ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং ড্রাগন চাষের সঠিক পদ্ধতি

ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং ড্রাগন চাষের সঠিক পদ্ধতি

ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং ড্রাগন চাষের সঠিক পদ্ধতি=> সম্পর্কে আমাদের সকলের জানা থাকা দরকার। কারণ বর্তমান সময়ে ড্রাগন একটি জনপ্রিয় ফল। ড্রাগন ফল চাষের মাধ্যমে অনেকে বেকারত্ব দূর করেছে।  ড্রাগন ফল চাষ সহজ এবং লাভজনক। এই কারণে অনেকে ড্রাগন ফল চাষের উদ্যোগ নিচ্ছে।

ড্রাগন ফলের অনেকউপকারিতা রয়েছে। এবং খেতে অনেক সুস্বাদু। এই কারণে  ড্রাগনের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। কিন্তু আমরা অনেকেই চাষের পদ্ধতি জানিনা। আজকে আমি ড্রাগন চাষের সঠিক পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।   যারা  ড্রাগন চাষে আগ্রহী যারা তাদের জন্য আজকের এই লেখা টি। বিস্তারিত পড়লে আপনার  ড্রাগন চাষসম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন।


    ড্রাগনের পরিচিতিঃ

    ড্রাগন ফল মূলত আমেরিকার প্রসিদ্ধ একটি ফল যা বর্তমানে আমাদের দেশেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০০৭ সালে থাইল্যান্ড, ফ্লোরিডা ও ভিয়েতনাম থেকে এই ফলের বিভিন্ন জাত আনা হয়। ড্রাগন ফলের গাছ এক ধরনের ক্যাকটাস জাতীয় গাছ। এই গাছের কোন পাতা নেই। ড্রাগন ফলের গাছ সাধারনত ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।

    বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সিটিউট (বারি) কতৃক উদ্ভাবিত ড্রগন ফলের নতুন জাতটি হলো বারি ড্রাগন ফল-১ যা দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়াতে জনপ্রিয় ফল। এ ফলের আকার বড়, পাকলে খোসার রং লাল হয়ে যায় ,শাঁস গাঢ় গোলাপী রঙের, লাল ও সাদা এবং রসালো প্রকৃতির । ফলের বীজগুলো ছোট ছোট কালো ও নরম । একটি ফলের ওজন ১৫০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।

    আরও পড়ুনঃ ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২২


    ড্রাগন ফলের উপকারিতা :


    • ভিটামিনের পরিমাণ

    • কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে

    • হার্টের উপকার করে

    • চুলপড়া প্রতিরোধ করে

    • ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে

    • রক্ত চলাচল বজায় রাখে

    • হাড়ের  গঠন ঠিক রাখে

    • ড্রাগন ফলের গুরুত্ব


    ড্রাগন ফল চাষের পদ্ধতি:

    • ড্রাগন ফলের প্রজাতির 

    • জমি নির্বাচন ও তৈরি

    • রোপণ পদ্ধতি ও রোপণ সময়

    • বংশবিস্তার

    • প্রনিং ও ট্রেনিং

    • গর্ত তৈরীও চারা রোপণ

    • পরিচর্যা

    • সার প্রয়োগ

    • সেচ ব্যবস্থাপনা

    • রোগ ও বালাই ব্যবস্থাপনা

    • কাণ্ড ও গোড়া পচা রোগ

    • পোকা মাকড়

    • ড্রাগন ফল সংগ্রহ ও ফলন

     

    ভিটামিনের পরিমাণ:


    ভিটামিন সি, মিনারেল এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত।ফলে ফিবার, ফ্যাট, ক্যারোটিণ, প্রচুর ফসফরাস, এসকরবিক এসিড, প্রোটিন ,ক্যালসিয়াম, আয়রন রয়েছে।

    প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য ড্রাগন ফলে যে পুস্টিমান পাওয়া যায় তা দেওয়া হলো-

    1.  পানি- ৮০-৯০ গ্রাম
    2.   শর্করা- ৯-১০ গ্রাম
    3.  প্রোটিন- ০.১৫-০.৫ গ্রাম
    4.  আঁশ- ০.৩৩-০.৯০ গ্রাম
    5.  খাদ্যশক্তি- ৩৫-৫০ কিলোক্যালরি
    6.  চর্বি- ০.১০-০.৬ গ্রাম
    7.  ক্যালসিয়াম- ৬-১০ মি গ্রাম
    8.  আয়রন- ০.৩-০.৭ মি.গ্রাম
    9.  ফসফরাস- ১৬-৩৫ গ্রাম
    10.  ক্যারোটিন- (Vitamin A থায়ামিন, রিবোফ্লাবিন সামান্য
    11.  ভিটামিন- বি-৩ – ০.২ – ০.৪ মি গ্রাম



    কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে:

    একটি ড্রাগন ফলে প্রায় ৭ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা দৈনিক সুপারিশকৃত পরিমাণের চারভাগের প্রায় একভাগ। এটা অন্ত্রের বর্জ্য দূরীকরণে সহায়তা করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা রয়েছে তারা এই ফল খেলে উপকার পেতে পারেন। সালসা তৈরি করে অথবা ফ্রুট সালাদ বা স্মুদিতে যোগ করে ড্রাগন ফল খেতে পারেন। এই ফলের স্বাদ হালকা।

    হার্টের উপকার করে:

    ড্রাগন ফলের বীজে হার্টের জন্য উপকারী ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৯ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। নিউ ইয়র্কের পুষ্টিবিদ ও দ্য স্মল চেঞ্জ ডায়েটের লেখক কেরি গানস বলেন, ‘ড্রাগন ফলের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে প্রদাহনাশক উপাদান রয়েছে। একারণে এই ফল খেলে হার্টের রোগের ঝুঁকি ও জয়েন্টের ব্যথা কমে যায়। ড্রাগন ফল খেলে বিষণ্নতাও কমতে পারে।

    চুলপড়া প্রতিরোধ করে:

    আয়রন ঘাটতির কারণে চুলপড়া সমস্যাও হতে পারে। নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে চুলপড়া কমতে পারে। এছাড়া নিউ ইয়র্ক সিটির আইকান স্কুল অব মেডিসিনের ডার্মাটোলজি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্লিনিক্যাল প্রফেসর গ্যারি গোল্ডেনবার্গের মতে, এই ফল আয়রন ঘাটতি জনিত রক্তস্বল্পতার অন্যান্য উপসর্গও প্রশমিত করতে পারে, যেমন- অত্যধিক ক্লান্তি, ত্বকের বিবর্ণতা, মনোনিবেশে সমস্যা, মাথাব্যথা ও হাত-পায়ে ঠান্ডা অনুভূতি।

    ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে

    ভাইরাস সংক্রমণে আমরা সাধারণত কমলার মতো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলের দিকে ঝুঁকে পড়ি, কারণ ভিটামিন সি ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। কিন্তু ইমিউন সিস্টেমের কার্যক্ষমতা বাড়াতে ডায়েটে ড্রাগন ফলকে রাখার কথাও বিবেচনা করতে পারেন। এতেও প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। বেথ ওয়ারেন নিউট্রিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পুষ্টিবিদ বেথ ওয়ারেন বলেন, ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেস জনিত ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট প্রয়োজন তা ফল ও শাকসবজিতে রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের একটি প্রাচুর্যপূর্ণ উৎস হলো ড্রাগন ফল।

    আরও পড়ুনঃ থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২২

    রক্ত চলাচল বজায় রাখে:

    বিশ্বের একটি অতি পরিচিত পুষ্টি ঘাটতি হলো আয়রনের ঘাটতি। নারীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। মাংস, মাছ, বাদাম ও ডাল জাতীয় খাবার থেকে আমরা অধিকাংশ আয়রন গ্রহণ করে থাকি। মাত্র কিছু ফলে উচ্চ পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। এসব ফলের একটি হলো ড্রাগন ফল। ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে ১.৯ মিলিগ্রাম আয়রন রয়েছে, যা দৈনিক সুপারিশকৃত মাত্রার ১০ শতাংশেরও বেশি। হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের জন্য আয়রন প্রয়োজন, যা শরীরের টিস্যুতে অক্সিজেন পৌঁছাতে লোহিত রক্তকণিকাকে সাহায্য করে।

    হাড়ের গঠন ঠিক রাখে:

    অধিকাংশ ফলের চেয়ে ড্রাগন ফলে ম্যাগনেসিয়াম বেশি থাকে। এটা হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে ও অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে। অস্টিওপোরোসিসে হাড় এতই দুর্বল হয়ে যায় যে সহজেই ভেঙে পড়তে পারে। এক বাটি ড্রাগন ফলে দৈনিক সুপারিশকৃত ম্যাগনেসিয়ামের প্রায় ১৮ শতাংশ পাওয়া যায়। জার্নাল অব ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল রিসার্চে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, মাসিক চক্র স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে এমন নারীদের হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে ড্রাগন ফল বিশেষ সহায়ক হতে পারে।

    ড্রাগন ফলের গুরুত্বঃ

    • ১. ক্যারোটিন সমৃদ্ধ থাকায় চোখ ভালো রাখে।
    • ২. আঁশের পরিমাণ বেশি থাকায় হজমে সহায়তা করে। এছাড়া আঁশ শরীরের চর্বি কমায়।
    • ৩. এই ফলে বিদ্যমান প্রোটিন শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় কাজে সহায়তা করে।
    • ৪.  এর ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত ও দাঁত মজবুত রাখে।
    • ৫. ভিটামিন বি-৩ রক্তের কোলেস্টেরল কমায় এবং ত্বক মসৃণ রাখে।
    • ৬. ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বক , দাঁত ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে।

    আরও পড়ুনঃ কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২২

    ড্রাগন চাষের সঠিক পদ্ধতি

     ড্রাগন ফলের প্রজাতির:

    ১) লাল ড্রাগন ফল বা পিটাইয়া। এর খোসার রঙ লাল ও শাঁস সাদা। এই প্রজাতির ফলই বেশি দেখতে পাওয়া যায়।

    ২) কোস্টারিকা ড্রাগন ফল। খোসা ও শাঁস উভয়ের রঙই লাল।

    ৩) হলুদ রঙের ড্রাগন ফল। এই জাতের ড্রাগন ফলের খোসা হলুদ রঙের ও শাঁসের রঙ সাদা।

    জাতঃ 

    বাংলাদেশে উদ্ভাবিত জাতগুলো হলো-

    বারি ড্রাগন ফল-১, বাউ ড্রাগন ফল-১ (সাদা) ,বাউ ড্রাগন ফল-২ ( লাল ), বাউ ড্রাগন ফল-৩

    জমি নির্বাচন ও তৈরিঃ

    সুনিষ্কাশিত উঁচু ও মাঝারি উঁচু উর্বর জমি নির্বাচন করতে হবে এবং ২-৩ টি চাষ দিয়ে ভালোভাবে মই দিতে হবে।

    রোপণ পদ্ধতি ও রোপণ সময়ঃ

    সমতল ভূমিতে বর্গাকার বা ষঢ়ভূজাকার এবং পাহাড়ি ভূমিতে কন্টুর পদ্ধতিতে ড্রগন ফলের কাটিং রোপণ করতে হবে। ড্রগন ফল রোপণের জন্য উপযোগী সময় হলো মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য ওক্টোবর।

    বংশবিস্তারঃ

    অঙ্গজ পদ্ধতি বা বীজের মাধ্যমে ড্রাগন ফলের বংশবিস্তার হয়ে থাকলেও মাতৃ গুনাগুণ বজাই রাখার জন্য অঙ্গজ পদ্ধতিতে অর্থাৎ কাটিং এর মাধ্যমে বংশ বিস্তার করাই ভালো। কাটিং এর সফলতার হার প্রায় শতভাগ এবং তাড়াতাড়ি ধরে। কাটিং থেকে উৎপাদিত একটি গাছে ফল ধরতে ১২-১৮ মাস সময় লাগে। সাধারণত বয়স্ক এবং শক্ত শাখা ১ থেকে ১.৫ ফুট কেটে হালকা ছায়াতে বেলে দোআঁশ মাটিতে গোড়ার দিকের কাটা অংশ পুতে সহজেই চারা উৎপাদন করা যায়। তারপর ২০ থেকে ৩০দিন পরে কাটিং এর গোড়া থেকে শিকড় বেরিয়ে আসবে। তখন এটা মাঠে লাগানোর উপযুক্ত হবে। তবে উপযুক্ত পরিবেশে ও প্রয়োজন অনুযায়ী কাটিংকৃত কলম সরাসরি মূল জমিতে লাগানো যায়।

    প্রনিং ট্রেনিংঃ

    ড্রাগন ফল খুব দ্রুত বাড়ে এবং মোটা শাখা তৈরি করে। একটি ১ বছরের গাছ ৩০টি পর্যন্ত শাখা তৈরি করতে পারে এবং ৪ বছরের বয়সী একটি ড্রাগন ফলের গাছ ১শ’ ৩০টি পর্যন্ত প্রশাখা তৈরি করতে পারে। তবে শাখা প্রশাখা উৎপাদন উপযুক্ত ট্রেনিং ও ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ১২ থেকে ১৮ মাস পর একটি গাছ ফল ধারণ করে। ফল সংগ্রহের ৪০ থেকে ৫০টি প্রধান শাখায় প্রত্যেকটি ১ বা ২টি সেকেন্ডারি শাখা অনুমোদন করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে টারসিয়ারী ও কোয়ার্টারনারী প্রশাখাকে অনুমোদন করা হয় না। ট্রেনিং এবং প্রনিং এর কার্যক্রম দিনের মধ্যে ভাগে করাই ভালো। ট্রেনিং ও প্রনিংকরার পর অবশ্যই যে কোন ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। তানা হলে বিভিন্ন প্রকার রোগবালাই আক্রমণ করতে পারে।

    গর্ত তৈরীও চারা রোপণঃ

    ১.৫ মিটার x ১.৫ মিটার x ১ মিটার আকারের গর্ত করে তা রোদে খোলা রাখতে হবে। গর্ত তৈরির ২০-২৫ দিন পর প্রতি গর্তে ২৫-৩০ কেজি পচা গোবর , ২৫০ গ্রাম টিএসপি, ২৫০ গ্রাম এমওপি, ১৫০ গ্রাম জিপসাম এবং ৫০ গ্রাম জিংক সালফেট সার গর্তের মাটির সাথে ভালো করে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করে দিতে হবে। প্রয়োজনে সেচ দিতে হবে। গর্ত ভরাটের ১০-১৫ দিন পর প্রতি গর্তে ৫০ সেমি দূরত্বে ৪ টি করে চারা সোজাভাবে মাঝখানে লাগাতে হবে। চারা রোপণের ১ মাস প থেকে ১ বছর পর্যন্ত প্রতি গর্তে ৩ মাস পর পর ১০০ গ্রাম করে ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে।

    পরিচর্যাঃ

    আগাছা অপসারণ করে নিয়মিত সেচ প্রদান এবং প্রয়োজনে চারপাশে বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। গাছ লতানো এবং ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার লম্বা হওয়ায় সাপোর্টের জন্য ৪ টি চারার মাঝে ১টি সিমেন্টের ৪ মিটার লম্বা খুঁটি পুততে হবে। চারা বড় হলে খড়ের বা নারিকেলের রশি দিয়ে বেধে দিতে হবে যাতে কাণ্ড বের হলে খুতিকে আঁকড়ে ধরে গাছ সহজেই বাড়তে পারে। প্রতিটি খুঁটির মাথাই একটি করে মটর সাইকেলের পুরাতন টায়ার মোটা তারের সাহায্যে আটকিয়ে দিতে হবে। তারপর গাছের মাথা ও অন্যন্য ডগা টায়ারের ভিতর দিতে বাইরের দিকে ঝুলিয়ে দিতে হবে। কেননা এভাবে ঝুলন্ত ডগাই ফল বেশি ধরে ।

    সার প্রয়োগঃ

    গাছের বয়স বাড়ার সাথে নিম্নলিখিতভাবে সার দিতে হবে-

    গাছের বয়স

     

    মাদা প্রতি সারের পরিমাণ/বছর

    গোবর সার (কেজি)

    ইউরিয়া (গ্রাম)

    টিএসপি (গ্রাম)

    এমওপি (গ্রাম)

    ১-৩ বছর

    ৪০-৫০

    ৩০০

    ২৫০

    ২৫০

    ৩-৬ বছর

    ৫০-৬০

    ৩৫০

    ৩০০

    ৩০০

    ৬-৯ বছর

    ৬০-৭০

    ৪০০

    ৩৫০

    ৩৫০

    ১০ বছের ঊর্ধে

    ৭০-৮০

    ৫০০

    ৫০০

    ৫০০


    আরও পড়ুনঃ ফর্সা হওয়ার ডাক্তারি ক্রিম ২০২২

    সেচ ব্যবস্থাপনাঃ

    ড্রাগন ফল খরা ও জলাবর্ধতা সয্য করতে পারে না। তাই শুস্ক মৌশুমে ১০-১৫ দিন পর পর সেচ দিতে হবে।এছাড়া ফলন্ত গাছে ৩ বার অর্থাৎ ফুল ফোটা অবস্থায় একবার, ফল মটর দানা অবস্থায় একবার এবং ১৫ দিন পর আরেকবার সেচ দিতে হবে।

    রোগ ও বালাই ব্যবস্থাপনাঃ

    ফলে রোগ বালাই খুবই একটা চোখে পড়ে না। তাবে কখনো কখনো এ গাছে মূলপঁচা, কান্ড ও গোড়া পঁচা রোগ দেখা যায়।

    কাণ্ড গোড়া পচা রোগ:

    ছত্রাক অথবা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা এ রোগ হতে পারে। এ রোগ হলে গাছের কাণ্ডে প্রথমে হলুদ রং এবং পরে কালো রং ধারণ করে এবং পরবর্তীতে ঐ অংশে পঁচন শুরু হয় এবং পঁচার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এ রোগ দমনের জন্য যে কোন ছত্রাকনাশক (বেভিস্টিন, রিডোমিল, থিওভিট ইত্যাদি) ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করে সহজেই দমন করা যায়।

    পোকা মাকড়ঃ

    ড্রাগন ফলের জন্য ক্ষতিকর পোকা মাকড় খুব একটা চোখে পড়ে না, তবে মাঝে মাঝে এফিড ও মিলি বাগের আক্রমণ দেখা যায়। এফিডের বাচ্চা ও পূর্ণ বয়স্ক পোকা গাছের কচি শাখা ও পাতার রস চুষে খায়, ফলে আক্রান্ত গাছের কচি শাখা ও ডগার রং ফ্যাকাশে হয়ে যায় ও গাছ দূর্বল হয়ে পড়ে। এ পোকা ডগার উপর আঠালো রসের মতো মল ত্যাগ করে ফলে শুটিমোল্ড নামক কালো ছত্রাক রোগের সৃষ্টি হয়। এতে গাছের খাদ্য তৈরি ব্যাহত হয়। এতে ফুল ও ফল ধারণ কমে যায়। এ পোকা দমনে সুমিথিয়ন/ডেসিস/ম্যালাথিয়ন এসব কীটনাশক প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২৫ মিলিলিটার বা ৫ কাপ ভালো ভাবে মিশিয়ে স্প্রে করে সহজেই এ রোগ দমন করা যায়।

    ড্রাগন ফল সংগ্রহ ও ফলনঃ

    ড্রাগন ফলের কাটিং থেকে চারা রোপনের পর ১ থেকে ১.৫ বছর বয়সের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। ফল যখন সম্পূর্ণ লাল রঙ ধারণ করে তখন সংগ্রহ করতে হবে। গাছে ফুল ফোঁটার মাত্র ৩৫-৪০ দিনের মধ্যেই ফল খাওয়ার উপযুক্ত হয়। বছরে ৫-৬টি পর্যায়ে ফল সংগ্রহ করা যায়। প্রথমত জুন-অক্টোবর, দ্বিতীয় ডিসেম্বর-জানুয়ারি।

    উপসংহার:

    বর্তমান সময়ে  ড্রাগন চাষ করে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। ড্রাগন চাষের মাধ্যমে বাংলাদেশের বেকারত্ব  দূর করা সম্ভব। ড্রাগন চাষের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির সচল হবে। এবং দেশের পুষ্টির ঘাটতি দূর হবে।

    আশা করি, উপরের তথ্যগুলো পড়ে ড্রাগন চাষ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। লেখাটি যদি ভালো  লেগে থাকে তাহলে আমাদের পরবর্তী লেখা গুলো আপনার টাইমলাইনে পেতে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন। লেখাটি সম্পূর্ন পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ