বনবির এ ইসতেগফার দুইটি বেশি বেশি পড়ার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক সেই সম্পর্কেঃ

    ১. اَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇﻧَّﻚَ ﻋَﻔُﻮٌّ ﺗُﺤِﺐُّ اﻟْﻌَﻔْﻮَ ﻓَﺎﻋْﻒُ ﻋَﻨِّﻲ

    উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আ’ন্নি।

    ২. اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

    উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্বতানি; ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আ’হদিকা ওয়া ওয়া’দিকা মাসতাত্বা’তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানা’তু আবুউলাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়া; ওয়া আবুউ বিজামবি ফাগফিরলি ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।’

    মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহাঅনুগ্রহের মাস রমজান। এ মাসের মর্যাদা অন্য মাসের তুলনায় অনেক বেশি। এ মাসের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত হলো কিয়ামুর রমজান তথা তারাবি নামাজ।

    তারাবির নামাজ নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর

    এখন আমরা এই পর্যায়ে তারাবির নামাজ নিয়ে যেসমস্ত প্রশ্ন করা হয় সেগুলোর সহজ উত্তর দিবো। আপনি চাইলে এখান থেকে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন তারাবির নামাজের সম্পর্কেঃ

    ১। প্রশ্নঃ তারাবিহ শব্দের অর্থ কি?

    উত্তরঃ তারাবিহ শব্দের অর্থ হচ্ছে বিশ্রাম করা।

    ২। প্রশ্নঃ তারাবির নামাজ  কি?

    উত্তরঃ প্রতি চার রাকাআত নামাজ শেষ করে যাতে একটু বিশ্রাম গ্রহণ করা যায় তাই একে তারাবির নামাজ বলা হয়।

    ৩। প্রশ্নঃ তারাবির নামাজ কত রাকাত?

    উত্তরঃ হানাফি, শাফিয়ি ও হাম্বলি ফিকহের অনুসারীগণ ২০ রাকআত, মালিকি ফিকহের অনুসারীগণ ৩৬ রাকআত এবং আহলে হাদীসরা ৮ রাকআত তারাবির পড়েন।

    ৪। প্রশ্নঃ তারাবির নামাজ কি সুন্নত না নফল?

    উত্তরঃ তারাবির নামায নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

    ৫। প্রশ্নঃ খতম তারাবীহ এবং সূরা তারাবীহ কি?

    উত্তরঃ বাংলাদেশে তারাবীহর নামাজের দুটি পদ্ধতি প্রচলিত। একটি খতম তারাবীহ আর অন্যটি সূরা তারাবীহ। খতম তারাবীহর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ কুরআন পাঠ করা হয়। খতম তারাবীহর জন্য কুরআনের হাফিযগণ ইমামতি করেন। সূরা তারাবীহর জন্য যেকোন সূরা বা আয়াত পাঠের মাধ্যমে সূরা তারাবীহ আদায় করা হয়।

    ৬। প্রশ্নঃ তারাবির নামাজ কেন পড়ব?ফযিলত কি?

    উত্তরঃ রাসূল(সাঃ) বলেছেন,”যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াব পাওয়ার আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করে ,তার অতিতকৃত পাপগুলো ক্ষমা করা হয়।(বুখারি ও মুসলিম

    ৭। প্রশ্নঃ তারাবি নামাজ না পড়লে গুনাহ হবে?

    উত্তরঃ অবশ্যই গুনাহ হবে।কারন তারাবির নামাজ সুন্নাতে মুয়াক্কাদ্দাহ(নামাজে যেসব সুন্নত পালন না করলে নামাজ মাকরুহ হয়) ।বিনা ওজরে তারাবির নামাজ ছেড়ে দিলে কবিরা গুনাহ হবে।

    ৮। প্রশ্নঃ তারাবির নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে?

    উত্তরঃ রোজা হবে।কারন রোজা ফরয ইবাদত এর সাথে তারাবির সংযোগ আছে কিন্তু তুলনা করাটা বোকামো।বিনা ওজরে তারাবি ছেড়ে দিলে রোজা মাকরুহ হবে।

    ৯। ১২ রাকাত তারাবির নামাজ পড়া যাবে কি?

    উত্তরঃ সহীহ আল বুখারীর একটি হাদিস অনুসারে, তারাবিহ নামায আট রাকাত । রাসুল (সাঃ) আট রাকাত তারাবীহ নামাযের ইমামতি করেছেন। তারাবীহের নামায প্রতিটি দুই রাকাতের সেটে করা হয়, যেভাবে আপনি আপনার স্বাভাবিক সালাত আদায় করেন। সবচেয়ে ছোটটি দুই রাকাত এবং দীর্ঘতমটি 20 রাকাত।

    শেষকথাঃ তারাবির নামাজের নিয়ম / তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ

    উপরের আলোচনা যদি আপনি মনযোগ সহকারে পড়তে পারেন তাহলে তারাবির নামাজের নিয়ম অথবা তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা  অর্থ সহ একদম সহজ ভাবে বুঝতে পারবেন। তাই তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।

    আপনি চাইলে আমাদের পোস্ট গুলো আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এতে করে আপনার মাধ্যমে তারাও নতুন কিছু শিখতে ও জানতে পারবে। এছাড়াও আমাদের ওয়েবসাইটের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ